শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

অবিলম্বে শপিং মল বন্ধ করা প্রয়োজন

অবাধে মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রবাসীরা : মানছে না সরকারের নির্দেশ

রেজাউর রহমান সোহাগ | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে ওষুধ, সুপারশপ, কাঁচাবাজার ও নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া সারাদেশের সকল দোকান ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দোকান মালিক সমিতি। তাদের এই উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। অবশেষে তাদের মধ্যে এই বোধদয় হয়েছে যে, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে এটি প্রয়োজন। যদিও আরও অনেক আগেই এটি হওয়া উচিত ছিল। সিদ্ধান্ত আসা উচিত ছিল সরকারের পক্ষ থেকেই। কারণ বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যম হিসেবে এখন পর্যন্ত বিদেশ ফেরত প্রবাসীদেরকেই চিহ্নিত করা হয়েছে। যে কয়জন আক্রান্ত হয়েছে তাদের মাধ্যমেই। কিন্তু প্রবাসীদের যেন তাতে কিছু আসে যায় না। কোয়ারেন্টাইনে না থেকে দিব্যি তারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন মার্কেট আর শপিং মলে। ব্যস্ত থাকছেন কেনাকাটায়। ফলে দেশের মানুষ আরও ঝুঁকিতে পড়ছে করোনার। দেশের দুটি উপজেলাকে লকডাউন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। বন্ধ করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সিনেমা হল। কিন্তু যেখান থেকে করোনা ছড়ানোর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি সেই শপিং মল ও মার্কেট এখনো পর্যন্ত খোলা রাখায় বিস্মিত-হতবাক দেশের মানুষ। যদিও মালিক সমিতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ২৫ মার্চ থেকে, প্রশ্ন কেন আজ থেকেই হলো না, যেটা আরও কয়েকদিন আগেই হওয়া উচিত ছিল। যেখানে প্রতিটি ঘণ্টায় থাকছে আক্রান্ত ও সংক্রমণের শঙ্কা। সেখানে আরও দুটি দিনে সংক্রমণ বাড়বে না তার নিশ্চয়তা কী? আবার সরকারের সিদ্ধান্ত যেখানে প্রবাসীরা অমান্য করছে, সেখানে মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত সকল দোকান ও শপিং মল মানবে কিনা সেটি নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। কাজেই এক্ষেত্রে সরকারের অবিলম্বে শপিং মল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাস নাড়িয়ে দিয়েছে সারা পৃথিবীকে। এর প্রভাবে বিপর্যস্ত পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ। ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাস আঘাত হেনেছে বাংলাদেশেও এবং গতকাল পর্যন্ত মারা গেছে ২ জন এবং আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বিদেশ ফেরত প্রবাসীরাই এখন সবচাইতে বড় বিপদের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশে। তাদের মাধ্যমেই বাংলাদেশের মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে এবং হচ্ছে।

উন্নত দেশগুলোতেও করোনাভাইরাসের বিস্তার ও মৃত্যুর মিছিল দেখে ক্রমেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বাংলাদেশের মানুষ। সরকারও বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং গত কয়েকদিনে যেসব লক্ষ লক্ষ প্রবাসীরা বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন তাদেরকে সচেতন হয়ে নিজ নিজ বাসায় কোয়ারেন্টাইনে থাকার আহবান জানালেও অধিকাংশ প্রবাসীই সরকারের এই আহবানকে কোন গুরুত্বই দিচ্ছে না। বরং সরকারের নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রবাসীরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নির্বিঘেœ ঘুরে বেড়াচ্ছেন বাংলাদেশের এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা শতচেষ্টা করেও এই সব বেপরোয়া প্রবাসীদেরকে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। উল্লেখ্য, স্বভাবগত কারনেই বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম সচেতন। যে কারনে বিভিন্ন দুর্যোগে সরকারের সিদ্ধান্ত, অনুরোধ ও আহবান আমাদের অসচেতন মানুষরা খুবই তাচ্ছিল্যের চোখে দেখে। যে কারনে করোনার ভয়াবহতা দেশে ফেরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের মনে সেরকম প্রভাবই ফেলছে না। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ।

করোনাভাইরাস নিয়ে ক্রমেই সচেতনতা বাড়ছে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলেও। তবে যাদের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে সেই বিদেশ ফেরত প্রবাসীরাই সবচেয়ে বেশি উদাসীন। কোনরকম নির্দেশনা মানছেন না তারা। হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে ছুটির উৎসবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে, কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে। তবে গত কয়েকদিনে করোনার ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে এখন গ্রামে বা শহরে কেউই আর বিদেশ ফেরত ঐসব প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে তাদের বাসা-বাড়িতে আসতে দিচ্ছেন না। এই অবস্থায় দেশে ফেরত প্রবাসীরা তাদের পরিবার নিয়ে এখন সবচেয়ে বেশি সময় পার করছে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বড় বড় শপিংমল ও মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা করে। সারাদিন এরা শপিংমলগুলোতে ঘুরাঘুরি ও কেনাকাটা করছে। এদের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে করোনা ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের উচিত অবিলম্বে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের বড় বড় শপিংমল ও বিপনী বিতানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা। পাশাপাশি এই বিষয়ে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা করা। এটা এখন সময়ের দাবি।##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন