শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসা সামগ্রীর দাবিতে নার্সদের বিক্ষোভ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০২০, ২:১৬ পিএম

করোনা ভাইরাসের মহামারী ছড়িয়ে পরার পর যুক্তরাষ্ট্রের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না থাকায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী ও সরঞ্জামের ব্যবস্থার দাবিতে দেশটির নার্সরা বিক্ষোভ করেছেন।

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া, ফ্লোরিডা, ক্যানসাস, নেভাদা এবং টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে এই বিক্ষোভ হয়েছে। আমেরিকায় এরইমধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ৪৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

১৯টি রেজিস্টার্ড হাসপাতালে নার্সদের সংগঠন ন্যাশনাল নার্সেস ইউনিয়ন এ বিক্ষোভের আয়োজন করে। ইউনিয়ন বলছে, হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে সেবা দেয়ার জন্য তাদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন চিকিৎসা সামগ্রী ও সরঞ্জামের ব্যবস্থা করতে হবে। তারা বলছেন, ভাইরাস আক্রান্ত কোনো রোগীকে সেবা দিতে গেলে নার্সদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা অপরিহার্য।

গতকাল (বৃহস্পতিবার) অন্তত ছয়টি হাসপাতালের বাইরে নার্সরা বিক্ষোভে অংশ নেন। অবশ্য সেসময় অবশ্য তারা সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স রক্ষা করা।
ন্যাশনাল নার্সেস ইউনিয়নের মুখপাত্র ব্রাডলি ভ্যান ওয়াউস বলেন, “যখন নার্স ও রোগীরা সুরক্ষিত নন তখন আমরা নার্সদের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।“

তিনি বলেন, আমেরিকার সবচেয়ে নামিদামি হাসপাতালগুলোতেও নার্সদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নেই, এটি দুঃখজনক এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে নিরলসভাবে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে পরীক্ষার পর করোনা ধরা পড়ে মিসোরি রাজ্যের সেন্ট লুইসের সেন্ট ম্যারি হসপিটালের নার্স জুডি উইলসন গ্রিফফিন মারা যান। জর্জিয়ায় দু’জন স্বাস্থ্যসেবাকর্মী দায়িত্ব পালনকালে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৪৮ বছর বয়সী নারী কাজ করতেন ডোনালসলভিলে হসপিটালে এবং ৪২ বছর বয়সী অপর একজন পেডমন্ট নিউনান হসপিটালে কর্মরত ছিলেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ম্যানহাটনে ৪৮ বছর বয়সী একজন নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কয়েকদিন আগে করোনাভাইরাস ধরা পড়ার পর গত মঙ্গলবার তিনি মারা যান।

যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক, নার্স এবং হাসপাতালে কর্মরত অন্যরা বেশ কিছুদিন থেকেই ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রীর (পিপিই) অভাবের কথা বলে আসছেন। সুরক্ষা স্যুট, মাস্ক, গ্লোভস, হেড কভার প্রয়োজনের তুলনায় পাচ্ছেন না তারা। সে কারণে অনেক বেশি ঝুঁকির মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে তাদের।
সিটলের একটি হাসপাতালের নার্স ডন আলদিনজার বলেন, আমাদের হাসপাতালের প্রত্যেকেই নিজের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চটা দিয়ে কাজ করছে। আমাদের বিশ্বাস, এই সঙ্কট আমরা কাটিয়ে উঠতে পারবো।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিকিৎসকদের পিপিই সরবরাহ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ, তারা সুস্থ না থাকলে অন্যদের সেবা দেওয়া বাধাগ্রস্ত হবে।
এরই মধ্যে অবশ্য চিকিৎসক এবং নার্সদের মধ্যে কেউ করোনায় আক্রান্তের শঙ্কা তৈরি হলে জরুরি ভিত্তিতে কিছু রাজ্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জানা গেছে, ক্যালিফোর্নিয়ায় অন্তত ৩৫ জন ডাক্তার এবং নার্স করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। তবে অন্যান্য রাজ্যে বেশি পরিমাণে এটি পরীক্ষা করা হলে সেই সংখ্যা বাড়ার শঙ্কা রয়েছে।

ওয়াশিংটনেও চিকিৎসক এবং নার্সদের অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে সঙ্গত কিছু কারণে সেই সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত এবং মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন