সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : ঈদের দিনের সোনালী সকাল মানেই নতুন পাঞ্জাবি গায়ে জড়িয়ে ঈদের নামাজ আদায় করা। আর ঈদের জামাতে শরিক হতে টুপি, জায়নামাজ ও নতুন পাঞ্জাবিতে আতরের খুশবু থাকতেই হবে। আবার কারো কারো চোখে সুরমা দেবার শখও ফুটে উঠে দিনটিতে। তাই ঈদগাহে যাওয়ার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ কিনতে ক্রেতাদের ভিড় লেগেছে কুমিল্লা নগরীর জায়নামাজ, টুপি ও সুগন্ধি আতর বিক্রির দোকানগুলোতে।
ঈদের নামাযের প্রস্তুতি হিসেবে সব বয়সী লোকজন নগরীর কান্দিরপাড়, রাজগঞ্জ মোগলটুলী রোড, টাউনহল সুপার মার্কেট, শাসনগাছা ও চকবাজার আলীয়া মাদ্রাসা রোডে আতর, তসবিহ, টুপি ও জায়নামাঁ বিক্রির দোকানগুলোতে গিয়ে নামাজের প্রয়োজনীয় উপকরণ কিনে নিচ্ছে। দুই তিনদিনের বৃষ্টিপাতের কারণে ফুটপাতে ভাসমান টুপি বিক্রেতাদের খুব একটা না যাওয়ায় ভিড় ভেড়েছে দোকানপাটে। নগরীর আতর টুপি দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারে সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান, ভারত, দুবাই, হল্যান্ড, ফ্রান্স এবং সিঙ্গাপুর থেকে মর্নিং কুইন, রেড রোজ, হাজরে আসওয়াদ, মুসকা আল উজির, আল রিহাব, সিলভার, আল ফারেজ, আরুণছা, কস্তুরি, থাউজেন্ট ফ্লাওয়ার, দরবার জান্নাতুল ফেরদাউস, মজুমা, লাক্সিআ, কাশ্মিরী, গোলে মেহেদি, গোলে লালা, আম্বর, সুরভী, জেওর, হাসনাহেনা, রজনীগন্ধা, মেষ্কেআম্বর, রোজ এ্যাঞ্জেল, জমজম, লাইলাতি, মমতাজ ও জাফরানসহ আরও নানা নামের বিদেশী আতরের আমদানি ঘটেছে। দেশির মধ্যে ম্যাগনেট, লিলি, কাঁচা গোলাপ, জেসমিন ও মদিনা আতর। বিদেশী আতর ২শ’ থেকে শুরু করে ৫হাজার টাকা দাম রয়েছে। আর ৩০ থেকে ২৫০ টাকার মধ্যে দেশি আতর পাওযা যাচ্ছে।
ঈদের আর দুই তিনদিন বাকি। তাই শেষ মুহূর্তে বৃষ্টিবাদলার মধ্যেও জায়নামাজ, টুপি বিক্রি জমে উঠেছে। এবারে এরাবিয়ান, পাকিস্তান, তুর্কি ও চায়নার জায়নামাজের চাহিদা বেশি। এরাবিয়ান জায়নামাজ প্রতিটি ৬শ’ থেকে ২হাজার টাকা, পাকিস্তানের জায়নামাজ ৪শ’ টাকা থেকে ১৫শ’ টাকা, চায়না জায়নামাজ ১৫০টাকা থেকে ৩শ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণ মানের টুপির দাম ৪০ থেকে ১শ‘ টাকা। উন্নত মানের টুপি পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ থেকে ৫শ’ টাকায়। এবারে দোকানগুলোতে সবচেয়ে বেশি চায়না টুপি স্থান পেয়েছে। এছাড়াও দেশীয় ব্রান্ডের মধ্যে আলিফ ক্যাপ, মুন ক্যাপ, মনজিল ক্যাপ, আল ফারুক কোম্পানির টুপি বেশি বিক্রি হচ্ছে। শিশু ও তরুণদের কাছে এবারে পুঁতি ও হাতের বা মেশিনের কারুকাজ করা নকশি টুপির বেশি পছন্দ। কুমিল্লা টাউনহল সুপার মার্কেটের আরব ষ্টোরের পরিচালক মাওলানা মো: ইমদাদুল হক আবদে রাব্বি বলেন, অন্যান্যবারের চেয়ে এবারে টুপি, জায়নামাজ বেশি বিক্রি হচ্ছে। আর আতরের মধ্যে সৌদি আরবের আল ফরেজ, মর্নিং কুইন, মুসকা আল উজির, হাজরে আসওয়াদ, ভারতের জান্নতুল ফেরদৌসের প্রতি ক্রেতাদের আকর্ষন বেশি।
এদিকে ঈদের আগে অন্তত দুইদিন বৈরি আবহাওয়া না থাকলে নগরীর কান্দিরপাড়, মনোহরপুর, রাজগঞ্জ, ছাতিপট্রি, গোয়ালপট্রি, কাপড়িয়াপট্রি, চকবাজার, তেলিকোনা, নুরপুর, টমছমব্রীজ, শাসনগাছা, পুলিশ লাইন, রেইসকোর্স এলাকার ফুটপাতে এবারও মৌসুমী বিক্রেতারা টুপির পসরা সাজিয়ে বসতে পারবে। ঈদে তারাও কিছু অর্থ উপার্জন করবে এমন আশা নিয়ে প্রায় দুই শতাধিক মৌসুমী টুপি ব্যবসায়ি শুষ্ক আবহাওয়ার আশায় পথ চেয়ে আছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন