আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সরকারি-বেসরকারি সব কলেজেই শিক্ষার্থীদের গতিবিধি ও আচার-আচরণের ওপর কঠোর দৃষ্টি রাখছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। খুলনার দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি-বেসরকারি কলেজ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্কুলগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এমনকি খুলনার বেসরকারি নর্দান ইউনিভার্সিটিতেও শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি ও নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পৃথক কমিটি গঠন করেছেন তারা। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবিরোধী সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে খুলনার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিদের উপস্থিতিতে সরকারি করনেশন বালিকা বিদ্যালয়ে সমাবেশে ডাক দিয়েছেন জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি জঙ্গি হামলায় কলেজ-ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলায় সরকারি নির্দেশে এসব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, জঙ্গিবাদ ইসলাম, দেশ ও জাতির শত্রæ। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাস হিসেবে খ্যাত। তবুও বাড়তি সতর্কতার কমতি নেই। ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের চেষ্টা করছি। শিক্ষক ও অভিভাবকসহ সকল শিক্ষার্থীর প্রতি সন্ত্রাসবিরোধী সচেতনতার বৃদ্ধির সহযোগিতার আহŸান জানিয়েছেন ভিসি।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর জানান, সার্বিক নিরাপত্তাবিষয়ক সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, নিরাপত্তা টহল জোরদার, বহিরাগতদের প্রবেশে নজরদারি বৃদ্ধি করা হবে। যত দ্রæত সম্ভব সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।’
খুলনা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুল আহসান বলেন, জঙ্গিবিরোধী সচেতনতায় খুলনায় সব শ্রেণী-পেশার মানুষের মধ্যে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলছে। ইতোমধ্যে মহানগরীর রাস্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আজ ১৮ জুলাই খুলনা মহানগরীর করোনেশন বালিকা বিদ্যালয়ে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক এবং সভাপতিদের নিয়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ইউনিয়ন ও উপজেলাতে সন্ত্রাসবিরোধী কমিটিকে আরো সক্রিয় করতে তাগিদ দেয়া হয়েছে।
সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটি নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ শিক্ষাঙ্গনের লক্ষ্যে ছাত্র-ছাত্রীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক মো: রবিউল ইসলামকে আহŸায়ক ও ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক নজরুল ইসলামকে মেম্বার সেক্রেটারি করে ৯ সদস্যের একটি স্টুডেন্ট মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। শুধু নর্দান ইউনির্ভাসিটি নয়; খুলনার সরকারি ৬টি কলেজসহ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বাড়তি নিরাপত্তা ও শিক্ষার্থীদের গতিবিধি নজরদারিতে আনা হয়েছে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো: আনিসুর রহমান বিশ্বাস বলেন, আগামী ২০ জুলাই সকাল ১০টায় খুলনা শহীদ হাদিস পার্কে কেসিসির উদ্যোগে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া কেসিসি পরিচালিত স্কুল-কলেজগুলোতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের জঙ্গিবিরোধী সচেতনতা এবং প্রচার-প্রচারণার আহŸান জানিয়েছি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শেখ মনিরুজ্জামান মিঠু জানান, মহানগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সাথে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের সন্ত্রাস-জঙ্গিবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধিতে শিক্ষার্থীদের মনিটরিং করতে বলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন