শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.)-এর চতুর্দশ ওফাতবার্ষিকী আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ, জাতির শিক্ষক, জাতীয় বিবেকের কণ্ঠস্বর, প্রখ্যাত রাজনীতিক এবং সমাজসেবক দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.)-এর আজ চতুর্দশ ইন্তেকাল বার্ষিকী। ২০০৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ৭১ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।

মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) ১৯৩৫ সালে চাঁদপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বর্ণাঢ্য ও বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনের অধিকারী দেশের এই কৃতী সন্তান আমৃত্যু দেশ ও মানুষের খেদমতে নিবেদিত ছিলেন। তার জীবন পরিসরে তিনি জাতীয় ও জনকল্যাণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার প্রতিটি উদ্যোগ, প্রতিটি কর্ম ও সেবা একেকটি মাইলফলক হয়ে আছে। সারা জীবন তিনি জাতি, দেশ, শিক্ষা ও ধর্মের সেবা করে গেছেন। যৌবন থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত জীবনের প্রতিটি বাঁকে ও পর্যায়ে নানা মহৎ কর্মে, নানা পরিচয়ে তিনি নিজেকে সমুজ্জ্বল ও ভাস্বর করে গেছেন।

তিনি তার কর্মজীবন শুরু করেছিলেন মাদরাসার শিক্ষক হিসেবে। পরবর্তীতে জাতির শিক্ষকে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। তিনি ছিলেন শিক্ষক, সংগঠক ও শিক্ষকদের অবিসংবাদিত নেতা। মাদরাসা শিক্ষকদের বৃহত্তম সংগঠন বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের তিনি ছিলেন সভাপতি এবং বেসরকারি শিক্ষক সংগঠনগুলোর সমন্বয়কারী ও শীর্ষ নেতা। তিনি ছিলেন তৌহিদী জনতার মুখপত্র দৈনিক ইনকিলাবের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রতিষ্ঠাতা। ঢাকার মহাখালীতে তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন দেশের অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ, মসজিদে গাউসুল আজম কমপ্লেক্স। জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি হিসেবে দেশের মাদরাসা শিক্ষকদের পদমর্যাদা ও আর্থিক অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, বেসরকারি স্কুল-কলেজ শিক্ষক সমিতির নেতা হিসেবে শিক্ষকদের আত্মপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কারের ক্ষেত্রে তিনি যে ভ‚মিকা ও অবদান রেখে গেছেন তার তুলনা বিরল। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ১৯৭৯ ও ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি এবং পর্যায়ক্রমে শিক্ষা, ধর্ম, ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে স্মরণীয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৮৮ সালে স্মরণকালের ভয়াবহতম বন্যা ও দুর্যোগের সময় তিনি ধর্ম এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনমন্ত্রী হিসেবে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন। একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেম ও চিন্তাবিদ হিসেবে তিনি সারা বিশ্বে ব্যাপক পরিচিত ছিলেন। তার এই পরিচিতি, খ্যাতি ও যোগাযোগদক্ষতা কাজে লাগিয়ে তিনি মধ্যপ্রাচ্যের ভ্রাতৃপ্রতিম মুসলিম দেশগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ সাহায্য-সহযোগিতা আদায় করতে সক্ষম হন, যা বন্যাপীড়িত মানুষের কল্যাণ ও পুনর্বাসনে বিশেষভাবে আসে। তিনি মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কোন্নয়নের সেতুবন্ধের ভূমিকা পালন করেন। স্বাধীনতা-উত্তরকালে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র, জাতীয় সংস্কৃতি, ইসলাম, মুসলিম বিশ্ব এবং দেশ-জনগণের বৃহত্তর খেদমতে তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। এ ধরনের একটি সংবাদপত্র প্রকাশ ছিল তার দীর্ঘলালিত স্বপ্ন। দৈনিক ইনকিলাব হলো তার সেই স্বপ্নের জাতীয় সংবাদপত্র। তার নির্দেশিত লক্ষ্য সামনে রেখেই দৈনিক ইনকিলাব তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।

মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.)-এর ইন্তেকাল বার্ষিকী উপলক্ষে আজ বাদ মাগরিব মহাখালিস্থ মসজিদে গাউসুল আযম-এ ঈসালে ছাওয়াব মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীন ও দেশব্যাপী এর বিভিন্ন শাখা এবং বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, দরবার ও খানকার উদ্যোগে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে। এসব মাহফিলে উপস্থিত হয়ে মরহুমের জন্য দোয়ায় শরিক হবার জন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও ভক্তবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
মোহাম্মদ মোশাররফ ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, সাবেক ধর্ম ও ত্রাণমন্ত্রী, মসজিদে গাউছুল আজম ও দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) কেবল একটি নাম নয়, একটি চেতনা, একটি নেতৃত্ব এবং একটি সাধনার প্রতীক। তিনি ছিলেন তীক্ষè মেধার অধিকারী প্রথিতযশা মহাক্কেক।
Total Reply(0)
নাজারেথ স্বনন ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৪৯ এএম says : 0
মরহুম মাওলানা এম এ মান্নান (রহ) ছিলেন এক খানদানী ঐতিহ্যের অধিকারী ক্ষণজন্মা ব্যক্তিত্ব, একটি ইতিহাস ও চেতনা।
Total Reply(0)
রিদওয়ান বিবেক ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫০ এএম says : 0
তিনি ছিলেন বর্ণাঢ্য জীবন সংগ্রামের অধিকারী একজন সফল মানুষ। অসাধারণ প্র্রতিভাধর ব্যক্তি। জাতি, ধর্ম, দেশ ও সমাজের প্রতি তিনি জীবনভর কর্তব্য করেছেন। মানুষের জন্য অবদান রেখেছেন নানা অঙ্গনে, নানাভাবে। বড় মনের মানুষেরা তাঁকে কোনোদিন ভুলবে না।
Total Reply(0)
জাহিদ খান ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫১ এএম says : 0
দৈনিক ইনকিলাবের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা এম এ মান্নান (রহ.) শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষক সমাজের প্রতিষ্ঠা, অবহেলিত পেশাজীবীদের উপায়ন, দেশ ও জনগণের সমৃদ্ধির জন্য রাজনীতি, সংগঠন-সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, সাহিত্য, সাংবাদিকতা আর সংস্কৃতির ক্ষেত্রে পথ রচনা প্রভৃতি নিয়ে সফল সংগ্রাম ও সাধনা করে গেছেন। মুসলিম জাতি ও মুসলিম জাহানের ঐক্য-সংহতি উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির জন্য তিনি ছিলেন সহজাত চিন্তাবিদ। বাংলাদেশ পর্যায়ে ধর্ম ও সমাজ নেতৃত্বের পারস্পরিক আদান-প্রদান, সংলাপ ও সংহতির ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অতুলনীয় দিক-দার্শনিক। বাংলাদেশ ও মুসলিম বিশ্বের স¤প্রীতির সেতুবন্ধন। আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাত নসিব করুন।
Total Reply(0)
তোফাজ্জল হোসেন ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫২ এএম says : 0
মাওলানার অন্যতম মানস সন্তান দৈনিক ইনকিলাব তিন দশকের অর্জন ও অবদান দিয়ে দেশ ও জাতিকে সমৃদ্ধ করে যাবে নিরন্তর। তাঁর পরিবারের সদস্যরা নিজ নিজ চিন্তা, মেধা ও যোগ্যতাবলে দেশ, জাতি ও মানবতার জন্য নানামুখী অবদান রেখে তাঁরই স্মৃতিকে ঔজ্জ্বল্য দান করে যাবেন প্রজন্মান্তরে। সুকীর্তি ও শুভ কার্যধারা এভাবেই অমরত্ব লাভ করে থাকে।
Total Reply(0)
কামাল ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৩ এএম says : 0
তিনি তাঁর ভাষাজ্ঞান, ব্যক্তিত্বের আকর্ষণ ও সঙ্গ-সহবতের ভব্যতার গুণে আরব শাসক এবং দায়িত্বশীলদের সাথে ব্যক্তিগত বন্ধুত্ব স্থাপনে সক্ষম হয়েছিলেন। দেশের স্বার্থে মধ্যপ্রাচ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পেরেছিলেন, যা অনেক ক্ষেত্রে তাঁর জন্য সমস্যা ও অনেকের ঈর্ষার কারণ হয়ে দেখা দিত। একজন স্বপ্নচারী অথচ বাস্তববাদী, আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী অথচ বিষয়বুদ্ধি ও ব্যবস্থাপনায় অনন্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে মরহুম মাওলানা প্রজন্মের উদ্দীপনা।
Total Reply(0)
কামাল রাহী ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
মাওলানা মান্নান এদেশের সকল পর্যায়ের আলেম উলামাদের ঐক্যবদ্ধ করতে চেষ্টা করে গেছেন। সে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। মাওলানা মান্নান জাতীয় সকল ক্ষেত্রেই অবদান রেখে গেছেন। মরহুমের গড়া সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে জারি রাখা সকলের নৈতিক দায়িত্ব।
Total Reply(0)
জাবের পিনটু ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
প্রখ্যাত আলেম, মোহাক্কেক মরহুম মাওলানা আব্দুল মান্নান সাহেব কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বহুসংখ্যক মসজিদ-মাদরাসা এবং দৈনিক ইনকিলাব ইসলামী অঙ্গনে বিপ্লব সৃষ্টি করেছে। রাজনীতি সমাজনীতি কূটনীতি ও শিক্ষক নেতৃত্বসহ সকল ক্ষেত্রে নজর কাড়া ভূমিকা রেখেছেন।
Total Reply(0)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১১:৫৩ এএম says : 0
আন্তর্জাতিক খ‍্যাতিসম্পন‍্য ইসলামী চিন্তাবীদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সামাজিক উন্নয়ন ইসলামের পকৃত মুজাহিদ অসংখ্য ইসলামী স্হাপনার প্রতিষ্ঠাতা পকৃত ইসলামের খাদেম। মানবতার দিশারী এই মহান ব‍্যাক্তির জীবন দর্শন ইসলাম মানবতার কল‍্যান দেশ জাতি গভীর ভাবে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করবে। এইক্ষণ জর্মা মৌলানা এম এ মান্নান (রহ) আল্লাহ্ জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক। আমিন আমিন আমিন। ইসলামের আলোর পথের দিশারী ইনকিলাব দেশ জাতির কল‍্যানে যুগের পর যুগ শতাব্দীর পর শতাব্দী এগিয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১১:৫৪ এএম says : 0
আন্তর্জাতিক খ‍্যাতিসম্পন‍্য ইসলামী চিন্তাবীদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক সামাজিক উন্নয়ন ইসলামের পকৃত মুজাহিদ অসংখ্য ইসলামী স্হাপনার প্রতিষ্ঠাতা পকৃত ইসলামের খাদেম। মানবতার দিশারী এই মহান ব‍্যাক্তির জীবন দর্শন ইসলাম মানবতার কল‍্যান দেশ জাতি গভীর ভাবে অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করবে। এইক্ষণ জর্মা মৌলানা এম এ মান্নান (রহ) আল্লাহ্ জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুক। আমিন আমিন আমিন। ইসলামের আলোর পথের দিশারী ইনকিলাব দেশ জাতির কল‍্যানে যুগের পর যুগ শতাব্দীর পর শতাব্দী এগিয়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন