শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্স

যার আয় থেকে পরিচালিত হয় নানা সামাজিক কর্মকাণ্ড

মোহাম্মদ আবদুল অদুদ | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৪:২১ পিএম

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের নরসুন্দা নদীর তীরে অবস্থিত একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ, যেটি বাংলাদেশের অন্যতম উপার্জনকারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত ।প্রতিষ্ঠানটির পুরো নাম- ‘পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্স।’

বিগত তিন মাসের ব্যবধানে এই মসজিদের দানবাক্সে জমা পড়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। টাকার সাথে আরও পাওয়া গেছে চাঁদ-তারা খচিত স্বর্ণ ও রুপার অলংকার।পাওয়া যায় বিভিন্ন বিদেশি মুদ্রা। মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা গেছে, প্রতি তিনমাস পরপর এই মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। প্রতিবারই পাওয়া যায় এমন বিপুল পরিমাণ দান।
প্রাইম ব্যাংক, কিশোরগঞ্জ শাখার ম্যানেজার মো. আজহারুল ইসলাম জানান, শহরের গুরুদয়াল কলেজের পশ্চিম পাশে অবস্থিত এ মসজিদটিতে টাকা-পয়সা, সোনা-রুপা ছাড়াও গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী ও ক্ষেতের নানা ফসল দান করে থাকেন মানুষ। তিনি জানান, পাগলা মসজিদ ইসলামি কমপ্লেক্সে প্রতিদিন আসর নামাজের পরই সাধারণত এ দানগুলো আসে। তবে প্রতি শুক্রবার বিকালে একজন ম্যাজিষ্ট্রেট আসেন প্রাপ্ত দানগুলোকে নিলামে বিক্রির জন্য। তিনি বলেন, এটি সারা দেশের মধ্যে সত্যি অনন্যসাধারণ বা বিরল দৃষ্টান্ত।

মসজিদের এমন বিপুল আয় থেকে শুধু যে নিজস্ব খাতের উন্নয়ন নয়; বরং এখান থেকে স্থানীয় এতিমখানা, মাদরাসা, জটিল রোগীদের চিকিৎসা সেবাসহ আর্থিক সাহায্য ও বিভিন্ন সামাজিক, মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টার দিকে জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। পরে সন্ধ্যায় গণনা শেষে মোট ১ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ টাকা পাওয়া যায়। এর আগে গত ২৬ অক্টোবর ওই দানবাক্সগুলো খোলা হয়। সে সময় দানবাক্সগুলো থেকে মোট ১ কোটি ৫০ লাখ ৮৪ হাজার ৫৯৮ টাকা পাওয়া যায়। সেই হিসেবে এবার ৬৬ হাজার ১০০ টাকা কম পাওয়া গেছে। এছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও ডলার, রিয়ালসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার পাওয়া গেছে। তবে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার অন্যবারের চেয়ে এবার পরিমাণে বেশি পাওয়া গেছে।

পাগলা মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হলে প্রতিবারই রীতিমতো সবার চোখ কপালে ওঠার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়। দানবাক্সগুলো থেকে একে একে বেরিয়ে আসতে থাকে ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার হাজার হাজার কচকচে নোট। পরে টাকাগুলো বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় গণনার কাজ। যা চলতে থাকে দিনব্যাপী।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, টাকা গণনার এই এলাহী কাণ্ড নিজ চোখে দেখার জন্য শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এ দিন মসজিদে ভিড় জমান। সাধারণ মুসল্লিদের অনেকের ধারণা, খাস নিয়তে এই মসজিদে দান করলে মনের আশা পূরণ হয়। তাই দূর-দূরান্ত থেকেও অসংখ্য মানুষ এই মসজিদে এসে দান করে থাকেন।
শুধু মুসলিমরাই নন অন্য ধর্মের মানুষেরাও মনের আশা পূরণের জন্য এখানে দান করে থাকেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন