ঢাকা মহানগর পুলিশের ধানমন্ডি জোনের এডিসি আব্দুল্লাহীল কাফীর বিরুদ্ধে বাড়ি দখল ও যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন শারমিন সিদ্দিকী বিথী নামে এক নারী। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এডিসি আব্দুল্লাহীল কাফী।
বিথী রাজধানীর পশ্চিম ধানমন্ডির হাজী আক্তার হোসেন রোডের ১৩৪/১৪ নম্বর বাসার বাসিন্দা মো. সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিকের মেয়ে। তিনি জানান, ধানমন্ডির হাজী আক্তার হোসেন রোডে তাদের দুটি বাড়ি ছিল। ওই বাড়িগুলোর মধ্যে একটা ১৩৪/১৪ নম্বর বাড়িটি তার মায়ের পৈতৃক সম্পতি থেকে পেয়েছেন। আর ১৪২ নম্বর বাড়িটি স্থানীয় বাসিন্দা শরীফ মন্তাকিম ও মৃত মো. নাসির উল্লাহর ছেলেদের কাছ থেকে বায়নায় মালিক হন। গত এক বছর থেকে বাড়িটি ভাড়া ও ইন্টারনেট ব্যবসার অফিস হিসেবে ভোগ দখল করেন তারা। কিন্তু গত বছরের ২০ জুলাই হাজারীবাগ ও সিবিটি ফাঁড়ির পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই বিথী ও তার মা বেদনা বেগমকে আটক করে।
বিথী আরো জানান, আটকের পর তাদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ১৪২ নম্বর বাড়িটি আব্দুল্লাহীল কাফীকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলা হয়। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে তাদের কথা মত একটি কাগজে সই করেন বিথী ও তার মা। পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। পরে ২১ জুলাই পুলিশ ওই বাড়িতে এসে বাড়ির ভাড়াটিয়াদের ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেয়। এছাড়াও ইন্টারনেট অফিস থেকে মালামাল বের করে দেয় এবং এক ঘণ্টার মধ্যে বাড়িটি ফাঁকা করে দিতে বলে। একপর্যায়ে পুলিশ বাড়িটি দখল করে তালা লাগিয়ে দেয়।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গত বছর ২৯ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করি। কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া পাইনি। পরবর্তীতে আমি ও আমার মা এডিসি আব্দুল্লাহীল কাফীর সাথে দেখা করে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করি। কিন্তু ওই সময় আমাদের কাছে তিনি ৩০ লাখ টাকা দাবি করেন। শুধু তাই নয়, মাকে পাশের রুমে রেখে আমাকে কুপ্রস্তাব দেন তিনি। এ সময় যৌন নিপিড়নের চেষ্টা করা হয় বলেও অভিযোগ করেন বিথী।
নিজেকে দুই সন্তানের জননী দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে বিথী বলেন, আমার স্বামী সউদী প্রবাসী। পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় গত ১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ কমিশনার ও র্যাবের মহাপরিচালক বরাবর দরখাস্ত করি। পরে বিষয়টি জানানোর জন্য গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করি। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের পিছনের রাস্তায় দুর্বৃত্তরা আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা কোথাও নিরাপদ নই। সুবিচার না পেলে আমাদের আত্মহত্যা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।
তবে এসব অভিযোগের ব্যাপারে গতকাল সন্ধ্যায় ধানমন্ডি জোনের এডিসি আব্দুল্লাহীল কাফীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা। ওই নারীর সাথে গত প্রায় দুই বছরের মধ্যে আমার দেখা নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন