করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তিকে নির্ভয়ে দাফন-কাফন করা যাবে বলে জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গতকাল সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, করোনাভাইরাসে মৃত ব্যক্তিকে নির্ভয়ে শরীয়তের নিয়ম অনুযায়ী দাফন-কাফন করুন। অন্যেরাও নির্ভয়ে নিজ নিজ ধর্মের নিয়মানুযায়ী সৎকার করুন।
বিবৃতিতে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরও বলেন, মৃত ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস বাঁচতে পারে না, তার বৃদ্ধিও হয় না। করোনায় মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে অন্য কোন ব্যক্তির শরীরে প্রসারিত হয় না। মৃত ব্যক্তিকে ধর্মীয় মতে সাবান দিয়ে গোসল করালে করোনার প্রসার বন্ধ হয়।
এর আগে মহামারী করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের কিট তৈরির কাঁচামাল চীন থেকে দেশে এসে পৌঁছেছে জানিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, কাঁচামাল চীন থেকে এসেছে। ব্রিটেন থেকেই আসার কথা ছিলো। সেটাও দু'য়েকদিনের মধ্যে দেশে পৌঁছবে। এই কিট দিয়ে ১৫ মিনিটে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল জানা যাবে। উৎপাদনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
আগামী ১১ এপ্রিল সরকারের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, বিএসএমএমইউ, আইইডিসিআর, আইসিডিডিআর’বিসহ যতগুলো জায়গায় করোনা পরীক্ষা হয়, সব জায়গায় কিট দেওয়া হবে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পুরোদমে কিট উৎপাদন শুরু হবে। তিনি বলেন, একই দিন সংবাদ সম্মেলন করেও সবার সামনে কিটগুলো দেখানো হবে। এরপর সরকার অনুমতি দিলে ১৫ তারিখ থেকেই আমরা পুরোদমে কিট সরবরাহ করতে পারবো। উৎপাদনে যাওয়ার আগেই এই কিটের বিশ্বব্যাপী চাহিদা তৈরি হয়েছে বলে জানান ডা. জাফরুল্লাহ। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো থেকে চাহিদার কথা জানিয়ে অনুরোধ করেছে।
তিনি আরও জানান, দেশের প্রাথমিক চাহিদার একটা অংশ আমরা এখনই পূরণ করতে পারব। আমাদের লক্ষ্য মাসে ২০ লাখ কিট উৎপাদনের। এজন্য দ্রুতগতিতে আমাদের প্ল্যান্ট বড় করতে হবে। ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ দরকার। সরকার বা যে কেউ অনুদান হিসাবে দিতে পারে। অথবা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ১০০ কোটি টাকার সম্পদ বন্ধক রেখে ৫০ কোটি টাকা স্বল্প সুদে ঋণ চাই। সরকার কোনো ব্যাংককে বলে বিশেষ ব্যবস্থায় ঋণের ব্যবস্থা করে দিতে পারে। তাহলে আমরা দেশের সম্পূর্ণ চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করতে পারব। এখন আমরা দ্রুত সরকারের সহায়তা চাই।
ঋণ না পাওয়াও বিষয়ে ডা. জাফরুল্লাহ ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, লোনের জন্য জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়েছি। তিনি আমার ফোন ধরেননি। সরকারের কিছু উচ্চপদস্থ জায়গায়ও যোগাযোগের চেষ্টা করেছি। তবে কোনো সাড়া পাইনি। আমি আপনাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি চাইলে স্বল্প সুদে ঋণ পাওয়া সম্ভব।
বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস মহামারী রূপ নেয়ায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বেশি বেশি পরীক্ষার পরামর্শ দিলেও অনেক দেশেই প্রয়োজনের তুলনায় টেস্ট কিটের স্বল্পতা রয়েছে। এর মধ্যেই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে জানানো হয়, তাদের গবেষকরা মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে পরীক্ষা করা যায় এমন কিট উদ্ভাবন করেছেন।
গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিটিক্যালসের প্রধান বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাঈদ জমিরউদ্দিন ও ড. ফিরোজ আহমেদ এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। ‘র্যাপিড ডট ব্লট’ নামের এই পদ্ধতিতে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য খরচ হবে মাত্র ৩০০-৩৫০ টাকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন