আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের খালদা জিয়ার মুক্তি সম্পর্কে বলেছেন, তাকে প্যারলে মুক্তি দেয়ার জন্য পরিবার থেকে বিভিন্নভাবে আবেদন এসেছে। তারা টিভির পর্দায় আবেদন করেন। আমি গতকাল সকালেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে খবর নিয়েছি। লিখিত কোন আবেদন আসেনি। এখন লিখিত আবেদন আসলেও এ আবেদন কারণসহ যুক্তিসংগত হতে হবে।
যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও প্যারল বিবেচনা করতে পারে না। সরকারও বিবেচনা করতে পারে না। বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে দলের লোকেরা বলে এক কথা, চিকিৎসকরা বলে আরেকটা। চিকিৎসকরা বলে তার স্বাস্থ্য নিয়ন্ত্রণে আছে। তার দলের লোকরা তাকে সুস্থ থেকে অসুস্থ বানিয়েছে। তার চিকিৎসা নিয়ে তারা যতটা ভাবছে, তার চেয়ে বেশি রাজনীতি করছে। গতকাল দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করিনা। খালেদা জিয়াকে জেলে নিয়েছে আদালত। তার বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকার দুর্নীতির মামলা দিয়েছে। আদালত এ মামলার বিচার করছে। তার দুর্নীতির মামলার মুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। সরকার এটি বিবেচনা করতে পারে না। বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক মামলা নেই। রাজনৈতিক মামলা থাকলে, সরকার তাকে প্যারলে মুক্তির বিষয়টি বিবেচনা করতে পারতো।
তিনি বলেন, সততা ও মেধার প্রতীক হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পরিবার। শিক্ষা দীক্ষায় এ পরিবার এগিয়ে। কিভাবে সৎ জীবন যাপন করতে হয় তার উদহরণ বঙ্গবন্ধুর পরিবার। এ পরিবারের সদস্যদের টাকা পয়সার প্রতি কোন লোভ নেই। শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় রাস্তা, ব্রিজ, বিদ্যুৎ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সব কিছু করেছেন। অন্ধকার টুঙ্গিপাড়াকে আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন। টুঙ্গিপাড়া এখন নবআলোয় উদ্ভাসিত। টুঙ্গিপাড়ার প্রতিটি ঘরে একজনকে চাকরি দেয়া হবে। টুঙ্গিপাড়াকে আরো অধুনিকভাবে সাজানো হবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের প্রথম পর্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দিন নাসিম, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল এমপি, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর্জা আজম ও এস.এম কামাল হোসেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইলিয়াস হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনের প্রথম পর্বের আলোচনা সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনিসুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধূরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আবুল বশার খায়ের, উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাসসহ আরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে শেখ আবুল বশার খায়ের ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মো. বাবুল শেখের নাম ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। এরপর তিনি টুঙ্গিপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ফোরকান বিশ্বাসের নাম ঘোষণা করেন।
এর আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বর্ণিল সাজে সেজে বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে সম্মেলনস্থলে এসে হাজির হন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন