শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

চুক্তিতে চলে ৬২ ভাগ অটোরিকশার নৈরাজ্য বন্ধে মন্ত্রণালয় ব্যর্থ

প্রকাশের সময় : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মালিক ও চালকদের মনঃপুত ভাড়া কার্যকর করেও অটোরিকশায় নৈরাজ্য বন্ধ হয়নি। বরং এ সেক্টরে নৈরাজ্য বন্ধ করতে মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এক সপ্তাহের পর্যবেক্ষণ শেষে গতকাল (রোববার) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এ দাবি করে।
সমিতির মতে, কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নির্ধারণ থাকলেও বর্তমানে ৬২ শতাংশ অটোরিকশা চুক্তিতে চলাচল করে। আর মোট অটোরিকশার মধ্যে ৮১ শতাংশ আবার যাত্রীদের কাছ থেকে বকশীষ হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। অন্যদিকে যাত্রীদের প্রয়োজনীয় গন্তব্যে যায় না প্রায় ৭৩ শতাংশ অটোরিকশা। এছাড়া মিটার অনুযায়ী চলাচলের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ৪৮ শতাংশ অটোরিকশা মিটারে চলাচল করে না।
‘কেমন চলছে অটোরিকশা?’ শিরোনামে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপকমিটির সদস্যরা গত ২০ থেকে ২৮ জানুয়ারি সপ্তাহ ব্যাপী পর্যবেক্ষণ করে। এসময় রাজধানীর ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ স্পটে ১০৯৩টি অটোরিকশায় যাত্রী সেবার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হয়। এতে ১১৬০ জন অটোরিকশা যাত্রীর সাথে কথা বলে ওই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
পর্যবেক্ষণকালে ঢাকা মহানগরীর সদরঘাট, গুলিস্তান, প্রেসক্লাব, পল্টন, কাকরাইল, দৈনিক বাংলা, মতিঝিল, কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন, খিলগাঁও চৌরাস্তা, ফকিরাপুল, ফার্মগেইট, মালিবাগ, মিরপুর-১০, ধানমন্ডি, এলিফেন্টরোড, শাহবাগ, বিমানবন্দর, মহাখালী এলাকা ঘুরে উপরোক্ত চিত্র দেখা গেছে। এসকল অনিয়ম প্রতিরোধে পর্যবেক্ষণকালীন সময়ে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত উক্ত এলাকায় বিআরটিএ বা অন্যকোন সংস্থার কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। পর্যবেক্ষণকালে যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, রাত ৯ টার পর এবং সকাল ৮টার আগে কোন অটোরিকশা মিটারে চলে না।
এর আগে গত ১ নভেম্বর ২০১৫ইং সিএনজি চালিত অটোরিকশার বর্ধিত ভাড়া কার্যকর হওয়ার পর বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি গণপরিবহনে ভাড়া নৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপ-কমিটির সদস্যরা ঢাকা মহানগরীতে গত ১ ও ২ নভেম্বর ২০১৫ দুই দিন ধরে পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ, গুলিস্তান, মতিঝিল, ফার্মগেট, মহাখালী, মিরপুর, উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর রেল স্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এলাকা পর্যবেক্ষণ করে। এসব এলাকায় প্রায় ২২৫টি অটোরিকশা চালক ও ২৪৭ জন যাত্রীর সাথে কথা বলে। এতে ১৯৮টি সিএনজি অটোরিকশা মিটারে চলাচল করছে বলে চালক-যাত্রী প্রতিনিধিদল জানিয়েছে। বাকি ২৭টি অটোরিকশার ১০টিতে কোন মিটার পাওয়া যায় নি। ১৭টি অটোরিকশা চালক বা যাত্রীর ইচ্ছায় চুক্তিতে চলাচল করতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, ১ নভেম্বর ২০১৫ জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার দিন নতুন বর্ধিত ভাড়া কার্যকর করায় ঐ দিন মিটার জটিলতা সহ নানা কারণে অর্ধেকেরও বেশি অটোরিকশা চলাচল বন্ধ থাকায় পরীক্ষার্থীসহ নগরীর যাত্রী সাধারণ চরম ভোগান্তিতে পড়ে যা যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে উঠে আসে। এছাড়াও পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, মিটার চালু করে চলাচল করলেও অধিকাংশ অটোরিকশা গোপনে চুক্তিতে চলাচল করছে। সরকার নির্ধারিত বর্ধিত দৈনিক জমা ৯০০ টাকা হলেও সিংহভাগ অটোরিকশার মালিকরা ইচ্ছে মত জমা আদায় করছে বলে চালকরা জানিয়েছে। ৯২ শতাংশ যাত্রীর অভিযোগ অটোরিকশা চালকরা এখনো যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না।
পর্যবেক্ষণকালে প্রতীয়মান হয় যে, যাত্রীদের চাহিদার তুলনায় এই বাহনের সংখ্যা কম। ফলে চালকদের ইচ্ছার কাছে যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়েছে। তাই কোন কোন ক্ষেত্রে বেশি ভাড়া দিয়েও গোপন চুক্তিতে যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছে যাত্রীরা। অতিরিক্ত দৈনিক জমা ও আনুসঙ্গিক খরচের পুরোটাই যাত্রীদের কাঁধে চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগে জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন