সদাচরণের জন্য সহায়ক এক অভিনব রায় দিয়েছেন মাগুরার মূখ্য বিচারিক আদালতের হাকিম। পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সৃষ্ট সহিংসতার এক মামলার রায়ে ইব্রাহিম হোসেন (২০) নামে এক যুবককে বই পড়া, গাছ লাগানোসহ সদাচরণের জন্য সহায়ক ব্যতিক্রমী এ রায় দিয়েছেন আদালত। অভিযুক্ত আসামিকে এজন্য যেতে হবে না কারাগারের চার দেয়ালের ভেতর, সাজা খাটবেন তিনি নিজ বাড়িতেই। এজন্য মানতে হবে বিশেষ কয়েকটি শর্ত।
মঙ্গলবার বিকালে মাগুরার মূখ্য বিচারিক আদালতের হাকিম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান চাঞ্চল্যকর এই রায়টি দিয়ে ন্ডেপ্রাপ্ত আসামিকে প্রবেশন অফিসার মেহেতাজ আরা সালমার হাতে তুলে দেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামি ইব্রাহিম মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের মৃত হান্নান মোল্যার ছেলে। সে মহম্মদপুর আদর্শ টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ আমীর আলী জানান, প্রবেশনকালিন বিচারক ইব্রাহিমকে যে ৭ শর্ত পূরণের নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলো হলো- প্রবেশনকালিন দোষী সাব্যস্ত আসামি কোনরূপ অপরাধের সঙ্গে জড়িত হবেন না বা একই ধরণের অপরাধ আর করবেন না, শান্তি বজায় রাখবেন এবং ভাল ব্যবহার করবেন, আদালত এবং আইন প্রয়োগকারি সংস্থা তলব করলে যথাসময়ে উপস্থিত হবেন, কোনরূপ মাদক বা নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করবেন না, কোন খারাপ সঙ্গীর সঙ্গে আর মিশবেন না, প্রবেশনকালিন সময়ে আসামি মহান মুক্তিযুদ্ধের ওপর ২টি বই জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলো ও রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা একাত্তরের চিঠিসহ ইসলাম ও নৈতিকতার ওপর আরো ২টি বই পড়বেন এবং আগুনের পরশমনি সিনেমা দেখবেন, প্রবেশনকালিন আসামি পরিবেশের প্রতি দায়িত্ব¡শীল হিসাবে ২টি বনজ ও ৩টি ফলজ গাছ লাগাবেন।
মাগুরা জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সদস্যরা রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মূখ্য বিচারিক আদালতের হাকিম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান এ রায়ের মধ্য দিয়ে শুধু প্রবেশন সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসরণ করেননি, তিনি কারাদন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে জেলখানার অপরাধীদের সংস্পর্শ থেকে বাঁচিয়েছেন। মামলার দায়িতপ্রাপ্ত প্রবেশন অফিসার মেহেতাজ আরা সালমা বলেন, ছেলেটির বয়স অল্প। পড়াশোনা করছে। আশা করছি বিচারকের আরোপিত সব শর্তই ছেলেটি পালন করবে। আমি নিজেও তাকে সেই সহায়তা দেব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন