শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

রবি-এয়ারটেল মার্জারে গণশুনানি

প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে প্রথমবারের মতো দুই মোবাইল ফোন অপারেটরের একীভূত (মার্জার) করার বিষয়ে গণশুনানির আয়োজন করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। রবি আজিয়াটা এবং এয়ারটেল বাংলাদেশ একীভূত করার বিষয়ে আগামী ১৭ ফেব্রæয়ারি এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হবে। রবি ও এয়ারটেলের একীভূত করার বিষয়ে প্রতিষ্ঠান দুটির আবেদনের প্রেক্ষিতে তা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিটিআরসি এই গণশুনানির আয়োজন করেছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়। গত রোববার বিটিআরসির লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্সিং বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এসএম গোলাম সরোয়ার স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনায় বলা হয়, ওই গণশুনানিতে বিটিআরসির পক্ষ থেকে সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্বশাসিত সংস্থা, টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, বাংলাদেশের ভোক্তা সংঘ, সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীসহ আগ্রহী যে কোনো ব্যক্তি এতে অংশ নিতে পারবেন। গণশুনানিতে অংশগ্রহণে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে আগামী ৮ ফেব্রæয়ারির মধ্যে অনলাইনে (িি.িনঃৎপ.মড়া.নফ) নিবন্ধনের জন্য বিটিআরসির পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গণশুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহী অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে দৈবচয়নের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সংখ্যক অংশগ্রহণযোগ্য নির্বাচিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১৫ ফেব্রæয়ারির মধ্যে টেলিফোন, মোবাইল, ই-মেইলে গণশুনানির স্থান ও সময় জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া রবি আজিয়াটা এবং এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডের একীভূতের বিষয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য থাকলে তা লিখিতভাবে আগামী ১৭ ফেব্রæয়ারির মধ্যে বিটিআরসি চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
গ্রাহক সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের তৃতীয় ও চতুর্থ বৃহৎ মোবাইল ফোন অপারেটর রবি ও এয়ারটেল একীভূত হতে গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর বিটিআরসির কাছে আবেদন করে। গত বৃহস্পতিবারই রবি ও এয়ারটেল একীভূত করার বিষয়ে এই দুই প্রতিষ্ঠানের মূল কোম্পানি আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তি করেছে। রবি ও এয়ারটেল তাদের কার্যক্রম একীভূত করতে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে এই চুক্তি সই করে। চুক্তি অনুযায়ি একীভূত হওয়ার পর কোম্পানি দুটি রবি নামেই ব্যবসা চালাবে। একীভূত হওয়ার পর এর গ্রাহক সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ৪ কোটিতে। যা বাংলাদেশে মোট মোবাইল ফোন গ্রাহকের এক-চতুর্থাংশ।
চুক্তি সম্পাদনের ফলে শেয়ার মূলধনের পুনর্বিন্যাস হবে এবং এতে আজিয়াটা একীভূত সত্তার ৬৮ দশমিক ৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করবে। অন্যদিকে ভারতী ২৫ শতাংশ এবং বাকি ৬ দশমিক ৭ শতাংশ বর্তমানের অন্য শেয়ারহোল্ডার জাপানের এনটিটি ডকোমোর কাছে থাকবে। টেলিযোগাযোগ আইন অনুযায়ি দুটি কোম্পানির একীভূত করার চ‚ড়ান্ত অনুমোদন প্রদান করবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি।
রবির মালিকানা মালয়েশিয়াভিত্তিক আজিয়াটা গ্রæপের। অন্যদিকে এয়ারটেলের মালিক ভারতের ভারতি এয়ারটেল; তারা ওয়ারিদের ব্যবসা বাংলাদেশে কিনে নিয়েছিল। ২০১৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে মূলধনী ব্যয়ে ৭১০ কোটি টাকা বিনিয়োগসহ এ পর্যন্ত বাংলাদেশে রবির মোট মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ ১৫ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা। দেশজুড়ে ৮ হাজার ১১৯টি সাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ সেবা দিচ্ছে রবি, যার মধ্যে ৩.৫জি সাইটের সংখ্যা ২ হাজার ৪৫০টির বেশি। বাংলাদেশে ভারতি এয়ারটেলের বিনিয়োগ শুরু হয় ২০১০ সালে। তখন ওয়ারিদ টেলিকমের ৭০ শতাংশ শেয়ার কিনেছিল তারা। তিন বছর পর ওয়ারিদের কাছে থাকা বাকি ৩০ শতাংশ শেয়ারও কিনে নেয় সিঙ্গাপুরে ভারতি এয়ারটেলের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ভারতি এয়ারটেল হোল্ডিংস লিমিটেড। বাংলাদেশে ব্যবসা বাড়াতে তারা আশাবাদী হলেও শেষপর্যন্ত তা হয়ে ওঠেনি। বর্তমানে ৬টি মোবাইল ফোন অপারেটরের মধ্যে গ্রাহক সংখ্যার দিক থেকে এয়ারটেল চতুর্থ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির হিসাবে গত ডিসেম্বও শেষ নাগাদ বাংলাদেশে মোট মোবাইল ফোন গ্রাহক সংখ্যা ১৩ কোটি ৩৭ লাখ। এ সময়ে অপারেটর রবির গ্রাহক সংখ্যা ২ কোটি ৮৩ লাখ এবং এয়ারটেলের ১ কোটি ৭১ হাজার।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন