শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

১০ দিনেই চালু হাজার বেডের হাসপাতাল

করোনাভাইরাসে মৃত বেড়ে ৩৬১ বাইরে প্রথম মৃত্যু ফিলিপাইনে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল মধ্য চিনের হুবাই প্রদেশের উহান শহরে গোটা একটা নতুন হাসপাতাল গড়ে ফেলেছে চীন। অস্থায়ী এই হাসপাতালের নাম দেয়া হয়েছে হুয়োশেনশান হাসপাতাল এবং গত রোববারই এর দরজা খুলে দেয়া হয়। চীনা সংবাদ সংস্থা শিনহুয়া জানিয়েছে, আপাতত করোনাভাইরাসে আক্রান্তদেরই চিকিৎসা হবে এই হাসপাতালে। হাজার বেডের এই হাসপাতাল তৈরি করতে সময় লেগেছে মাত্র দশ দিন, যা সম্ভবত নতুন রেকর্ড।
হাসপাতাল নির্মাণে নেতৃত্ব দানকারী ফ্যাং শিয়াং শিনহুয়াকে বলেন, ‘এই আয়তনের প্রজেক্ট শেষ হতে সাধারণত সময় লাগে অন্তত দু’বছর। অস্থায়ী একটি বাড়ি তৈরি করতেই লাগে মাসখানেক, ছোঁয়াচে রোগের হাসপাতালের কথা তো ছেড়েই দিন’।
শিনহুয়া আরও জানিয়েছে, ২,৩০০টি বেড-বিশিষ্ট আরও একটি অস্থায়ী হাসপাতাল আগামীকাল খোলা হবে এই নতুন হাসপাতালের পাশেই। অন্যদিকে গতকাল সোমবার থেকে হুয়োশেনশান হাসপাতালে কাজে লেগে গেছেন সেনাবাহিনী থেকে ধার নেয়া ১ হাজার ৪শ’ স্বাস্থ্যকর্মী। তাদের মধ্যে রয়েছেন পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) জয়েন্ট লজিস্টিক সাপোর্ট ফোর্স থেকে আসা ৯৫০ জন কর্মী এবং পিএলএ-র সেনা, বিমান এবং নৌবাহিনীর মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে ৪৫০ জন, যাদের এর আগেই উহান পাঠিয়ে দেয়া হয়। করোনাভাইরাস মহামারীর প্রকোপে চীনে মৃতের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে হয়েছে ৩৬১, যাদের মধ্যে স্রেফ রোববারেই মৃত্যু হয় ৫৭ জন রোগীর। গতকাল চীনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ঘোষণা করেন, এখন পর্যন্ত সে দেশে নিশ্চিতভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭,২০৫ জন।
গতকাল তাদের দৈনিক রিপোর্টে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন জানায়, ২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশ থেকে খবর আসে ২,৮২৯টি নতুন সংক্রমণের, যার ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বর্তমানে ১৭,২০৫। কমিশনের রিপোর্ট উদ্ধৃত করেই শিনহুয়া জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা এই মুহ‚র্তে ৩৬১। রোববার মৃত ৫৭ জনের মধ্যে ৫৬ জনই ছিলেন মহামারীর কেন্দ্রস্থলে থাকা হুবাই প্রদেশের বাসিন্দা এবং একজন ছিলেন দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের চংকিংয়ের বাসিন্দা। কমিশন আরও জানিয়েছে, রোববার ৫,১৭৩টি সন্দেহজনক নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও গত রোববার গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন ১৮৬ জন রোগী, এদিকে রোগমুক্তির পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান ১৪৭ জন।
কমিশন জানিয়েছে, মোট ২,২৯৬ জন রোগী এখনও গুরুতরভাবে অসুস্থ এবং ২১,৫৫৮ জন এখনও সম্ভাব্য আক্রান্ত হিসেবে গণ্য হচ্ছেন। সেরে উঠে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন মোট ৪৭৫ জন। তাদের ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৮৩ জন ঘনিষ্ঠের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ১০ হাজার ৫৫ জনকে রোববার মেডিক্যাল নজরদারি থেকে মুক্তি দেয়া হয়। বাকিরা এখনও নজরদারিতে রয়েছেন।
অন্যদিকে, রোববার রাত পর্যন্ত হংকং থেকে ১৫টি সংক্রমণের খবর এসেছে। আটটির খবর এসেছে চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল ম্যাকাউ থেকে এবং ১০টি তাইওয়ান থেকে।
চীনের বাইরে প্রথম মৃত্যু
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তি ফিলিপাইনে মারা গেছেন। দেশটির কর্তৃপক্ষ এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে। রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এই প্রথম চীনের বাইরে অন্য কোনো দেশে কারও মৃত্যু হলো।
ফিলিপাইনের কর্তৃপক্ষ বলেছে, যে ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তার বয়স ৪৪। তিনি চীনের নাগরিক। তার বাড়ি চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, উহান থেকে ফিলিপাইনে আসার পর চীনের ওই নাগরিক মারা গেছেন। তিনি ফিলিপাইনে আসার আগেই করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন বলে প্রতীয়মান হয়।
ফিলিপাইনের স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, ওই ব্যক্তি উহান থেকে হংকং হয়ে ফিলিপাইনে এসেছিলেন। তাকে ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলার একটি হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। সূত্র : সিনহুয়া।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন