মঙ্গলবার সকাল ৯টা, কিছুক্ষণ পর পর একেক করে জড়ো হতে থাকে উদ্যোমী যুবকরা, হতে হতে ৫০ জনের একটি বিশাল দলে পরিণত। কেন তাঁরা জড়ো হল জানতে চাইলে অপকটে বলে দিলেন জমিনের পাকা ধান কাটবে তাঁরা। চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের রাবার বাগানের দক্ষিন দিকে কমবইল্ল্যা ঠিলার পাশে এ চিত্রটির দেখা মেলে সকালে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় রিকশা চালক মুহাম্মদ ইদ্রিছের পাকা ধান বিনা পারিশ্রমিকে কেটে দিয়েছে ওরা ৫০ জন। সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত তাঁরা ২ একর জমিনের পাকা ধান কেঠেছে। ২৫ জন করে দু-ভাগে ধান কাটা শুরু করেন সকাল ৯টা থেকে তারা। মাহে রমজানের রোজা রেখে এ ধরনের পরিশ্রম করে গরিবের ধান কেটে দেওয়ার মত মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। সমগ্র এলাকায় ঐ ৫০ যুবক প্রশংসিত হয়েছে সমানভাবে। সকালের হালকা রৌদ্র আর মাহে রমজানের রোজা ৫০ যুবককে দুর্বল করতে পারেনি। অদম্য গতিতে তারা ধান কেটে বাড়ি ফিরেছেন আনন্দ উল্লাসে। ধান কাটায় সম্পৃক্ত কয়েকজন জানান, ধান কাটতে পেরে আমাদের খুব ভাল লেগেছে। একটু আধটু কাদা থাকায় কষ্ট হলেও তা আমাদের কষ্টের মত লাগেনি।
সে অসহায় রিকশা চালক ইদ্রিছ জানান, আমি পাকা ধান গুলো কাটাবার জন্য দিনপাল্লা ১ জন শ্রমিক ১ হাজার টাকা করে বেতন দেব বলার পরও পাইনি। আল্লাহর রহমতে আমাদের যুবকরা আমার পাকা ধানগুলো কেটে দিল বিনা পয়সায়। বর্তমান করোনা ভাইরাসের ক্রান্তিকালে এর থেকে আর বড় নেয়ামত কি হতে পারে আমার জন্য। যেখানে ঘর থেকে মানুষ জন বের হচ্ছেনা সেখানে ওরা ৫০ জন আমার পাকা ধানগুলো কেটে দিল সেটি আমি ইদ্রিসের জন্য অনেক বড় পাওনা। আল্লাহ তাদের মঙ্গল করুন।
এদিকে রেলপথ মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান রাউজানের সাংসদ এবি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপির নির্দেশে ও তরুণ রাজনীতিক ফারাজ করিম চৌধুরীর বিশেষ উদ্যোগে লকডাউনের কারনে বিপর্যয়ে পড়া কৃষকদের ধান কাটা কর্মসূচি পালন করেছে অদম্য ৫০ যুবক। হলদিয়া ইউনিয়ন খেলোয়াড় সমিতি, আমিরহাট বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, যুব প্রত্যশা ক্লাবের নেতৃবৃন্দ যৌথভাবে ধান কাটা কর্মসূচি সফল ভাবে বাস্তবায়ন করেছেন।
জানতে চাইলে খেলোয়াড় সমিতির সভাপতি, হলদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক জিয়াউল হক চৌধুরী সুমন ও আমিরহাট বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন ইলিয়াছ উভয়েই জানান, আজকে একজন গরিব কৃষকের ধান কেটে দিতে পারায় নিজেকে গৌরবান্বিত মনে করছি, কারণ এ মুহুর্তে তিনি অসহায়। তাঁরা বলেন, কৃষক হচ্ছে দেশের সেরা মানুষ, কারন কৃষক ভাইয়েরা ফলন উৎপাদন করছেন বলেই আমরা খেতে পারছি। তাঁদের মতে কৃষকদের অবহেলার কোন সুযোগ নাই। তারা বলেন, আমাদের এমপি মহোদয় আর ফারাজ করিম চৌধুরীর নির্দেশনা মোতাবেক আজকের কর্মসূচী সফল ভাবে শেষ করলাম। এমপি মহোদয় আগামিতে যে কর্মসূচী পালনের নির্দেশ দেবেন আমরা সেটি পালন করে যাব ইনশাল্লাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন