দিনাজপুরের পার্বতীপুরে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থসহ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তাজুল ইসলামকে আটক করেছে সমন্বিত দিনাজপুর জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৫টা থেকে সন্ধ্যে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। তবে টাকার পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে দুদক সূত্রে বলা হয়েছে।
দিনাজপুর জেলা দুদকের উপ-পরিচালক আবু হেনা আশিকুর রহমান জানান, দুদকের হটলাইন ১০৬ এ প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে তার নেতৃত্বে দুদকের ৭ সদস্যের একটি টিম অভিযান চালায়। এ সময় অফিসে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার টাকা পায় দুদক। পরে উপজেলার টিনশেড ডরমেটারিতে তাজুল ইসলামের শয়নকক্ষে রাখা কালো রংয়ের চারটি ব্যাগভর্তি টাকা উদ্ধার করে দুদক। এ সময় প্রাথমিক গণনায় উদ্ধার করা টাকার পরিমান ১ কোটি ৭০ লাখ হলেও এর পরিমাণ আরও বাড়বে বলে জানান দুদক কর্মকর্তা আশিকুর রহমান। উদ্ধার করা এসব টাকা গণনার জন্য সন্ধ্যে ৭টায় সোনালী ব্যাংক পার্বতীপুরের নতুনবাজার শাখা থেকে ডিজিটাল গণনা মেশিন নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সময় জেলা প্রশাসক কার্যালয় এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও এনডিসি দবির উদ্দীন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহনাজ মিথুন মুন্নী ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামানসহ পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, তাজুল ইসলাম ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর পার্বতীপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে টি আর, কাবিখা, কাবিটা, ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প, জি আর, ব্রিজ, কালভার্ট, জমি আছে ঘর নেইসহ বিভিন্ন প্রকল্পের লাখ লাখ টাকা দুর্নীতি করে আসছে। সর্বশেষ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ছাড়াই টিআর ও কাবিখার বিল পরিশোধ করেন। এসময়ের মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নিয়মানুযায়ী এসব প্রকল্পের বিল পরিশোধ করার আগে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের অনুমোদন ও স্বাক্ষর নিতে হয়।
বিপুল পরিমান টাকা দুর্নীতি করা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর অভিযোগ রয়েছে অসংখ্য। সর্বশেষ অভিযোগে জানা যায়, এই কর্মকর্তা কুড়িগ্রাম জেলার তার নিজ উপজেলা রাজারহাটে একজন ইউপি চেয়ারম্যানের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়র কণ্যাকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের তিন দিনের মাথায় এই লম্পট তার বিবাহিত স্ত্রীর সাথে সংসার করতে অস্বীকার করে। পরে এ ঘটনা নিয়ে তার স্ত্রী আদালতে মামলা করেন। এ ঘটনায় বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিষয়টি সমঝোতা করা হয়।
এদিকে, এ রিপোর্ট লেখার সময় রাত পৌনে ৮টায় দুদকের উপ-পরিচালক আশিকুর রহমান এ প্রতিনিধিকে জানান, সব টাকা গণনা শেষ হয়েছে। টাকার পরিমান দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন