জিনগত বৈশিষ্ট্যের কারনে প্রাকৃতিক ভাবেই কারও চুল কোঁকড়ানো, কারও ঢেউ খেলানো আর কারও বা সোজা। আর সেই প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যকে অন্যভাবে উপস্থাপন করা হয় হেয়ার রিবন্ডিংয়ের মাধ্যমে। বলা হয়ে থাকে, এটি নিজের চুলের প্রতি সবচেয়ে বড় অবিচারগুলোর মধ্যে একটি। হেয়ার রিবন্ডিং করতে সময় লাগে কয়েক ঘণ্টা। আর তাতে ব্যবহার করা হয় চুলের জন্য ক্ষতিকর কেমিক্যাল, যা চুলের জন্য মারাত্মক। দীর্ঘ সময় এসব কেমিক্যাল লাগিয়ে রাখার কারণে মাথার ত্বকে চুলকানি হতে পারে। দেখা দেয় চর্মরোগের ঝুঁকি। তাই এগুলো থেকে সাবধান থাকাই উচিত। তবে যদি এ ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তার দেওয়া পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত। কারণ একেকজনের ত্বক একেক রকম। ত্বকের ধরন অনুযায়ী দিতে হবে চিকিৎসা। তাছাড়া চুলের সৌন্দর্য বাড়াতে রিবন্ডিং করালে তা সম্পূর্ণভাবেই চুলের প্রাকৃতিক গঠনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। একটি নির্দিষ্ট সময় পর চুল হয়ে পড়ে ভঙ্গুর, জৌলুশহীন। বেড়ে যায় চুল পড়ার মাত্রা। হয়ে যেতে পারে টাকও।
করণীয়: প্রায় সময়ই চিকিৎসকের চেম্বারে এ ধরনের রোগীর দেখা পাওয়া যায় যারা রিবন্ডিং-পরবর্তী জটিলতায় আক্রান্ত। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। মনে রাখতে হবে, রিবন্ডিং করে ফেললেই এর প্রতি দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। এর পরবর্তী এক বছর পর্যন্ত চুলের অতিরিক্ত যতœ নিতে হবে।
# চুল ধোয়ার জন্য সব সময়ই ঠান্ডা পানি ব্যবহার করতে হবে। প্রয়োজন হলেও কখনোই গরম বা সামান্য গরম পানিও ব্যবহার করা যাবে না। এতে রিবন্ডিং করা চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। # চুলের ব্যবহারের উপযোগী শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি মাসে অন্তত একবার ক্লিরিফাইং শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।
# নিয়মিত শ্যাম্পুর পর ভালো কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। পাশাপাশি সপ্তাহে অন্তত একবার ডিপ কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।
# মোটা দাঁতের কাঠের চিরুনি ব্যবহার করা ভালো। # রিবন্ডিংয়ের পর অন্তত দুই মাস পর্যন্ত কোনো ধরনের হাইলাইটিং করা উচিত নয়।
# সর্বোপরি হেয়ার রিবন্ডিংয়ের পরবর্তী ছয় মাস খাদ্যাভ্যাসে প্রোটিনের পরিমাণ বাড়ানো জরুরি। এর পাশাপাশি জাঙ্ক ফুড বন্ধ করতে হবে। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় প্রচুর শাকসবজি ও ফলমূল রাখা জরুরি। এতে করে চুলের স্বাস্থ্য সুন্দর থাকবে। এ ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই, হেয়ার রিবন্ডিংয়ের কারণে ঝলমলে, উজ্জ্বল চুল আপনার ব্যক্তিত্বকে মোহনীয় ও আকর্ষণীয় করে তোলে। কিন্তু অনেকটা আলোর নিচেই অন্ধকারের মতো। এতে চুলের অকালমৃত্যুও হয়। তাই জেনেবুঝে দেখে হেয়ার রিবন্ডিং করুন। কোন কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন সেটার দিকেও নজর দিন।
সহকারী অধ্যাপক,
চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ এবং এয়েস্থেটিকস সার্জন
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ডা. জাহিদ হেয়ার অ্যান্ড স্কিনিক, গ্রিনরোড
পান্থপথ, ঢাকা
০১৭০৭-০১১২০০, ০১৭৩০-৭১৬০৬০।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন