চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের ও নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা এবং নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ সেলিম রেজা তাঁর পুলিশ বাহিনী নিয়ে যখন মাঠ পর্যায়ে দোকান-হোটেল বন্ধে এবং জনসাধারণের মাঝে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গলদঘর্ম হয়ে রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন; ঠিক সেই সময়ে কর্মস্থলে না থেকে দিব্যি নাকে তেল দিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নিজ বাড়িতে ঘুমোচ্ছেন নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা সুলতানা পাপিয়া। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান, মাস্ক বিতরণ করা হলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় কোন সামগ্রী পৌঁছেনি ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোতে। শুধু তাই নয় করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় করনীয় সম্পর্কে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টিতে কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে। ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোয় ব্যক্তিগত অর্থায়নে বিøচিং পাউডার সংগ্রহ করে কাজ করে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ। এ ব্যাপারে ২৭ মার্চ (শুক্রবার) নেজামপুর ইউনিয়নের কমিউনিটি মেডিকেল উপ-সহকারী নবীউল ইসলামের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নিজেদের অর্থ দিয়ে বিøচিং পাউডার কিনে ক্লিনিকে সেবা দান অব্যহত রেখেছি। একই অভিযোগ পাওয়া গেছে ফতেপুর ও কসবা ইউনিয়নের কমিউনিটি ক্লিনিক গুলোর কর্তাব্যক্তিদের পক্ষ থেকে। ২০১০ সালে এ্যাডহক ভিত্তিতে নন ক্যাডার হিসেবে মেডিকেল অফিসার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এ কর্মকর্তা গত ১৮-৬-২০১৯ খ্রি.তারিখে নাচোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত ইউএইচ এন্ড এফপিও হিসেবে পদায়ন করা হয় সুলতানা পাপিয়াকে। কিন্তু এই কর্মকর্তা তার অফিসিয়াল অনারবোর্ডসহ অফিসিয়াল বিভিন্ন কাগজপত্রে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত না লিখে তিনি কর্মকর্তা হিসেবেই জাহির করেছেন নিজেকে। সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ইউএইচ এন্ড এফপিওসহ সকল মেডিকেল অফিসারকে তাঁর কর্মস্থলে মেডিকেল ক্যাম্পাসে স্ব-স্ব নামে বরাদ্দকৃত কোয়াটারে থাকা বাধ্যবাধকতা থাকলেও ভারপ্রাপ্ত ইউএইচ এন্ড এফপিও সুলতানা পাপিয়া সকালে কর্মস্থলে হাজির হয়ে বিকেলের মধ্যেই কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তিনি চলাচল করেন নিজস্ব প্রাইভেট কারে। মাঝে মধ্যে অফিস না করারও অভিযোগ রয়েছে এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। কর্মস্থলে না পেয়ে মুঠোফোনে তাঁর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফিল্ডে আছেন বলে জানান। তিনি অফিসিয়াল কাজ ছাড়া হাসপাতালে বসে কোন রোগীও দেখেন না। এ কর্মকর্তা গর্ব করে বলেন, শুধু প্রশাসনিক কাজ করার জন্যই তিনি নাকি এসেছেন এ হাসপাতালে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় দেশের সরকারি সকল প্রশাসন যখন মাঠে কাজের মধ্য দিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন, ঠিক সেই মুহুর্তে নাচোল স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সুলতানা পাপিয়া নিজ বাড়িতে অবস্থান করে আরাম আয়েশ করছেন। সরকারী নিয়মানুযায়ী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদেরকে ২৪ ঘন্টা স্টেশনে থাকার নিয়ম থাকলেও সরকারের এ নিয়ম মানছেন না এই কর্মকর্তা। সরকারী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন দিবসেও তাঁকে পাওয়া যায় না কর্মস্থলে। নাচোল হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে তিনি সকল অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেছেন। এব্যাপারে নাচোল ইউএইচ এন্ড এফপিও সুলতানা পাপিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বীকার করে বলেন শুক্রবার ছুটির দিন তাই বাসাতে অবস্থান করছি। তাঁর বিরুদ্ধে করা অন্যান্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২৪ ঘন্টাই কর্মস্থলে থাকার নিয়ম রয়েছে, কিন্তু তিনি কেন এ নিয়ম মানছেননা তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সিভিল সার্জন ডাঃ জাহিদ এর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা সুলতানা পাপিয়াকে কর্মস্থলে থাকার জন্য একাধিকবার বলা হলেও কর্মস্থলে অনুপস্থিতির অভিযোগ আসছে। সেইসাথে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন