শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

অবশেষে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফিরে যাচ্ছে কেসিসি’র অব্যবহৃত মোটা অঙ্কের টাকা

প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনা মহানগরীর যোগাযোগ ও পরিবেশ ব্যবস্থার উন্নয়নে নেয়া দু’টি প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সমূদয় কাজ সমাপ্ত ও অর্থ খরচে ব্যর্থ হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি)। ফলে বরাদ্দকৃত ফান্ডের অব্যবহৃত মোটা অঙ্কের ওই অর্থ সরকারের কোষাগারে ফিরে যাবার আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। অন্যদিকে, এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছে নাগরিক নেতারা। তাদের অভিমত প্রকল্পের পরিচালকদের অদক্ষতা ও গাফিলতির কারণে এ অর্থ ফেরত যাচ্ছে। যার ফলে খুলনার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কেসিসি সূত্রে জানা গেছে, সরকারী অর্থে ২০১১ সালে পরিবেশ ব্যবস্থার উন্নয়নে ওয়েষ্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং এ্যাসফল্ট প্লান্ট স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করে খুলনা সিটি কর্পোরেশন। প্রকল্পে থাকে, ভূমি অধিগ্রহণ, ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ওয়ার্ক, প্রকিউরমেন্ট অব ইকুপমেন্ট, প্রকিউরমেন্ট ভেহিকেল, সিডি, ভ্যাট ডিএসসি ও আইটি ইত্যাদি, প্রাইস কন্সিজেন্সী ওই বিবিধ (ল্যাপটপ, কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, প্রিন্টার, কালি, রেজিন্ট্রেশন অব ভেহিকেল ও অন্যান্য)। ২০১১ সালের ২৯ মার্চ একনেকের সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন মেলে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয় ৩১ কোটি ৯৪ লাখ ৬৭ হাজার। ফের ওই বছর জুলাই মাসে প্রকল্পটির সংশোধিত ডেভালপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজল (ডিপিপি)’র অনুমোদন মেলে। সংশোধিত মেয়াদে ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৬৭ হাজার টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্পের বাস্তবায়নের সময় নির্ধারণ করা হয় ২০১৫-১৬ অর্থ বছর অর্থাৎ চলতি অর্থ বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও এখনও পর্যন্ত সমূদয় কাজ সমাপ্ত ও ফান্ডের সম্পূর্ণ টাকা খরচ করতে পারেনি কর্পোরেশন। ওই প্রকল্পে খরচ হয়েছে মাত্র ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আর ফান্ডে এখনও অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছে রয়েছে ১২ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। ফান্ডের মোটা অঙ্কের ওই অর্থ অব্যহৃত থাকায় তা সরকারের কোষাগারে ফিরে যাবার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।
অপরদিকে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি ২০১২-১৩ অর্থ বছরে ডেভেলপমেন্ট অব ডিফারেন্ট রোডস এন্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফেসিলিটিজ ইন খুলনা সিটি কর্পোরেশন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পে রাজস্ব ব্যয়ের মধ্যে থাকে পরামর্শক ব্যয়, জ্বালানি, স্টেশনারী, আপ্যায়ন, আসবাবপত্র, ফটোকপি সভা, ক¤িপউটার ও যন্ত্রাংশ। মূলধন ব্যয়ের মধ্যে থাকে, রাস্তা পুনঃনির্মাণ (ড্রেইন, সাইড ওয়াল, কালভার্ট), শিক্ষা ভবন নির্মাণ, নগর হেলথ অফিস, ওয়ার্ড অফিস, গ্যারেজ শেড নির্মাণ, সুইপার আবাসিক ভবন নির্মাণ, কবরস্থান তৈরী, শশ্মনঘাট নির্মাণ, জরীপ ও নির্মাণ সামগ্রী পরীক্ষার যন্ত্রপাতি ক্রয়, জীপ ও মটর বাইক, প্রাইজ কন্টিনজেন্সী ও ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সী ইত্যাদি। ২০১২ সালের ১৬ অক্টোবর প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন মেলে। ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নকাল নির্ধারণ করা হয় ২০১৫-১৬ অর্থ বছর। বর্তমানে আরও এক বছর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। সে অনুয়াযী মেয়াদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু এ পর্যন্ত ২০০ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ১০১ কোটি টাকা। এরমধ্যে চলতি অর্থ বছরে ৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ এসেছিল। ৩০ জুনের মধ্যে বরাদ্দকৃত ওই ৪২ কোটি টাকার সমূদয় অর্থ খরচ করার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু কর্পোরেশন বেশিরভাগ অর্থ খরচ করলেও সম্পূর্ণ টাকা খরচে করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে অব্যহৃত এই টাকা অর্থ সরকারের কোষাগারে ফিরে যাবে।
বৃহত্তর খুলনা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সভাপতি আশরাফ উজ্জামান জানান, পরিচালকদের অদক্ষতা ও গাভিলতির কারনে এ অর্থ ফেরত যাচ্ছে। যার ফলে খুলনার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এমনিতেই বরাদ্দ আছে না। যা আসে তাও ফেরত যাচ্ছে। এর দায়ভার কে নেবে?
এ ব্যাপারে কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী-৩ মশিউজ্জামান খান কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
চীফ প্লানিং অফিসার আবির উল জব্বার বলেছেন, এ অব্যবহৃত টাকা কিভাবে খরচ হবে তা প্রকল্প পরিচালকদ্বয় ভালো বলতে পারবেন। তিনি এ প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট নন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন