খলিলুর রহমান : ঈদের ছুটিতে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। ঈদের দিন থেকে গতকাল শনিবার পর্যন্ত জাফলং, বিছানাকান্দি, রাতারগুল, ড্রিমল্যান্ড পার্ক, জাকারিয়া সিটি, অ্যাডভাঞ্চার ওয়ার্ল্ড, লাক্কাতুড়াসহ বিভিন্ন চা বাগান এবং হজরত শাহজালাল ও শাহপরান (রহ:)-এর মাজারে হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। এছাড়াও এবার বিপুলসংখ্যক প্রবাসী দেশে ঈদ করেছেন। তারাও এখন সিলেটের নানা আকর্ষণীয় স্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
এদিকে, ঈদ-উল-ফিতরের একদিন আগে থেকেই বন্ধ হয়ে গেছে সিলেট নগরের জনপ্রিয় রেস্টুরেন্টগুলো। আর এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদে সিলেটে বেড়াতে আসা লোকজন।
জানা যায়, গত বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের পানসি, পালকি, পাঁচভাই, ভোজনবাড়ি, জলসিঁড়ি রেস্টুরেন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সবক’টি খাবারের প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। তাই অনেকে খাবারের জন্য একটার পর একটা রেস্টুরেন্ট খুঁজে বেড়ালেও কোন উপায় মিলেনি। তবে গতকাল থেকে নগরীর রেস্টুরেন্টগুলো চালু হয়েছে। গতকাল দুপুরে ঢাকা থেকে সিলেটে বেড়াতে আসেন একটি পরিবার। তারা পাঁচভাই, পানসি ভোজনবাড়ি শেষে উপায় না পেয়ে ফিরে যান।
নিরাপত্তাকর্মীরা জানান- সব কর্মকর্তা কর্মচারী ঈদের ছুটিতে চলে গেছেন। কিন্তু, এ পর্যন্ত (গতকাল সকাল থেকে দুপুর) অন্তত দুই শতাধিক কাস্টমার এসে ফিরে গেছেন। তবে নগরীর শাহ জালাল (রহ.) মাজার সংলগ্ন কয়েকটি রেস্টুরেন্ট খোলা রয়েছে। কিন্তু ওই রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের দাম অনেক বেশি বলে অভিযোগ করেছেন পর্যটকরা। ওই এলাকার আবুল কালাম নামের এক রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার বলেন, ঈদে কর্মচারীরা বাড়ি চলে গেছে। আর যারা আছে তাদের দ্বিগুণ বেতনে কাজ করাতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে খাবার বিক্রি করছি।
এদিকে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আধ্যাত্মিক রাজধানী খ্যাত সিলেটে আসেন মাজারভক্ত লোকজন। তারা হযরত শাহজালাল (রহ.) তাঁর ভাগ্নে হযরত শাহপরান (রহ.) সিলেটের প্রথম মুসলমান হযরত বোরহানউদ্দিন (রহ.) সহ অন্যান্য ওলি-আউলিয়ার মাজার জেয়ারত করেন।
শুধু মাজারে নয়, বিনোদন কেন্দ্রগুলোতেও পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। দর্শনীয় স্থানগুলোতে বাবা-মায়ের সঙ্গে বেড়াতে আসা শিশু-কিশোররা বাঁধভাঙ্গা আনন্দে মেতেছেন। আর তাদের বিনোদন ছুঁয়েছে বড়দেরও। তাইতো শিশুদের সঙ্গে নিয়ে আনন্দে মেতে উঠছেন তারাও। আবার অনেকেই ছুটে গেছেন প্রকৃতি কন্যা জাফলং, সুউচ্চ জলপ্রপাত মাধবকু-, জলারবন রাতারগুল, পান্তুমাই, বিছনাকান্দি, উৎমাছড়া, লোভাছড়া কিংবা স্বচ্ছ পানির লালাখালে। এছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যায় নগরীর কাজিরবাজারে সুরমা নদীর উপর নবনির্মিত দৃষ্টিনন্দন কাজিরবাজার সেতু, সুরমার তীরের ক্বীনব্রীজ এবং শহরতলীর চা বাগানগুলোতেও দেখা গেছে মানুষের ঢল। এদিকে, শোলাকিয়ায় দুর্বৃত্তদের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ জানান, ঈদের কয়েকদিন শান্তিপূর্ণ ও স্বাভাবিক রাখতে নগরী ও আশপাশ এলাকায় র্যাব-পুলিশসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন