দিদারুল আলম রাজু, খাগড়াছড়ি থেকে : পর্যটকদের ঢল নেমেছে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও সাজেক ভ্যালীতে। ঈদ, পার্বণ, প্রবরণা ও বৈসাবিসহ যে কোন উৎসব-আয়োজনে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে এখানকার পর্যটনকেন্দ্রগুলো। নাগরিক জীবনের ক্লান্তি অবসাদ দূর করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে পাহাড় ভ্রমণে আসেন দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। এবারের ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
প্রকৃতির চোখ ধাঁধানো নান্দনিকতার কারণে দেশের অন্যান্য সব জেলার তুলনায় অনেকটা ভিন্ন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি। ¯্রষ্টার আপন হাতে সৃষ্ট সবুজ বনরাজি, ঢেউতোলা উঁচু-নিচু অসংখ্য সবুজ পাহাড়ের দেয়াল আর নদী বিধৌত শহর, সবমিলিয়ে অপরূপ বেচিত্রের নৈসর্গিক ভূ-খন্ড এটি। তাইতো অবসর পেলেই দেশ-বিদেশের পর্যটকরা ব্যাকুল হয়ে উঠে বাংলার এই রূপসী কন্যার সান্নিধ্য পেতে, পাড়ি জমায় পাহাড়তলী খাগড়াছড়িতে। খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে জেলা শহরের অদূরে আলুটিলার তারেং পাহাড়, রহস্যময় সুড়ঙ্গ, রিছাং ঝর্ণা, জেলা পরিষদ পার্ক, ঝুলন্ত ব্রিজ, হেরিটেজ পার্ক, কৃষি গবেষণা কেন্দ্র, মহালছড়ি উপজেলায় সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে প্রায় ১’হাজার ফুট উচ্চতায় পাহাড়ের চূড়ায় দেবতা পুকুর, পানছড়ি উপজেলার অরণ্য কুঠির ও রাবার ড্যাম, মানিকছড়ির রাজবাড়ী, মাটিরাঙ্গার জলপাহাড় ও শতায়ুবর্ষী বটবৃক্ষ, দীঘিনালার তৈদু ঝর্ণা, হাজাছড়া ঝর্ণা ও শিবছড়ি পাহাড়, রামগড় চা বাগান এবং রামগড় লেক অন্যতম।
এছাড়াও খাগড়াছড়ির এতোসব নান্দনিকতার সাথে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে সাজেক ভ্যালী। সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্গত হলেও এর যোগাযোগ ব্যবস্থা খাগড়াছড়ির সাথে। সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে প্রায় ৩ হাজার ফুট উঁচু পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত সাজেক। বাংলাদেশ ও ভারতের মিজোরাম সীমান্তের কূলঘেঁষা পাহাড়ি এ জনপদের নয়নাভিরাম প্রকৃতি, পিচকালো আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ, পাহাড়ের ভাঁজে কালো মেঘের ভেলা আর নদী তীরের শুভ্র কাঁশফুল মন কেড়ে নেয় সবার। সাজেকের প্রকৃতি প্রতি ঋতুতেই রং বদলায়, বর্ষায় বসে নানান রঙের হাট। পাহাড় ঘেরা চাঁদনী রাত, পাহাড়ের বুক চিঁড়ে সকালের সূর্যোদয় আর দিনের আলোকে ম্লান করে সন্ধ্যায় পাহাড়ের কোলে সূর্যাস্তের দৃশ্য মুগ্ধ করে যে কাউকেই।
খাগড়াছড়ি জেলা শহরের আবাসিক হোটেল অরণ্য বিলাস এর ব্যবস্থাপক স্বপন দেবনাথ জানান, প্রায় দশদিন আগেই পর্যটন মোটেলসহ সরকারি-বেসরকারি হোটেল ও রেষ্ট হাউজগুলো আগাম বুকিং করে ফেলেছে দেশী-বিদেশী পর্যটকরা। আগামী আরও সাতদিন পর্যন্ত বুকিং রয়েছে সবগুলো আবাসন। এদিকে পর্যটকরা যেন প্রিয়জনদের নিয়ে নিরাপদে ভ্রমণ করতে পারেন সেই লক্ষ্যে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো. মজিদ আলী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন