বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

প্রধানমন্ত্রীর দেখা পাননি নাজমা-অপু কমিটি ভাঙছে যুব মহিলা লীগের

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০৩ এএম

শত চেষ্টার পরও আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাত পাননি বাংলাদেশ আওয়ামী যুব মহিলালীগের সভাপতি নাজমা আক্তার এবং সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল। পাপিয়াকান্ডের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন এই দুই নেত্রী। তবে তাদের প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাত দেননি, এমনকি গণভবনে তাদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে বলে গণভবনের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এই ঘটনার পর পরিস্থিতি ব্যাখ্যা এবং তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য যুব মহিলালীগের এই দুই নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্য একাধিক বার চেষ্টা করেছেন। গণভবন সূত্রে আরও জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই ব্যস্ত সময় পার করছেন। এইসব বিষয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার বিষয়, এসব নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী নন তিনি।
অপর একটি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী এই ঘটনায় খুবই ক্ষুদ্ধ্ব এবং প্রধানমন্ত্রী এই মুহুর্তে যুব মহিলালীগের কমিটি বাতিলের প্রক্রিয়া চলছে, তাই এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী এদের সাথে সাক্ষাৎ করবে না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। পাপিয়াকান্ডের পর যুব মহিলালীগের শীর্ষ দুই নেত্রী মঙ্গলবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় কাদের তাদের তীব্র ভৎসর্না করেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, যুব মহিলালীগের কমিটি বাতিল কিংবা এই দুজনকে সরিয়ে নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া এখন চলছে। ২০১৭ সালের ১১ মার্চ যুব মহিলা লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসেবে আর কয়েকদিন পরেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে নাজমা আক্তার ও অপু উকিলের নেতৃত্বাধীন এই কমিটির। তাই শিঘ্রই এই কমিটি ভেঙে সম্মেলন দেয়ার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্তও নেয়া হয়েছে। এর আগে ২০০৪ সালের ১৬ মার্চ প্রথম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। তখন থেকে প্রায় ১৬ বছর নাজমা আক্তার ও অপু উকিল এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
যেভাবে পদ বাগিয়ে নেন পাপিয়া: ২০১৪ সালে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল সম্মেলন করলেও নরসিংদীতে কমিটি দিতে পারেননি। পরে ঢাকায় ফিরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নরসিংদী জেলা কমিটি ঘোষণা করেন, তাতে পাপিয়াকে দেয়া হয় সাধারণ সম্পাদকের পদ। এক্ষেত্রে ঢাকা উত্তর যুবমহিলা লীগের সভাপতি ও তৎকালীন সংরক্ষিত আসনের এমপি সাবিনা আক্তার তুহিনের মাধ্যমে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলকে ম্যানেজ করে পদ বাগিয়ে নেন পাপিয়া।
নরসিংদীর নেতাদের অনেকের দাবি, তাদের বিরোধিতার মুখে ঢাকায় গিয়ে পাপিয়াকে পদ দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল। নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম হীরু গণমাধ্যমকে বলেন, ২০১৪ সালে সম্মেলনের মাঠে পাপিয়ার নাম প্রস্তাব করলে আমি বিরোধিতা করি। আমার সঙ্গে আরও কয়েকজন বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, পরে সম্মেলনকেন্দ্রে নাম ঘোষণা করতে গেলে আমি বলি– এখানে পাপিয়ার নাম কোনোভাবেই কমিটিতে রাখা যাবে না। পরে নাজমা ও অপু নরসিংদীতে কমিটি দিতে না পেরে ঢাকায় গিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি দেয়।
যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাজমা আক্তার গণমাধ্যমে বলেছেন, জেলা কমিটিতে পাপিয়া আগে কোনো পদে না থাকলেও তাকে পদ দিতে অনেকটা বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। নরসিংদীর একটি পক্ষ এই মেয়েকে পদ না দেয়ার জন্য আমাদের বলেছিল। আমি পাপিয়াকে পদ দেয়ার পক্ষে ছিলাম না। তার পরও শেষ পর্যন্ত দিতে হয়েছে। পাপিয়াকে অর্থের বিনিময়ে পদ দেয়া হয়েছিল বলে অভিযোগের বিষয়ে নাজমা বলেন, পদবাণিজ্য করে যারা পাপিয়াকে পদ দিয়েছে, তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক, এমন মেয়েদের জন্য যুব মহিলা লীগের সম্মান যায়।
কাদের আশ্রয়ে পাপিয়া এতদূর এগিয়েছে- এ বিষয়ে যুব মহিলা লীগের সভাপতি বলেন, সে কাদের সঙ্গে ওঠবস করে, তাদের খুঁজে বের করলেই সব পেয়ে যাবেন। আমাদের অনেকের সঙ্গে পাপিয়ার ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল, তাদের বের করুন।
তাকে পদ দেয়ার ক্ষেত্রে যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অপু উকিলের সমর্থন ছিল বলে সংগঠনটির বিভিন্ন নেতা জানিয়েছেন। অপু উকিল তা অস্বীকার করে বলেন, নরসিংদী আওয়ামী লীগ নেতাদের সুপারিশে পাপিয়াকে পদ দেয়া হয়েছিল।
যুব মহিলা লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনের সঙ্গে পাপিয়ার সখ্যের বিষয়টি বেশ আলোচিত সংগঠনের মধ্যে। পাপিয়ার নানা কাজে তুহিনের পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে, এমন অভিযোগও এসেছে। তবে তুহিন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, পাপিয়ার সঙ্গে তার সাংগঠনিক সম্পর্কের বাইরে কিছু ছিল না। আমি মহানগর উত্তরের নেত্রী, রাজনীতির কারণে আমার অনেকের সঙ্গে মিশতে হয়েছে। আমাদের কেন্দ্রীয় সম্মেলন আছে, সে কারণে দেশের সব জেলার নেত্রীদের সঙ্গেই আমার মিশতে হয়।

তুহিন দাবি করেন, ২০১৪ সালে পাপিয়া যখন নরসিংদী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হন, তখনও তাকে চিনতেন না তিনি। পাপিয়া ২০১৪ সালে নেতা হয়েছে, আর আমার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে ২০১৭ সালে। তা হলে কমিটিতে আসার ব্যাপারে আমার কোনো ভূমিকা থাকতে পারে না। আর জেলা কমিটি গঠনে মহানগরের কোনো হাত থাকে না।
তবে ২০১৭ সালে পরিচয়ের পর পাপিয়ার সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে জানিয়ে তুহিন বলেন, তার পর থেকে নিয়মিত আসত। আমি এমপি ছিলাম, তার বাসা আমার বাসা থেকে কাছে, নিয়মিতই আসত। এক বছর ধরে তাদের কোন যোগাযোগ নেই বলে জানিয়েছেন তিনি। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
আফজাল দেওয়ান আফজাল দেওয়ান ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৩৬ এএম says : 0
প্রতিটি নেতা আর সরকারি চাকুরীজীবি দের ব্যাংক তলব করলে বা বাসা বাড়িতে সার্চ করলে, যে পরিমাণ টাকা পাওয়া যাবে তাতে বাংলাদেশ কে নতুন ভাবে ভেঙ্গে সাজানো যাবে।
Total Reply(0)
মেহেদী ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৩৭ এএম says : 0
এ রকম যত পাপিয়া আছে তাদের জন্য এখনি ঘোষণা দেন তাদের রাজনৈতিক পদ অটোমেটিক বিলুপ্ত হবে যখন তার কুকর্ম প্রকাশ পাবে সার্কিটবেকারেরর মতো।
Total Reply(0)
Shahadat Hussain Shalascaux ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৩৮ এএম says : 0
রাবিশ. খবিশ আর নবিস..... যখন সরলরেখায় এক সাথে চলে তখন একজন যৌনদাসীকে গ্রেফতার করতেও রাস্ট্রের সর্বোচ্চ চেয়ারের দিকে আদেশের অপেক্ষায় হা করে তাকিয়ে থাকতে হয়। প্রেক্ষিতঃ পাপিয়া ভাইরাস=নবাব হেরেমের বাইজির চেয়ে একালের রাজনীতির পাপিয়ারাই ভয়ংকর। পাঁচ তারকা হোটেলে মাসের পর মাস সিনেমার হার মানানো দৃশ্যের চেয়ে অস্ত্র ও লাঠি হাতে বারবনিতাদের ভয়ংকর মক্ষীরানীর মতোন যৌন বানিজ্য একা চালায়নি পাপিয়া।একা ওঠে আসেনি এতো উপরে।যেমন সম্রাট এভাবে চালায়নি একা ক্যাসিনো!সম্রাট জেল খাটছে,যারা প্রশ্রয় শক্তি দিয়েছেন,দুহাতে টাকা নিয়েছেন তারা কেউ ধরা পড়েননি!পাপিয়ার হেরেমে মনোরন্জনে যে ক্ষমতাবানরা গেছেন তাদের এবার আইনের আওতায় আনা হোক।সর্বগ্রাসী রাজদূর্নীতির অভিশাপ থেকে দেশ মুক্ত হোক,সকল পাপিয়া দল থেকে বহিস্কার হোক।খদ্দের মদদাতা সহযোগিরা গ্রেফাতার হোক।বিচার হোক পাপিয়া সিন্ডিকেটের ক্ষমতাধরদের।(প্রবাদ বচন)
Total Reply(0)
Tuta Miha ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৩৯ এএম says : 0
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠিক কাজটি করছেন, ... বেশি বাড়িয়া গিয়েছে
Total Reply(0)
Zakir Hossain ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
উনারা পাপিয়ার গড মাদার ।তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের পালক কেটে দিয়াছেন এদের ও বিচার হবে নিশ্চয়।
Total Reply(0)
A.H. Khan Hannan ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৪০ এএম says : 0
পাপিয়ার গডফাদার যে অপু উকিল তাতে কোন সন্দেহ নাই তার ভারতের যে সব বিভিন্ন নামে একাউন্ট গুলো চেক করলে সব বেরিয়ে আশবে ,কারণ টক শো নেত্রীর জন্য তার যে অতি মাত্রায় ভালো জিকির আর্ট অপিশিয়াল দেশ প্রেম এটা বলার অপেক্ষা রাখে না ,
Total Reply(0)
Mini Karim ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৪২ এএম says : 0
আহারে কি কষ্ট , দুক্ষ পাইলাম এরা কারা
Total Reply(0)
salman ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৭:৩০ এএম says : 0
Apu Okil k dol theke BOHISKAR KORA uchit.
Total Reply(0)
Zafar imam ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১:৫৬ পিএম says : 0
Kick out nazma & opu ukil. Punished them.
Total Reply(0)
ম নাছিরউদ্দীন শাহ ১ মার্চ, ২০২০, ১:৪৭ পিএম says : 0
য়ার রক্তে বঙ্গবন্ধুর স্রোতধারা রক্তাক্ত শহীদের কন‍্যা। য়ার কঠোর কঠিন সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে বাঘ সিংহ ইদুরের চানা। য়ার চাহনি অঙ্গলির ইশারায় রাজনৈতিক নেতা কর্মি শৃংখলায় থাকতে বাধ্য। প্রশাসনের সব্বোঊচছ কর্মকর্তা হতে নিচু পযর্ন্ত বঙ্গবন্ধুর লৌহ মানবীর ব‍্যাক্তিত্ব ক্ষমতা দক্ষতার কাছে কাপেন। পাপিষ্ট পাপিয়াদের জন‍্য সমাজের সম্মানিত ব‍্যাক্তিরা ছরির কারনে চরম ভাবে লজ্জিত। আওয়ামীলীগ লজ্জায় সাগরে ভাসছে। রাজনীতি কারা করবেন রাজনৈতিক নেতার চরত্র পবিত্র হতে হবে। এখন তৃনমুল হতে জাতীয় নেতৃত্বে গভীরে পরিকল্পনা করে আওয়ামীলীগ নেতা ঠিক করতে হবে। চারিদিকে আবহওয়া সূবিদের মনে হচ্ছে না। রাজনৈতিক আকাশের কূনে মেঘের সুত্রপাত হচ্ছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন