বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সুবিধা বঞ্চিত নিম্ন আয় থেকে মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য সুলভমূল্যে পুষ্টিমান ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন করছে ‘অন্নসেবা’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। নগরীর কাজির দেউড়ীর কাজীবাড়ি গলির মুখে অবস্থিত এ খাবার দোকানে গড়ে প্রতিদিন সকালে নাস্তাসহ দুপুর ও রাতের খাবার গ্রহণ করছেন তিন শতাধিক মানুষ।
আবদুর রহিম নামের এক শ্রমিক বলেন, প্রতিদিন এ হোটেলে আসি দুপুর ও রাতের খাবার খেতে। কেন আসেন এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে অন্য হোটেলের চেয়ে কম দামে খাবার পাওয়া যায়। বড় হোটেলে খেতে গেলে খরচ বেশি। স্বল্প আয় করে বেশি খরচ করার সামর্থ নেই। তাই এ হোটেলে নিয়মিত খেতে আসি। আমার মতো স্বল্প আয়ের আরও অনেক লোক এ হোটেলে নিয়মিত খেতে আসেন।
অন্নসেবার নাস্তার আইটেমের মধ্যে রয়েছে চিকেন ও সবজি সমুচা, ওনথন, সিঙ্গারা, ডালপুরী, আলু চপ, ডিম চপ, কিমা চপ, পকেট পুরী, লুচি হালুয়া, পাস্তা, চটপটি, পাটি সাপটা, নারকেল পুলি, পাকন পিঠা ইত্যাদি। প্রতিদিন সকালে পাওয়া যায় পায়া স্যুপ, চিকেন স্যুপ, পরোটা, নান, বাটার নান, খবুজ রুটি। এছাড়া রয়েছে বিফ তেহেরী, চিকেন বিরিয়ানী, ভুনা খিচুড়ি, দই ও ফিরনি।
দুপুর ও রাতের খাবারের মধ্যে রয়েছে- সাদা ভাত, শাকসবজির মধ্যে ভাজি, কচুর লতি, ফুলকপি, বাঁধাকপি, আলুভর্তা, টমেটো, বেগুন, শিম ও বরবটি ভর্তা ডাল, বেগুন ফ্রাই, মাছ ভর্তা, শুটকি ভর্তা, মসুর ডাল, চনার ডাল, মুগ ডাল, ডিম ভাজি, ডিম কারি, মুরগি রেগুলার, রেজালা ভুনা, কলিজা ভুনা, গরুর গোশত, গরুর কলিজা ভুনা, রুই মাছ, তেলাপিয়া, নারকোলি মাছ, চইক্ক্যা মাছ, সরপুটি, পাঙ্গাস, লইট্টা, পোয়া, কৈ, কেচকি, চাপিলা, কোরাল, চিংড়ি, সুরমা, কাতাল, বাটা, শোল ও মাছের ডিম। ‘অন্নসেবা’য় স্পেশাল অর্ডারের মধ্যে রয়েছে সাদা পোলাও, চিকেন রোস্ট, মিক্সড ফ্রাইড রাইস, চিকেন ফ্রাই, চিকেন ওনিয়ন, কাচ্চি বিরিয়ানী, চিকেন বিরিয়ানী, দেশি মুরগি, চিকেন তেহেরী, বিফ তেহেরী, বিফ আকনী, মোরগ পোলাও, মাটন বিনিয়ানী। এছাড়া চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানী গোশত রয়েছে।
অন্নসেবার চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন ফারুক-ই আজম বীরপ্রতীক। ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবিদা সুলতানাসহ আরও সাত-আটজন পরিচালক রয়েছেন। আবিদা সুলতানা ইনকিলাবকে জানান, কিছু সমাজহিতৈষী মানুষের সমন্বয়ে সুবিধাবঞ্চিত এবং নিম্ন থেকে মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য অন্নসেবা চালু করা হয়েছে। এখানে ১৭-১৮ আইটেমের মেন্যু রয়েছে।
সর্বনিম্ন ৩৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকার মধ্যে খাবারের সুবন্দোবস্ত রয়েছে ঘরোয়া ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে। তিনি জানান, শুধু ব্যবসা নয়, সেবার মানসে এটি চালু করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে আবিদা সুলতানা বলেন, বেশি লাভ হয়না। যেটুকু লাভ হয়, তা পুনরায় ব্যবসায় বিনিয়োগ করা হয়। তিনি আরও জানান, আগামী এক বছরের মধ্যে আরও কয়েকটি শাখা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন