চট্টগ্রাম ব্যুরো : ঈদ যাত্রায় চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে পরিবহন মালিকরা। টিকেট ব্যবস্থাপনাসহ নানান ক্ষেত্রে গলদ থাকায় পদে পদে যাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে। বিআরটিএ’র ভিজিল্যান্স টিম বা মনিটরিং কমিটি গঠন করার কথা থাকলেও মাঠ পর্যায়ে তাদের কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যাত্রীকল্যাণ সমিতি চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটি সরেজমিন পর্যবেক্ষণ শেষে এসব তথ্য জানিয়েছে।
গত ২৪ রমজান থেকে তারা নগরীর বিভিন্ন বাস টিকেট কাউন্টার পর্যবেক্ষণে নামে। বৃহস্পতিবার নগরীর এ কে খান মোড় এলাকায় বিভিন্ন বাস টিকেট কাউন্টার ঘুরে দেখা যায় গণপরিবহন মালিকরা ৭০০ টাকার ভাড়া যাত্রীদের কাছ থেকে ১২৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। শুক্রবার বহদ্দারহাট এলাকার বিভিন্ন বাস কাউন্টার পর্যবেক্ষণ করে ঈদ যাত্রী সেবা পর্যবেক্ষণ টিম।
পর্যবেক্ষণে উঠে আসে পরিবহন মালিকরা তাদের ইচ্ছেমতোই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে। চট্টগ্রাম-ভোলা, চট্টগ্রাম-চরফ্যাশন, চট্টগ্রাম-ল²ীপুর, চট্টগ্রাম-আলেকজান্ডার, চট্টগ্রাম-মজু চৌধুরীর হাট, চট্টগ্রাম-ফেরীঘাট, চট্টগ্রাম-সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম-খুলনা রুটে চলাচলকারী সোদিয়া পরিবহন, এ আর এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, নিউ ইসরাত এক্সপ্রেস, সীমান্ত সুপার সার্ভিস, তোফা এন্টারপ্রাইজ, জননী এন্টারপ্রাইজ, শাহ ফতেহ আলী যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ তিনগুণ ভাড়া আদায় করছে। বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের একটি টিম নগরীর এ কে খান ও বহদ্দারহাট এলাকার বিভিন্ন বাস টিকেট কাউন্টারে পর্যবেক্ষণ করে। যাত্রীকল্যাণ সমিতির তথ্য থেকে জানা যায়, তোফা এন্টারপ্রাইজ বহদ্দারহাট থেকে ভোলা পূর্বের ভাড়া ছিল ৩৫০টাকা এখন আদায় করছে ৮০০ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে চরফ্যাশন ৩০০ টাকা ভাড়া, আদায় করছে ৫০০ টাকা। চট্টগ্রাম-ল²ীপুর রুটে জননী এন্টারপ্রাইজ ও এ আর এক্সপ্রেসের স্বাভাবিক ভাড়া ৩৫০ টাকা, আদায় করছে ৫০০ টাকা। চট্টগ্রাম-মজু চৌধুরীর হাট এ আর এক্সপ্রেস, যমুনা এক্সপ্রেস, নিউ ইসরাত এক্সপ্রেস ভাড়া ৩৫০ টাকা, এখন আদায় হচ্ছে ৫০০ টাকা। সৌাদিয়া পরিবহন চট্টগ্রাম-সাতক্ষীরা ও খুলনা এলাকায় ৯৫০ টাকা ভাড়ার জায়গায় ১০৫০ টাকা আদায় করছে। শাহ ফতেহ আলী চট্টগ্রাম-ভোলা ৭০০ টাকা ভাড়ার জায়গায় ১২৫০ টাকা আদায় করছে।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামসুদ্দীন চৌধুরী বলেন, আমরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) সুজায়েত ইসলাম অবহিত করেছি।
তিনি শাহ ফতেহ আলী এ কে খান কাউন্টারকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আকবর শাহ থানার অফিসার ইনচার্জ স্বদীপ কুমার দাশকে নির্দেশ দিয়েছেন। বহদ্দারহাট এলাকায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আবু মোহাম্মদ শাহাজাহান কবিরকে জানানো হলে, টিকেট কাউন্টারগুলোর অতিরিক্ত ভাড়ার বিষয়টি দেখাশোনা ও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এসআই মফিজকে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, এবারের ঈদে লম্বা ছুটি কাজে লাগাতে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে স্বজনদের সাথে ঈদ আনন্দ উপভোগ করার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম ছাড়তে শুরু করেছে ৩১ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৬০ হাজার যাত্রী ঈদ করবে বিদেশে, ১৬ লাখ যাত্রী চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায়, বাকী ১৪ লাখ যাত্রী দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করবে। এর মধ্যে শুধু ভোলা বা বরিশালে যাবে ৩ লক্ষের বেশি যাত্রী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন