গর্ভাবস্থায় একজন মহিলা নানা সমস্যায় কষ্ট পেতে পারেন। এই সময় সঠিক চিকিৎসা খুব গুরুত্বপূর্ণ। অবহেলায় ক্ষতি হতে পারে মা এবং সন্তানের। তাই গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন যেকোনো নারী। এদের মধ্যে কারো গর্ভধারণের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে। আবার অনেক সময় আগে উচ্চ রক্তচাপের কোন ইতিহাস থাকেনা। গর্ভবতী হওয়ার পর ধরা পড়ে উচ্চ রক্তচাপ। তবে যাই হোক না কেন এই সময় দরকার সঠিক চিকিৎসা। নাহলে মা সহ অনাগত সন্তানের হতে পারে নানা রকম বিপত্তি।
উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোন লক্ষণ থাকেনা। এজন্য গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেক আপের মধ্যে থাকতে হবে। প্রতিবার চেক আপের সময় চিকিৎসক রক্তচাপ পরিমাপ করবেন। কারণ প্রথম দিকে অনেক সময় রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকতে পারে। পরে দেখা দিতে পারে উচ্চরক্তচাপ। রক্তচাপ যদি ১৪০/৯০ মি.মি. বা তার বেশি হয় তখন চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে। তবে একবার মেপেই কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ হয়েছে এরকম সিদ্ধান্তে আসা ঠিক হবেনা। অনেক সময় অস্থিরতা বা বিভিন্ন কারণে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। তাই একেবারে নিশ্চিত হয়ে ওষুধ শুরু করতে হবে। বাসায় অনেক সময় যিনি মাপেন তিনি ভুল করতে পারেন। তাই একজন চিকিৎসকের কাছেই রক্তচাপ মাপা উচিত।
গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ দেখা দিলে নিয়মিত রক্তচাপ মাপতে হবে। সাথে কিছু বিশেষ পরীক্ষা করতে হবে। হিমোগ্লােবিন, প্ল্যাটিলেট, ইএসআর, ইউরিক অ্যাসিড, বিলিরুবিন, এসজিপিটি, প্রস্রাবের পরীক্ষা, ইসিজি, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, আলট্রাসনোগ্রাফি ইত্যাদি করতে হবে। এই সময় একটা পরীক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্রাবে আমিষ বা প্রোটিন যাচ্ছে কি না তা অবশ্যই দেখা দরকার। এই সময় যদি পা ফুলে যায় তবে তাকে বলা হয় এক্লাম্পসিয়া। এই রোগ বেশ ভয়ংকর । সঠিক চিকিৎসা না হলে মৃত্যুরও ঝুঁকি থাকে।
গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ না হলে রোগীর প্রি এক্লাম্পসিয়া হতে পারে। এমনকি খিঁচুনিও হতে পারে। তাকে বলে এক্লাম্পসিয়া। এই অবস্থা আরও বিপদজনক। রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে ফুসফুসে পানি জমতে পারে। প্রেশার বেশি থাকলে হার্ট ফেইলিওর এবং কিডনি ফেইলিওর হতে পারে। হতে পারে লিভারের বিভিন্ন সমস্যা। উচ্চ রক্তচাপ থেকে স্ট্রোক বা হার্ট এটাকও হতে পারে।
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর সব ওষুধ কিন্তু গর্ভাবস্থায় নিরাপদ নয়। তাই অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ নিয়ম অনুযায়ী খেতে হবে। মাথাব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, পা বা শরীর ফুলে যাওয়া, পেটে ব্যথা, বাচ্চার নড়াচড়া কমে গেলে সাথে সাথে হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে।
গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ থেকে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা। হতে পারে বড় ক্ষতি । তাই সাবধান হতেই হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন