ভারত পামঅয়েল আমদানি বন্ধের হুমকি দেয়া সত্তে¡ও কাশ্মীর ইস্যুতে প্রতিবাদ জারি রাখায় মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এ কারণে মালয়েশিয়ার যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণে পাকিস্তান সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল মাহাথিরের সাথে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এই কথা বলেন ইমরান খান। পাশাপাশি, অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করায় ওআইসি’র কড়া সমালোচনা করেন তিনি।
দু’দিনের সফরে গত সোমবার রাতে মালয়েশিয়া যান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গতকাল সফরের শেষ দিনে সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘মাহাথির মোহাম্মদের আদর্শ ও নীতির প্রতি আমার সবসময় বিশ্বাস রয়েছে। যে কারণে আমি তাকে সম্মান করি ও ভালোবাসি।’ কাশ্মীর ইস্যুতে প্রতিবাদ করায় ভারত পামঅয়েল কেনা কমিয়ে দেয়ায় মালয়েশিয়ার যে ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষতিপূরণে নিজের জায়গা থেকে পাকিস্তান সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরের বিষয়ে মালয়েশিয়ার অবস্থান মেনে নিতে পারেনি ভারত। তাই পাম তেল আমদানি বন্ধ করার হুমকি দিয়েছে। এটা আমাদের নজরে এসেছে। মালয়েশিয়া থেকে পাম তেল কিনতে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’
এর পরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও শান্তিবিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, ‘ভারতে একটি চরমপন্থী ভাবনা প্রয়োগ করার চেষ্টা হচ্ছে। সেখানে যা হচ্ছে, তা দেশটির জনতার জন্য খুবই বিপজ্জনক। এতে দেশ বিভাজিত হয়ে যাবে, ভারত টুকরো হয়ে যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘হিন্দুত্বের ফ্যাসিবাদী বিচারধারা ভারতের ৫০ কোটি মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। আর এ ভাবেই ভারত যদি চলতে থাকে, তাহলে বহু মুশকিলের সামনাসামনি পড়তে হবে তাদের।’ এরপরই তিনি বলেন, ‘চরমপন্থার ভ‚ত বোতলের বাইরে বেরিয়ে এলে ঢোকানো মুশকিল।’
কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করায় মুসলিম দেশগুলোর সংগঠন ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) কড়া সমালোচনা করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, ‘কেউ চায় না মুসলিম দেশগুলো একতাবদ্ধ হয়ে লড়াই শুরু করুক। অন্যান্য সম্প্রদায় যেমন নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় তাদের সংস্থা থেকে সাহায্য পায় তেমনি মুসলিমদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া উচিত ওআইসির। এ সংস্থায় ১৩০ কোটি মানুষ থাকলেও লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, ইরাক, আফগানিস্তানসহ গোটা বিশ্বে মুসলিমরা ভুগছে। সেখানে ওআইসির ভ‚মিকা কী?’ তিনি আরও বলেন, ‘এর কারণ মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্য নেই, তারা পুরোদমে বিভক্ত। ভারত কাশ্মীরের ওপর যে নির্যাতন করলো তা নিয়ে ওআইসি কোনো সিদ্ধান্ত বা অবস্থান নিতে পারেনি। অথচ সংস্থাটির কাজই হচ্ছে মুসলিমদের সহায়তা করা। কিন্তু কাশ্মীরে যারা নিপীড়নের শিকার হলো তাদের সমস্যা সমাধানে মুসলিম দেশগুলোর সম্মিলিত ও দৃঢ় প্রতিবাদের প্রয়োজন ছিল।’ তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়টি উল্লেখ তিনি জানান, কাশ্মীর ও মিয়ানমারের ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের একত্রিত হওয়া অতীব জরুরি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ ওই অঞ্চলগুলোতে মানুষগুলো শুধু ধর্মের কারণে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। সূত্র : দ্য ডন, এক্সপ্রেস নিউজ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন