করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আরো উদ্যোগী ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশের করোনা ভাইরাস রোগী সনাক্ত না হলেও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ভাইরাসটি যাতে বাংলাদেশের ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য জনচেতনা সৃষ্টির পাশাপাশি ভাইরাসটি মোকাবেলায় কি কি করণীয় রয়েছে তা দ্রুততার সাথে নির্ধারণ করতে হবে।
রোববার (২ ফেব্রæয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইপনা অডিটরিয়ামে আয়োজিত এক সায়েন্টিফিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নতুন করোনাভাইরাসে কারণে বিশ্বব্যাপী মানুষ বিপদাপন্ন সময় পার করছে। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাপানের এহিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রটেও সায়েন্স সেন্টারের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর। ‘মলিকিউল এপিডেমিওলজি এন্ড ইমিউনোলজি অব নবেল করোনাভাইরাস হাইপস এন্ড হোপস’ শীর্ষক এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তিনি বলেন, এই ভাইরাসের বর্তমানে ‘সুপার স্পেড’ হচ্ছে। এই সময় এটি দ্রæত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই এটির দ্রæত ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে ‘সুপার স্পেড’র রহস্য উšে§াচন করতে হবে। এই ভাইরাসের ভয়াবহতা নিরুপণে পৃথিবীর চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা গবেষণা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সায়েন্স, ন্যাচার ও ল্যানস্যাটের মতো জার্নালে ১৩০টি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
ড. আকবর বলেন, চীন থেকে আগত ৩০২ জন বাংলাদেশীকে যেভাবে হজ ক্যাম্পে রাখা হয়েছে সেটা কোয়ারেন্টাই ব্যবস্থা নয়। কোয়ারেন্টাইনে প্রত্যেককে পৃথকভাবে রাখাতে হয়। একজন আরেক জনের সংস্পর্শে না এসে যেন প্রত্যেকেই নিরাপাদে থাকতে পারে, সেইি বিষয়টি নিশ্চিত করতে হয়। ঢাকার মতো শহরে এ ধরনের রোগ ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই ভাইরাসের ভ্যাক্সিন আবিস্কার হয়েছে বলে সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য ফ্রান্সের পাস্তুর ইনস্টিটিউট ভ্যাক্সিন তৈরিতে কাজ শুরু করেছে। তবে ২০২১ সালের আগে সেটি পাওযার সম্ভাবনা নেই। তাই এই ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকতে সবাইকে ভাইরাল প্রটেক্টেড মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, মাস্ক ব্যবহারে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত নিরাপদ থাকা সম্ভব। এছাড়া হাত ধোয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ৩০ থেকে ৪৫ সেকেন্ড সাবান দিয়ে ভাল করে হাত ধুতে হবে।
করোনা ভাইরাস প্রসঙ্গে ড. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর বলেন, পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় ১০০ কোটির বেশি মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জায় আক্রান্ত হয়। যাদের মধ্যে কিছু মানুষের মৃত্যু ঘটে। ইনফ্লয়েঞ্জায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় ১৯১৮ থেকে ২০ সালে। সেই সময়ে ৫’শ কোটি মানুষ এ রেগে আক্রান্ত হয় এবং দুই কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্বব্যাপী এই ইনফ্লুয়েঞ্জা ঘটায় এক ধরনের করোনাভাইরাস। ইতিপূর্বে এই কোরানা ভাইরাস সার্স, মার্স ও সিভিয়ার ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, প্রক্টর প্রফেসর ডা. সৈয়দ মোজাফফ্র আহমেদ, ফার্মাকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মো. সায়েদুর রহমান, হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. মামুন-আল মাহতাব স্বপ্নীল, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী প্রমুখসহ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও ছাত্রছাত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন