দেশ জুড়ে মাঠে-ঘাটে-উঠানে সোনালী ফসল। অপেক্ষা কেবলই গোলা ভরার। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কতটুকু পূরণ হবে কৃষকের সেই স্বপ্ন? বোরো ধান কাটা মৌসুম শুরু হলেও শ্রমিক না পাওয়ায় বাড়ছে সংকট। শঙ্কার কালো মেঘ জমেছে কৃষকের মনে। এ অবস্থায় কোথাও কোথাও ধান কাটতে নেমেছেন পরিবারের লোকজনই। শ্রমিক সংকটে বোরো ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা।
সুনামগঞ্জের দেখার হাওরের কৃষক সিদ্দিক মিয়া। অন্যের জমিতে করেছেন বোরোর আবাদ। সময় গড়িয়ে সেই ফসলে পাকও ধরেছে। তাইতো এমন মহামারিতেও ঘরে বসে নেই। শ্রমিক না পেয়ে পরিবার নিয়েই নেমেছেন ধান কাটতে। এধরনের অবস্থা দেশের অনেক জেলায়।
এদিকে আগামী ২৬ এপ্রিল থেকে ৬ লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান কেনা শুরু করবে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারে ধানের দাম ঠিক রাখতে এই লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়ানো দরকার।
সুনামগঞ্জের জেলার ১৫৪টি হাওরেই এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। সময়মতো এই ফসল গোলায় তুলতে না পারলে সঙ্কট আরও বাড়ার আশঙ্কা কৃষকদের। এ অবস্থায় কৃষকদের ১৩টি নির্দেশনার পাশাপাশি কর্মহীন মানুষদের সামাজিক দূরত্ব মেনে ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছেন ডিসি আব্দুল আহাদ।
এদিকে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হওয়ায় কৃষকের দাম না পাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে সরকারও। কৃষি মন্ত্রণালয় ৪৯ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। অথচ চলতি বছর বোরো চাষ হয়েছে ৫০ লাখ ৩৪ হাজার হেক্টর জমিতে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ২ শতাংশ বেশি। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ৬ লাখ টন, যা দেশের ইতিহাসের বোরো উৎপাদনের সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে। উৎপাদনের এই লক্ষ্যমাত্রাও গত বছরের চেয়ে বেশি।
চলতি বোরো মৌসুমের ফলন এবার দেশের ইতিহাসের সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। শ্রমে-ঘামে ফলানো ফসলের বাম্পার ফলন দেখে হাসি ফুটেছিল কৃষকের মুখেও। কিন্তু মাঠের সেই খুশি বাজারে গিয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে। এবারও ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। ফসল ফলাতে যে খরচ হয়েছে তা ওঠানোই দায় হয়ে পড়েছে। বাজারে ক্রেতা কম। স্থানীয় ক্রেতা যারা কিনছেন (মধ্যস্বত্বভোগী ব্যাপারী) তারাও উপযুক্ত দাম দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ কৃষকদের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন