রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

অণুনিবন্ধ

| প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২০, ১২:০৯ এএম

নিশ্চিত হোক কৃষকের অধিকার
মো. বশিরুল ইসলাম
বছর ঘুরে আবারও এসেছে খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষের অধিকার আদায়ের দিন মহান মে দিবস। এ দিবসটি আমাদের দেশের কৃষকদের জীবনে আর পাঁচ-দশটা দিবসের মতো মনে হয়। কারণ এ দিবস নিয়ে তাদের তেমন কোনো উচ্ছ্বাস নেই। তাদের কাছে আসে নেহায়েত ৩০ এপ্রিলের পরের দিন ১ মে, সেই হিসেবে। ভয়াবহ ভাইরাস করোনার মধ্যেও ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে উৎপাদন চাকা সচল রাখতে হচ্ছে তাদের। তারপরও আমাদের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না। ফসল ফলাতে গিয়ে একজন কৃষকের কী রকম শ্রম ও অর্থের প্রয়োজন হয় তা আমাদের জানা। এ দেশের কৃষকরা হরতাল করতে পারে না, তারা দুর্বল কণ্ঠ নিয়ে তাদের ন্যায্যমূল্য ও ন্যায্য অধিকারের আন্দোলনও জানে না। কৃষির ওপর নির্ভরশীল এ দেশে কৃষকদের দুর্দশা আর কতদিন চলবে- এ প্রশ্ন দেশের নীতিনির্ধারকদের কাছেই রইল। এখন সারাদেশের মাঠে মাঠে পুরাদমে বোরো ধান কাটা চলছে। এখন শুধু ধান কাটা নয়, উৎপাদন চলছে সবজি, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, পাট বপন বিশেষ করে আউশের বীজতলা তৈরিসহ ব্যাপক কর্মব্যস্ততা চলছে কৃষকদের। কিন্তু তাদের পরিশ্রম থেকে যতটুকু উৎপাদন ও আয় হওয়া উচিত, তা তারা পাচ্ছে না। করোনার প্রভাবে ক্রেতার অভাবে ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে অধিকাংশ সবজি। এছাড়াও কৃষকের ফসলের লাভের অংশ চলে যায় মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। ফলে অনেক সময়, বাম্পার ফলনের পরেও কৃষকের লাভ করা তো দূরের কথা উৎপাদন খরচই উঠে আসে না।
কৃষক খাদ্যশস্য উৎপাদন করে তা থেকে যদি সে লাভবান হয় তাহলেই উৎপাদন বাড়বে। তাই দেশে যথাযথ খাদ্যের সংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষক ও কৃষিকে বাঁচাতে হবে। আর তাদের বাঁচাতে হলে কৃষিতে ভর্তুকি বাড়াতে হবে এবং এ ভর্তুকি যাতে প্রকৃত কৃষক পায় তা নিশ্চিত করতে হবে। কৃষক বাঁচলে তবেই বাঁচবে দেশ, মিটবে মানুষের খাদ্যের অভাব। রাষ্ট্রকে নানামুখী অর্থনৈতিক ভর্তুকি এবং প্রণোদনা দিয়ে বাঁচাতে হবে আমাদের দেশের কৃষিকে, আর বাঁচিয়ে রাখতে হবে এদেশের উজ্জ্বল সন্তান কৃষকদের। নয়তো খাদ্যের তীব্র সংকটে নাজেহাল হবে দেশ। নয়তো পেঁয়াজের মতো হাহাকারে কাঁদবে দেশ। করোনাকাল ও করোনা-পরবর্তীকালের অর্থনৈতিক ভিত্তি হবে কৃষি। এ সময় যদি কৃষকের স্বার্থ রক্ষা না হয় তবে তার সার্বিক ফলাফল কোনোভাবেই ইতিবাচক হওয়া সম্ভব নয়। তাই কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।
লেখক: জনসংযোগ কর্মকর্তা, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন