বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে পোশাক শ্রমিকরা। এ সময় রাস্তার দু’পাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে নগরজুড়ে যানজটের সৃস্টি হয়। এক পর্যায়ে বিজিএমই এর আশ্বাসে প্রায় তিন ঘন্টা পর অবরোধ প্রত্যাহার করে পোশাক শ্রমিকরা।
জানা গেছে, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গতকাল সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর শ্যামলী এলাকায় সড়কে অবস্থান করে স্থানীয় ডায়নামিক ফ্যাশনের শ্রমিকরা। পরে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় দাবি আদায়ের বিভিন্ন ¯েøাগান দেয়।
শ্রমিকরা জানান, প্রতিষ্ঠানে তাদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রাখা হয়েছে। নতুন বছরে ইনক্রিমেন্টও দেয়া হয়নি। বকেয়ার দাবি জানালেই ছাঁটাইয়ের হুমকি দেয়া হয়। এ বিষয়ে মালিকের সাথে বসতে চাইলেও মালিক রাজি হননি। উল্টো ডিসেম্বর মাসের বেতনও আটকে দেওয়া হয়। এ কারণে বাধ্য হয়ে তারা সড়ক অবরোধ করে। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারক সমিতির একটি প্রতিনিধিদল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তারা শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া পূরণের আশ্বাস দিলেও শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।
এদিকে, পোশাক শ্রমিকদের অবরোধের কারণে শ্যামলী এলাকায় রাস্তার দু’পাশে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুরো শহরে যানজটের সৃস্টি হয়। তীব্র যানজটের কারণে ভোগান্তির মধ্যে পড়েন সাধারণ মানুষ। তবে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
স্থানীয়রা জানান, পোশাক কারখানার কয়েকশ শ্রমিক সকালে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। অল্প সময়ের মধ্যে যানজট ছড়িয়ে পড়ে কলেজ গেট থেকে আসাদগেইট পর্যন্ত। এক পর্যায়ে অবরোধের প্রভাব পড়ে পুরো ঢাকা শহরে। শ্যামলী থেকে গাবতলী পর্যন্ত যানজটের সৃস্টি হয়। অপরদিকে আসাদগেট থেকে নীলক্ষেত মোড় পর্যন্ত যানটজের সৃস্টি হয়। অন্যদিকে ফার্মগেট, খামারবাড়ি, কারওয়ান বাজার, বাংলা মটর ও শাহবাগ এলাকায়ও অবরোধের প্রভাব পড়ে। এছাড়া আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, মহাখালি, গুলশান, বাড্ডা লিংক রোডের গাড়িগুলোও অবরোধের কারণে রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ সময় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলোও যানজটের কবলে পড়তে দেখা গেছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা উজ্জল এ গোমেজ জানান, তিনি একটি বেসরকারী অফিসে চাকরি করেন। তার অফিস শাহবাগ এলাকায়। সেই সুবাধে তিনি প্রতিদিনের মত গতকালও সকাল সাড়ে ৮টায় অফিসের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। প্রতিদিন ১০টার মধ্যে অফিসে গেলেও গতকাল ১২টার সময় অফিসে যান।
তিনি জানান, পোশাক শ্রমিকদের অবরোধের কারণে তীব্্র যানজটের সৃস্টি হয়। এতে বাসগুলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে। পরে তিনি বাস থেকে নেমে হেটে ফার্মগেট এলাকায় যান। সেখান থেকে রিকশায় পান্থপথ এলাকায় যান। পরে সেখান থেকে হেটে শাহবাগে পৌঁছান। শুধু উজ্জল এ গোমেজই নয়। গতকাল সকালে অনেকেই পায়ে হেটে অফিসে যেতে দেখা গেছে।
তবে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের এডিসি ওয়াহিদুজ্জামান জানান, পোশাক শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নেবার পরই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। অপ্রীতিকর কিছু যাতে না ঘটে সেজন্য দ্রæত বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। পরে বিজিএমইএ এর প্রতিনিধিদল শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সাথে কথা বলে তাদের দাবি মানার আশ্বাস দেন। এরপর শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন এবং যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন