করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রভাব পড়েছে দক্ষিণ-পশ্চিমের পোল্ট্রি শিল্পে। এমনিতে মানুষ ঘরবন্দি হয়ে পড়ায় বেচাকেনা কমে গিয়েছিল। গত দুইদিন মারাত্মক পরিস্থিতি বিরাজ করছে শিল্পটিতে। গুজবে লোকজন পোল্ট্রি মুরগী, ডিম খাওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। ছোট ছোট খামারি বারবার বিভিন্ন ধাক্কায় মেরুদন্ড খাঁড়া করে দাঁড়াতে পারছে না।
গোটা অঞ্চলে সবচেয়ে বড় ডিম, মুরগি ও বাচ্চা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আফিল এগ্রো লিমিটেড। এর টেকনিক্যাল ম্যানেজার তোফায়েল আহমেদ জানান, প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ পোল্ট্রি মুরগীর বাচ্চা মারা যাচ্ছে। তিনি জানান, এসব বাচ্চা দ্রæততম সময়ে হ্যাচারি থেকে খামারে স্থান্তারিত না হওয়ায় মারা পড়ছে। হ্যাচারি মালিকরা বলছেন ৩২ টাকা খরচে উৎপাদিত প্রতিটি বাচ্চা ফ্রি দিলেও খামারিরা নিতে চাচ্ছেন না। আবার স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন প্রক্রিয়া তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ রাখা যাচ্ছে না। ফলে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা লোকসান গুনছেন হ্যাচারি মালিকরা।
আফিল ফার্মের তবারক হোসেন জানান, ডিম পাড়ানোর চার মাস পূর্বে একটি মুরগি প্রস্তুত করা হয়। এ মুরগি টানা দেড় বছর ডিম দেয়। প্রতিদিন বাচ্চা উৎপাদনের জন্য ২১ দিনের ডিম ইনকিউবেটর মেশিনে চাপাতে হয়। একদিন বয়সী বাচ্চা বিক্রি করা হয়। বাচ্চা উৎপাদন বন্ধ করতে হলে কমপক্ষে ২১ দিন অপেক্ষা করতে হয়। আবার উৎপাদন প্রক্রিয়া একবার বন্ধ করলে পুনরায় চালু করা অনেক ব্যয় সাপেক্ষ।
পোল্ট্রি শিল্পের সবচেয়ে বড় বিপণন কোম্পানি তামিম মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থাপক (মার্কেটিং) খন্দকার ইদ্রিস হাসান জানান, একদিন বয়সি প্রতিটি বাচ্চা উৎপাদন খরচ ৩২ টাকা হলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে এক টাকারও কম। তাও আবার ক্রেতা খুঁজে আনতে হচ্ছে। শুধু বাচ্চা নয় লেয়ার মুরগির ডিম ও পোল্ট্রি ফিডেও এর প্রভাব পড়েছে। লোকসানে ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বন্ধের অন্তিম পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আফিল এগ্রো লিমিটেডের পরিচালক মাহাবুব আলম লাবলু।
খুলনা বিভাগীয় প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আমিনুল ইসলাম মোল্লা জানান, করোনার প্রভাবে পোল্ট্রি শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, পোল্ট্রির মাংস ও ডিম খেলে কোন ক্ষতি নেই। বরং উপকার। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু লোক পোল্ট্রি নিয়ে যে অপপ্রচার চালাচ্ছে তার কোন ভিত্তি নেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন