লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব। এক সময় জাপানে প্রচুর লিভার ক্যান্সার দেখা যেত। বর্তমানে কিন্তু জাপানে লিভার ক্যান্সারের রোগী কমে এসেছে। উন্নতমানের প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং সচেতনতার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে প্রচুর লিভার ক্যান্সারের রোগী দেখতে পাওয়া যায়। অথচ সামান্য একটু সচেতন হলেই ভয়াবহ এই রোগের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব।
লিভার ক্যান্সার দুই ধরনের
১। প্রাথমিক লিভার ক্যান্সার : যার উৎপত্তি লিভার থেকে।
২। সেকেন্ডারি লিভার ক্যান্সার : যার উৎপত্তি ফুসফুস, স্তন, পাকস্থলী, অন্ত্র এবং জরায়ু থেকে।
দুইভাবে লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব
১। হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধ করা।
২। অ্যালকোহল বা মদের হাত থেকে বেঁচে থাকা।
এখন আমাদের জানতে হবে কিভাবে হেপাটাইটিস বি এবং সি-এর হাত থেকে বেঁচে থাকা যায়।
হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি প্রতিরোধের উপায়
১। হেপাটাইটিস বি অথবা সি-তে আক্রান্ত রোগী রক্ত দিতে পারবেন না।
২। ডিসপোজেবল সিরিঞ্জ ছাড়া ইঞ্জেকশন গ্রহণ নিষেধ।
৩। শিরায় যারা মাদক গ্রহণ করে তারা একই সিরিঞ্জ ব্যবহার করে। এসব থেকে দূরে থাকতে হবে।
৪। যৌনমিলনে কনডম ব্যবহার করতে হবে।
৫। হেপাটাইটিস বি-এর ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। সবার এই ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত।
৬। ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিকস সবার ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত।
৭। হিমোফিলিয়া, থ্যালাসেমিয়া এবং যাদের ডায়ালাইসিস চলছে তাদের অবশ্যই ভ্যাকসিন নিতে হবে।
এলকোহল বা মদের হাতে থেকে বেঁচে থাকতে হবে। এলকোহল গ্রহণ করলে লিভার সিরোসিস এবং পরবর্তী পর্যায়ে লিভার ক্যান্সার হয়। এলকোহলের হাত থেকে বেঁচে থাকার উপায় :
১। সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
২। পারিবাকি মূল্যবোধ : এটি খুব গুরুত্বপূর্র্ণ।
শিশু প্রথম শিক্ষা পায় পরিবার থেকে। পারিবারিক শিক্ষা খুব গুরুত্বপূর্র্ণ।
৩। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা।
৪। আইন প্রয়োগ করা এবং সেগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন করা।
৫। মসজিদের ইমাম, শিক্ষক, নেতা, গণ্যমান্য ব্যক্তি সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে অন্যকে সচেতন করা।
৬। উৎপাদন ও পাচার বন্ধ করা।
৭। আসক্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
জাপান আজ লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধ করেছে আমাদের সেভাবেই সামনে অগ্রসর হওয়া উচিত। আশা করা যায়, আমরাও একসময় জাপানের মতো লিভারের ক্যান্সারের হার অনেক কমিয়ে আনতে পারব।
ষ ডা. মো. ফজলুল কবীর পাভেল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন