করোনা-মহাদুর্যোগে আরেক ভয়-আতঙ্ক। চোখ রাঙাচ্ছে আগাম ভারী বৃষ্টি। পানিবদ্ধতা ফের তাড়া করেছে ৭০ লাখ চট্টগ্রাম নগরবাসীকে। পানিবদ্ধতা ছাড়াও পাহাড়ধসের শঙ্কা-আতঙ্ক ভর করেছে মহানগরী ও শহরতলীতে। গতকাল বিকেল ৫টা নাগাদ চট্টগ্রামে বজ্রসহ মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত শুরু হয়। শনিবার ২৪ ঘণ্টায় হঠাৎ করে ১৯০ মিলিমিটার অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। যা বর্ষা আসার আগেই দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড।
প্রাক-বর্ষায় এ মাসে আরো ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস রয়েছে। অতিবৃষ্টির সঙ্গে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি যোগ হলে তলিয়ে যাবে বন্দরনগরীর বিশাল এলাকা। গত দু’দিনে আগ্রাবাদ, পতেঙ্গা, হালিশহর, বন্দর, পাহাড়তলী, সাগরিকা, মুরাদপুর, প্রবর্তক, পাঁচলাইশ, বাকলিয়া, চান্দগাঁও, চকবাজার, মোহরা, কালুরঘাট, চাক্তাইসহ নিম্নাঞ্চল হাঁটু কাদা-পানিতে ডুবে যায়।
এদিকে করোনা-কারণে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) উদ্যোগে ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ‘চট্টগ্রাম মহানগরীর পানিবদ্ধতা নিরসনে খাল-নালা পুনরুদ্ধার, সংস্কার-খনন, খাল পাড়ে রিটেইনিং ওয়াল, রাস্তা নির্মাণ ও নিচু ব্রিজগুলো ভেঙে উঁচু করা’র লক্ষ্যে চলমান ৫ হাজার ৬১৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার মেগাপ্রকল্পের কাজ মাঝপথে বন্ধ রয়েছে। তাছাড়া চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অপর এক প্রকল্পে নতুন খাল খননে ৮১৫ কোটি ২৫ লাখ ৪২ হাজার টাকার কাজ এক মাস আগে শুরু হতে না হতেই বন্ধ হয়ে গেছে ঠিকাদার কাজ বন্ধ রাখায়। চট্টগ্রামে পানিবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপর একটি প্রকল্পের বাস্তব কাজ এখনও শুরু হয়নি।
অন্যদিকে সংস্কার ও পুনঃখনন কাজ বন্ধ থাকায় চাক্তাই খালের পশ্চিম বাকলিয়াসহ বিভিন্ন পয়েন্টে গতকাল ঘুরে দেখা গেছে, পলিথিন, ময়লা-আবর্জনা, বর্জ্য ইত্যাদি জমে ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। খাল-ছরার বুবজুগে অনেক জায়গায় আগাছায় ছেয়ে গেছে। প্রায় মুছে গেছে খালের চিহ্ন। আবর্জনা উগলে পড়ছে খালপাড়ের রাস্তা অবধি। খাল-ছরার সাথে যুক্ত নালা-নর্দমাগুলোও ভরাট হয়ে গেছে
আগাম হঠাৎ অতিবৃষ্টির কারণে পানিবদ্ধতায় চাক্তাই খাতুনগঞ্জ, রাজাখালী, আছদগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকা ডুবে যেতে পারে- এই শঙ্কায় বিশেষত রোজার নিত্য ও ভোগ্যপণ্যের দোকানপাট, গুদামগুলোতে পানিতে সয়লাব হয় কিনা তা নিয়ে ব্যবসায়ীরা শঙ্কার কথা জানালেন।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির মহাসচিব এ এইচ মুজিবুল হক শুক্কুর গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, পানিবদ্ধতা নিরসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে খালের অনেকগুলো অপ্রয়োজনীয় পয়েন্টে এবং অপরিকল্পিতভাবেই স্লুইচ গেইট বসানো হয়েছে। এ কারণে চাক্তাই খালসহ অধিকাংশ খাল-ছরা, নালা-নর্দমা ভরাট হয়ে গেছে। তিনি পানিবদ্ধতা সমস্যা লাঘব করতে অবিলম্বে খালের অধিক ভরাট জায়গাগুলোতে জরুরিভিত্তিতে ড্রেজিং করার আহবান জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন