সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সাটু‌রিয়‌ায় দে‌শের সব‌চে‌য়ে বড় গরু সিন্দবাদ বি‌ক্রি হ‌বে ভাগ ক‌রে কেজি দরে

সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ জানুয়ারি, ২০২০, ১:২৬ পিএম

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রাম ইউনিয়নের সাফুল্লি গ্রামের বিল্লাল মিয়ার সেই ৫২ মণ ওজনের ষাঁড় সিনবাদকে জবাই করে ভাগ ক‌রে কে‌জি ধ‌রে বি‌ক্রি করা হবে।
৩১ জানুয়ারী শুক্রবার জবাই করে বিক্রির সিদ্ধান্ত নি‌য়ে সিন্দবা‌দের পালনক‌ারী প্রস্তুতি নি‌চ্ছে।
গত দুই ঈদুল আযহা‌র সময় আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল দে‌শের সব চে‌য়ে বড় গ‌রু ৫২ মন ওজ‌নের সিন্দবাদ নামের ষাঁড়টি। গেল দুই বছর ধরে ঈদুল আযহার কোরবানীর হাটে বিক্রির উপযোগী করলেও উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় অবিক্রিত ছিল আলোড়ন সৃষ্টিকারী সিন্দবাদ নামের ষাঁড়টি।
সিন্দবাদের পালনকারী বিল্লাল হোসেন বলেন, কৃষি কাজ ও ধানের ব্যবসার পাশাপাশি গরু পালন করে দীর্ঘদিন ধরে। তবে সিনবাদ গরুটিই তার সেরা গরু। এর জন্য প্রচুর শ্রম ও টাকা বিনিয়োগ করতে হয়েছে তাকে। সখ করে গরুটির নাম রেখেছে সিনবাদ। গত (দেড় বছর অ‌াগে) ঈদুল অাজহার সময় সিন্দবা‌দের ওজন ছিল ২৭ ম‌নের ম‌তো। সে সময় গর‌ু‌টি ক্রেতারা সা‌ড়ে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম ব‌লে‌ছিল কিন্তু বি‌ক্রি ক‌রে নি সে। এবার ঈদুল আযহায় কোরবানির হাটে বিক্রির উপযোগী করলেও উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় অবিক্রিত রয়ে যায় সিন্দবাদ নামের ষাঁড়টি। সিন্দবাদ‌কে বি‌ক্রি কর‌তে এবার ঢাকার গাবতলীর পশুর হা‌টে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখা‌নে সিন্দবা‌দের যোগ্য দাম কেউ ব‌লে‌নি। একজন মাত্র ক্রেতা ১০ লা‌খের নি‌চে দাম চাই‌তে ব‌লে চ‌লে গে‌ছে। প‌রে গরু‌টি‌কে বা‌ড়ি‌তে ফি‌রি‌য়ে অানা হ‌য়ে‌।
সিন্দবাদের দেখবাল করার জন্য একজন রাখাল রেখেছি, তাকে প্রতি মাসে সাড়ে ১২ হাজার টাকা বেতন দিতে হচ্ছে। এ পর্যন্ত সিন্দবাদের পেছনে ১৯ থেকে ২০ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে।
সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে পালন করা সিন্দবাদের বর্তমান বয়স ৫ বছরের মতো। রুটিন অনুযায়ী দীর্ঘ একটি খাবার তালিকা রয়েছে তার।
সিন্দবাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় রয়েছে দশ কেজি ভুসি, দুই কেজি মালটা, দুই কেজি আপেল, ছয় হালি কলা, এক কেজি গুড়, নালি হাফ কেজি, ভুট্টার ফাকি দুই কেজি, ছোলার ফাকি এক কেজি, মিষ্টি কুমড়া এবং পাঁচ হালি লেবু এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কাঁচা ঘাস। কিন্তু গত দুই বছর ঈদে বিক্রি না করতে পেরে লোকসানে পড়ে খাবার কমিয়ে দেওয়া হয়।
বর্তমানে প্রতিদিন সিন্দবাদের খাবারের পেছনে এক থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
বিশালাকৃতির গরুটি দেখার জন্য আশেপাশের অঞ্চল থেকে হাজারও মানুষ প্রতিনিয়ত ভিড় করছে বিল্লাল হোসেনের বা‌ড়ি‌তে। কেউ ছ‌বি তুল‌ছে কেউ ভি‌ডিও কর‌ছে গরু‌টির।
গত বছরের ২০১৯ সালের কোরবানি হাটের সময় ষাঁড়টির ওজন ছিল ৫২ মণ। এই সিন্দবাদই দেশের সবচেয়ে বেশি ওজনের ষাঁড় ছিল বলে জানিয়েছিল সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস।
সিন্দবাদের পালনকারী বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম জানায়, আড়াই বছর আগে পার্শ্ববর্তী এলাকা গোপালপুর থেকে সে সময় আড়াই বছর বয়সী হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে কেনে। পরে পরিবারের সবাই মিলে গরুটির নাম রাখে সিন্দবাদ। এরপর থেকেই সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করা হচ্ছে তাকে। ২০১৮ সালের ঈদুল আযহার আগে সিন্দবাদের ওজন ছিল ২৭ মণ। বাড়ি থেকে প্রচুর ক্রেতা আসলেও উপযুক্ত দাম না পাওয়াতে বিক্রি করিনি। গেল ২০১৯ সালের ঈদের হাটে ওজন ছিল ৫২ মণ। কিন্তু হাজার হাজার ক্রেতাদের ফোন পেলেও বিক্রি করতে পারিনি সিন্দবাদকে।
দড়গ্রাম ইউনিয়নের সাফুল্লি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শুক্রবার সকালের দিকে সিন্দবাদকে জবাই করা হবে। পুরো গোস্ত ১০৫টি ভাগে ভাগ করে বিক্রয় করা হবে। প্র‌তিভা‌গের দাম নির্ধারন করা হ‌য়ে‌ছে ১০ হাজার টাকা ক‌রে। আর যারা সিন্দবা‌দের মাং‌সের ভাগ নি‌বেন তা‌দের জন্য ১২ হাজার টাকা দি‌য়ে কেনা হ‌য়ে‌ছে এক‌টি খা‌সি। যারা গোস্ত কিনবেন তাদের জন্য সকালে খাসির কাচ্চি দিয়ে আপ্যায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।
সাটুরিয়া উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ভেটেনারি সার্জন ডা. মো. সেলিম জাহান জানায়, সিন্দবাদ ষাঁড়টি হলিস্টিন ফ্রিজিয়ান জাতের। ঈদুল আযহার সময় বিশালাকৃতির গরু সিনবাদের দৈর্ঘ্য ৯৬ ইঞ্চি, উচ্চতা ৬ ফিট ৭ ইঞ্চি, ওজন প্রায় ৫২ মন। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করা হয়েছে ষাঁড়টি। তা‌দের ধারণা ৫২ মন ওজনের ষাঁড়টি বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ওজনের ষাঁড়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন