আমার ছিয়াত্তর বছর বয়সে বিশ্বব্যাপী এ ধরনের মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে আর দেখিনি। তারপরও এটাকে দুনিয়ায় ছোট বিপদ আর আখিরাতে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে বলে হুঁশিয়ার করে হকের দিকে ফিরে আসার তাগিদ দেয়া হয়েছে (সুরা আস সাজদা, আ: ২১)। কাজেই, আজ পিছনে কৃত সকল পাপের জন্য তওবা করি এবং সামনে কোনো গুনাহ না করার শপথ করে আল্লাহমুখী হয়ে যাই। তাহলে সুসংবাদ রয়েছে যে, পিছনের পাপ মাপ করে দেয়া হবে এবং কাজকর্ম সহজ করে দেয়া হবে (সুরা -মুহাম্মদ, আ-০২)। সেজন্য আলহামদুলিল্লাহ্। দশ দিন ছুটি। আফসোস না করি। ঘরে দশ দিনের নফল এতেকাফের নিয়াত করে ফেলি। কেননা দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত থেকে অনেকে রমজানে এতেকাফ করতে পারি না। তাই আল্লাহর দেয়া এ সুযোগ অবশ্যই কাজে লাগানোর চেষ্টা করা উচিত। আল্লাহর নিয়ামত মনে করে আমরা এ সময়কে নামাজে, কোরআন তালাওয়াতে ও রোজা রেখে কাটিয়ে দেই। হযরত রাসূলে আকরাম (সা.) রজব ও শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রেখেছেন। আমরা তাই করবো। এতে বর্তমান চরম আতঙ্কের মধ্যেও মনে এক প্রকার স্বর্গীয় প্রশান্তি বিরাজ করবে, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহপাক নিজেও সময়ের কসম খেয়ে অর্থাৎ অতিশয় গুরুত্ব দিয়ে ঈমানদার বান্দাদের নেক কাজ করতে, হকের ও সবরের বিষয়ে পরস্পরকে উপদেশ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন (সুরা আসর)। আমরাও নিজে হকের উপর তথা ইবাদত বন্দিগীতে মশ্গুল থাকব এবং সবর করে ঘরের মধ্যেই অবস্থান করব, কোনো অবস্থায় ঘরের বাইরে যাব না, আর অন্যদের এসব উপদেশ দিতে থাকব। আমরা উট বেঁধে রেখেই অর্থাৎ সমস্ত সতর্কতা অবলম্বন করেই আল্লাহপাকের উপর ভরসা করবো। সেক্ষেত্রে দেখা যাবে যে, দশ দিনে দুনিয়াবী কাজ যেটুকু করতে পারি নাই তার চেয়েও বেশি সুযোগ আল্লাহ পাকের তরফ থেকে পাওয়া গিয়েছে আর এ মহাবিপদও হয়তবা বাংলাদেশ থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে।
ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে আল্লাহপাকের নির্দেশ কোরাআন পড়, সুস্থ থাক এবং রাসূল (সা.) বাণীÑ কালজিরার তৈল মউত ছাড়া সব রোগের ঔষধ, তাও কোনো অবস্থায় ভুলবো না। এ রোগটা যেহেতু দেহের ভিতরে আঘাত করে, সেকারণে সূরা ইউনূসের ৫৭ নং আয়াতটি বেশি বেশি পড়ি, সেখানে অন্তরের শেফার কথা বলা হয়েছে এবং সাবান দিয়ে হাত ধৌত করার পর কালজিরার তৈল হাতে মালিশ করা হলে কোনো রোগ জীবাণু লেগে থাকতে পারে না।
আমরা কোনোভাবেই কোনো জাতি বা দেশবাসীকে দোষারোপ করবো না। বরং মন খুলে আল্লাহর বান্দা সমস্ত দুনিয়াবসীকে মাপ করে দেয়ার জন্য দোয়া করবো। এ মহাবিপর্যয় মানুষের হাতের কামাই বলা হয়েছে (সুরা রূম আয়াত: ৪১)। সেজন্য তওবা করি এবং বিশ্ববাসীদের মাপ করে দিয়ে আযাব উঠিয়ে নিয়ে রহমত নাযিল করার জন্য আল্লাহপাকের কাছে বেশি বেশি দোয়া করি। আমাদের সকলকে তৌফিক দান করুন।
লেখক: সভাপতি, মসজিদ সমাজ বাংলাদেশ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন