শীর্ষ ভ্যাটদাতা ও সেরা প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নের পুরস্কার পেল ওয়ালটন, রফতানি আদেশ ২৩৫ কোটি টাকা
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, বাণিজ্যমেলার ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ক্রেতা-দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে এবারের ২১ ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায়। বাণিজ্য ও বিনোদনের সংমিশ্রণে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত মাসব্যাপী এ আয়োজন জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়। তিনি বলেন, এবার মেলায় রফতানি আদেশ এসেছে ৩০ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার বা ২৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। যা গত বছরের চেয়ে দেড়গুণ। গত বছর রফতানি আদেশ ছিল ১২ দশমিক ১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তোফায়েল আহমেদ বলেন, এবছর শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শেষ দুই দিনে দুই লাখের উপরে উপস্থিতি ছিল। সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গতকাল ২১তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যেও মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন, এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান বেগম মাফরুহা সুলতানা প্রমুখ। মেলায় রফতানি আদেশ পাওয়া পণ্যের মধ্যে রয়েছে ইলেকট্রনিক্স অ্যান্ড হোম অ্যাপ্লায়েন্সস, বহুমুখী, পাট পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, বাসন-কোষণ, হ্যান্ডলুম ও হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম টেক্সটাইল ইত্যাদি।
মন্ত্রী বলেন, বাণিজ্য মেলা শুধু পণ্য প্রদর্শনের মধ্যে মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, আগত বিভিন্ন দেশের পণ্যের সাথে দেশীয় পণ্যেও গুনগতমানের তুলনা, পণ্য বহুমুখীকরণ, আধুনিক মোড়কীকরণ ব্যবস্থা, পণ্য উপস্থাপন, বিপণন শৈলী এবং প্রতিযোগি মূল্য সম্পর্কে বাস্তব ধারণা লাভের সুযোগ পেয়েছে সংশ্লিষ্ট সকেেল। এবছর দেশি-বিদেশি অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং নতুন পণ্যেও সমাবেশ ঘটেছে। আগামীতে এ মেলা আরো আকর্ষণীয় হবে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, মেলায় মালামাল বিক্রি হয়েছে প্রায় ১২১ দশমিক ৪৭ কোটি টাকা। গত বছরের চেয়ে ৭১ দশমিক শূন্য ২ কোটি টাকা বেশি বিক্রয় হয়েছে। শুধু শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নয়, ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে মানুষ এসেছে এ মেলায়। এ মেলা এখন জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ব্যবসাবান্ধব। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসায়ীদের ভূমিকাই বড়। সরকার চাহিদা মোতাবেক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের আন্তরিক সহযোগিতায় দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সারাবছরই স্বাভাবিক ছিল। দেশ এখন শক্ত অর্থনীতির ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে।
এদিকে এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় শ্রেষ্ঠ ভ্যাটদাতা এবং সেরা প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়নের পুরস্কার পেয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। মেলার আয়োজক রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গতকাল রোববার সমাপনী দিনে ওয়ালটনকে পুরস্কৃত করে। পুরস্কার তুলে দেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
সমাপনী অনুষ্ঠানে স্বনামধন্য বিভিন্ন কোম্পানিকে (স্টল ও প্যাভিলিয়ন) পুরস্কার করা হয়। এর মধ্যে এবার মেলাতে দুইটি ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার জিতে নিয়েছে দেশের শীর্ষ ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স, অটোমোবাইলস ও গৃহস্থলী পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। আয়োজকরা ১৪ ক্যাটাগরিতে ২৭টি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করেছে। অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান পুরস্কার পেয়েছে- প্রিমিয়াম প্যাভেলিয়ন ক্যাটাগরিতে প্রথম হয়েছে ওয়ালটন, দ্বিতীয় হাতিল, তৃতীয় আখতার ফার্নিচার, অলিম্পিক ও আবুল খায়ের। সাধারণ প্যাভেলিয়নে প্রথম হয়েছে কারুপণ্য লিমিটেড, মেসার্স স্কয়ার ফুড এন্ড বেভারেজ ও তৃতীয় শরিফ ম্যালামাইন। এছাড়া প্রিমিয়াম স্টল ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প পরিবার প্রাণ-আরএফএল গ্রæপের প্রাণ ডেইরি লিমিটেড। ৬৬টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এ গ্রæপে প্রথম পুরস্কার পেয়েছে হেলাল অ্যান্ড ব্রাদার্স, দ্বিতীয় পুরস্কার সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড এবং তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে প্রাণ ডেইরি লিমিটেড। প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ক্যাটাগরিতে প্রথম পুরস্কার পাওয়া ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের অপূর্ব স্থাপত্য ও নির্মাণশৈলী, দৃষ্টিনন্দন ডিজাইন, দর্শক-ক্রেতার পছন্দ, বিশ্বমানের দেশীয় পণ্যের সম্ভার ছিল। আর এসব বিচেনায়ই ওয়ালটন প্যাভিলিয়নকে সেরা হিসেবে নির্বাচিত করে মেলা কর্তৃপক্ষ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন