ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত কুমিল্লার শ্রেষ্ঠ মানুষ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বীজবপন করেছেন উল্লেখ করে কুমিল্লা-৬ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেছেন, পাকিস্তান গণপরিষদে বাংলা ভাষার জন্য প্রথম দাবি উত্থাপনকারী বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে আমরা স্মরণীয় করে রেখেছি।
একসময়কার কুমিল্লা স্টেডিয়ামকে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়াম নামে নামকরণ করেছি। কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলায় বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়িটি মিউজিয়াম করার মতো কিছু নেই। আর বাড়িটিকে মিউজিয়াম করতে হবে এমন দাবির ব্যাপারে আমার জানা নেই।
কুমিল্লা নগরীতে ভাষা সৈনিক অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের জরাজীর্ণ বাড়িটি মিউজিয়াম করার দাবির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এমপি আ.ক.ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, কুমিল্লা বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, ওস্তাদ আয়াত আলী খান, শচীনদেব বর্মণ, নবাব ফয়জুন্নেছাসহ বহু গুণি ব্যক্তিদের কুমিল্লা। এরমধ্যে বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রæয়ারি পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে দাঁড়িয়ে বক্তব্যে বলেছিলেন, মিস্টার স্পিকার যে জাতির অধিক সংখ্যক লোক যে ভাষায় কথা বলে সেটাই সেই রাষ্ট্রের ভাষা হওয়া উচিত। পাকিস্তানের অধিক সংখ্যক লোক বাংলায় কথা বলেন, তাই বাংলাই হবে এখানকার রাষ্ট্রভাষা। সেদিন থেকেই কুমিল্লার বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি নিয়ে যুদ্ধ আরম্ভ করেন। পরবর্তী পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর ভাষা আন্দোলনের সময় কারাবরণ করেন। একমাত্র তিনিই প্রথম ভাষা আন্দোলনের জন্য প্রথম কারাবরণ করেন। ভাষা আন্দোলনের পথ ধরেই স্বাধিকার আন্দোলনে একটি যৌক্তিক পরিণতিতে বাংলাদেশ স্বাধীন করেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করি। আজকে বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি মিউজিয়াম করতে হবে এটা আমি ব্যক্তিগতভাবে সমর্থন করিনা।
এমপি বাহার বলেন, বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে ১৯৭১ সালে কুমিল্লার ঝাউতলার সেই বাড়ি থেকে পাকবাহিনী ধরে নিয়ে হত্যা করেছিলেন। আমি এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইতিহাসের অংশ হিসেবে বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছি। বিশ্বাস করি যারা জাতির কৃতি সন্তানকে সম্মান করেনা সেই জাতির সামনে কৃতি সন্তান সৃষ্টি হয়না। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের সম্মানে কুমিল্লা স্টেডিয়ামকে ওনার নামে নামকরণ করেছি। কেবল নামকরণই নয়, জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ২০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন অত্যাধুনিক এ স্টেডিয়ামে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলা অনুষ্ঠিত হতে পারবে।
আরেকটি বিষয় হলো, ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের ওয়ারিশরা যেহেতু বলছেন বাড়িটি তাদের পারিবারিক সম্পত্তি, এটিকে তারা মিউজিয়াম করবেন না। সেই ক্ষেত্রে আমি মনে করি, মিউজিয়াম করতে হলে তো কিছু জিনিস লাগবে। তাই আমি বলবো বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের ব্যবহার্য যা মিউজিয়ামে রাখার মতো কোন কিছু যদি কারো থাকে তাহলে এসব কিছু আমার কাছে পৌঁছে দেন আমরা এসব জিনিস জাতীয় জাদুঘরে রাখার চেষ্টা করবো। আর বাবু ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নাতনি আমাদের মহিলা এমপি এ্যারোমা দত্ত যেহেতু বলেছেন, তারাই বাড়িটি সংরক্ষণ করবেন এবং নতুন ভবন তুলে সেখানে একটি ফ্লোর তার দাদুর নামে উৎসর্গ করবেন। আমি এটি যৌক্তিক মনে করি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন