হকার সায়েদ আলী কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা বাঁধের নিচে ৮ ছেলে মেয়ে নিয়ে বসবাস। সারাদিন হকারের কাজ করে যা আয় হতো তা দিয়েই চলতো তার সংসার। কয়েকবার নদী ভাঙনের পর আশ্রয় নিয়েছিলেন উপজেলার রমনা মাস্টার পাড়া বাঁধে।
পানি উন্নয়নের বোর্ডের নোটিশ ও উচ্ছেদ অভিযানে ভেঙে নিতে হয় থাকার ঘরটি। আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে সায়েদ আলী। কোন স্থান না থাকায় বাঁধের নিচে ছোট একটি ছাপরা ঘরে ৮ ছেলে মেয়েকে নিয়ে শুরু করেন কষ্টের দিন। রোজগারের একমাত্র পেশা ছিল হকার। কিন্তু করোনার থাবার একমাত্র আয়ের অবলম্বন এখন বন্ধ। তার কাজ ছিল জনসমাগম করে ভেজষ ওষুধ বিক্রি করা।
কিন্তু করোনার ঝড়ে এখন বন্ধ হয়েছে তার আয়ের একমাত্র উৎস। একমাত্র আয়ের উৎস বন্ধ হওয়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে বড় বিপাকে পড়েছে সায়েদ আলী। নেই আয় নেই জমানো টাকা বড় কষ্টে পাড় করতে হচ্ছে দিন। দিন কাটলেও রাতে ছোট একটি ঘরে গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে ছেলে মেয়েদের নিয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সায়েদ আলীর ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে শাহিনুরের বিয়ে হলেও, ঘরবাড়ি আর টাকা পয়সা না থাকায় উপযুক্ত বাকি ছেলে মেয়েদেরও বিয়ে দিতে পাচ্ছে না তিনি। মেয়ে শাহনাজ মাস্টার্স পাশ করে রয়েছে ঘরে বসে, অপর মেয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি পড়ছে। ছেলে সুমন এখন ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্র, সুজনের তেমন পড়াশুনা না করলেও ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতো কিন্তু করোনার কারণে সেও চলে এসেছে বাড়িতে। ছোট ছেলে সাগর ৭ শ্রেণির ছাত্র। মেয়ে নদী ৪র্থ ও দিঘি ১ম শ্রেণির ছাত্রী। ছেলে সুমন জানায় উচ্ছেদ অভিযানে সব ভেঙে নিতে হয়েছে। থাকার কোন জায়গা না থাকায় বাঁধের পাশেই থাকতে হচ্ছে।
রমনা ইউপি চেয়ারম্যান জানান, তাদের ভোট চিলমারী ইউনিয়নে তবে একটি মেয়ের ভোট রমনা ইউনিয়নে তবুও বিষয়টি আমি দেখবো। সায়েদ আলী কষ্টে আছে তা স্বীকার করে চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান গওছল হক মন্ডল বলেন সম্ভবত ১০ কেজি চাল দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, বরাদ্দ কম তাই হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ্ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন মানুষ যেন সমস্যায় না পড়ে সেদিকে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন