ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার রূপসী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম নগরবেরা উত্তর বাঁশাটী। সেই গ্রামসহ পুরো উপজেলায় এখন উৎসবের আমেজ। এই গ্রামেই ১৯ বিশ্বকাপ জয়ী অন্যতম নায়ক অলরাউন্ডার রকিবুল হাসানের বাড়ি। সাধারণ পরিবারে জন্ম নেয়া রকিবুল হাসানের গর্বিত পিতা শহীদ মিয়া একজন গাড়িচালক। ২ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে রকিবুল ২য়। বড় বোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, রকিবুল দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র আর ছোট ভাই নবম শ্রেণীর ছাত্র।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে জয় সূচক রান করে নতুন ইতিহাসের জন্ম দিয়েছেন রকিবুল হাসান। ২৫ বলে ৯ রান যদিও তেমন কিছু নয় কিন্তু দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিতে অধিনায়ক আকবর আলীর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন রকিবুল। পুরো টুর্নামেন্টই বল হাতে দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন। রকিবুল হাসানের উইং রান সংগ্রহের মাধ্যমে বিশ্বকাপ জয়ের খবর ফুলপুরে পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে তার নিজ গ্রামসহ সারা ফুলপুরে বয়ে যায় আনন্দের বন্যা। উপজেলা সদরসহ গ্রামের পাড়ায় পাড়ায় চলে মিষ্টিমুখ ও আনন্দ উল্লাস। এছাড়াও উপজেলা চত্বরে মিষ্টিমুখ করিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম। ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক ও ফুলপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ অনেকেই তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে অভিনন্দন জানান। ফুলপুর উপজেলা শহরে বের হয় আনন্দ মিছিল। ফুলপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবারের ছেলে যুব ক্রিকেটার ইয়ং টাইগার রকিবুল হাসান এখন সবার গর্ব।
দারিদ্র্যতা বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি যুব ক্রিকেটার রকিবুল হাসানের। সফলতার দ্বারপ্রান্তে উড়তে জীবনের সঙ্গে করতে হয়েছে যুদ্ধ। দরিদ্র বাবার আনসার থেকে প্রাইভেটের যে টাকা দেয়া হতো সেই টাকা থেকে বাঁচিয়ে ক্রিকেট অনুসরণে খরচ করত দামাল ছেলে ইয়ং টাইগার রকিবুল হাসান। লেখাপড়ার চেয়ে খেলাধুলার প্রতি ছিল তার বেশি আগ্রহ। পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে করতে এক পর্যায় ঢাকার একটি ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তারপর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। একের পর এক সফলতা আসতে থাকে তার ঝুলিতে।
মঙ্গলবার রকিবুল হাসানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় প্রায় পরিত্যক্ত একটি ছোট্ট টিনের ঘর, একটি রান্নার ঘর আছে বাড়িতে। এলাকার প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ থাকলেও তাদের বাড়িতে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। বাড়িতে যাওয়ার রাস্তাটি প্রায় অকেজো। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় রফিকুলের পিতা ঢাকায় বাসা ভাড়া করে গাড়ির ড্রাইভারি করেন। তার এক ফুফু স্বামীসহ বাড়িতে থেকে বাড়ি পাহারা দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন