প্রতিনিয়ত বাড়ছে পাটজাত পণ্যের চাহিদা। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার স্টলগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় পাটপণ্য কিনতে। পাটের ব্যাগ, শো-পিস, শতরঞ্জী, কার্পেট, পাটজাত পণ্যের উপর রয়েছে নানা অফার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পাটজাতপণ্য। তাই এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে, তৈরি করতে হবে আরো নতুন উদ্যোক্তা। একই সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে পাটশিল্পে সোনালী দিন ফিরে আসবে প্রত্যাশা ব্যবসায়ীদের।
সূত্র মতে, এক সময়ের পাটশিল্প উৎপাদন ও রপ্তানিতে ছিলো দেশের সবচেয়ে বড়খাত। সোনালী সে সময় ফুরিয়ে গেলেও, বর্তমানে বিশ্ববাজারে বাড়ছে, পাটজাত পণ্যের চাহিদা।
সরেজেমিনে দেখা গেছে, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাতেও, পাটজাত পণ্যের স্টলগুলোতে ভিড় চোখে পড়ার মতো। বৈচিত্র আর ভিন্ন আমেজ নিয়ে আসায়, বেড়েছে পাটজাত পণ্যের চাহিদা। তানিয়া হাসান নামে এক ক্রেতা বলেছেন, পাটজাত পণ্য আমাদের দেশীয় পণ্য, তাই এটার প্রতি আমাদের আগ্রহ একটু বেশিই। একই সঙ্গে দামও হাতের নাগালে। সব থেকে বড় ব্যাপার দেশের পাট পণ্যের মান খুবই ভালো বলে কিনতে এসেছি উল্লেখ করেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মেলায় পাটের ব্যাগ, সো পিস, শতরঞ্জী, কার্পেট, পাটজাত পণ্যের মূল আকর্ষণ। এসব পণ্যের উপর রয়েছে নানা অফার। দামও ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই। তাই বিক্রিও হচ্ছে ভালো। রাকিব নামে এক বিক্রেতা জানান, মেলা জমে গেছে। ক্রেতা আসছেন ভালই আর সেই সাথে আমাদের বিভিন্ন অফার তো আছেই।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানিতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পাটজাতপণ্য। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে দরকার প্রশিক্ষণ। তৈরী করতে হবে আরো নতুন উদ্যোক্তা।
জেডিপিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম আখন্দ বলেন, আসলে এই জায়গাটাকে অনেকদূর নিয়ে যাওয়া সম্ভব। প্রতিবছরই পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়ছে। সরকার যদি আমাদের আরও সহায়তা করেন তাহলে আরো অনেকদূর এগিয়ে যেতে পারবো।
দেশের পাটশিল্পের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে কাজ করা বেসরকারি খাতের অন্যতম উদ্যোক্তা ক্রিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশিদুল করিম মুন্না বলেছেন, দেশীয় পাটজাত পণ্য ব্যাগ, সো পিস, শতরঞ্জী ও কার্পেটের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশ বেড়েছে। একই সঙ্গে শুধু দেশেই নয়; বিদেশি বাজারেও এখন বৈচিত্র্যপূর্ণ পাটপণ্যের চাহিদা বাড়ছে। যে কারণে রপ্তানিও বাড়ছে। তিনি জানান, চলতি অর্থবছর রপ্তানি আয় কিছুটা ধীর অবস্থায় থাকা সত্তে¡ও পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানির আয় বেড়েছে। চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের প্রথম ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) এ খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫১ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলারের, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২১ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি এবং লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, পাট পণ্যের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। চাহিদার কথা বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ নতুন নতুন বৈচিত্র্যপূর্ণ পণ্য উৎপাদন করছে। এ জন্য সরকারি পাটকলগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি যেমন সংযোজন করা হচ্ছে তেমনি বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের নগদ সহায়তা ও নীতি সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন