কারাগারগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রামণ প্রতিরোধের অংশ হিসেবে গতকাল রোববার ৩৮৫ জন বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। তিন থেকে ছয় মাস সাজা খাটা এসব বন্দিদেও গতকাল বিকালে মুক্তি দেয়া হয়। অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল আবরার হোসেন বলেন, ৩৮৫ জন বন্দি মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রামে অন্যান্যদের মুক্তি দেয়া হবে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একজন কর্মকর্তা জানান, কারাদন্ডের পাশাপাশি অর্থ দন্ড থাকায় কয়েকজন বন্দী কারাগার থেকে বরে হতে পারেননি। অর্থ দন্ড পরিশোধের পর তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। গত শনিবারও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে অর্থ দন্ড পরিশোধ করতে না পারায় চার বন্দীকে ছেড়ে দেয়া সম্ভব হয়নি। অর্থ দন্ড পরিশোধ সাপেক্ষে তাদেও ছেড়ে দেয়া হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রাপ্ত নথিতে জানা গেছে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারায় ক্ষমতাবলে ২ হাজার ৮৮৪ জন বন্দির অবশিষ্ট কারাদন্ড মওকুফ করা হয়। ছয় মাস থেকে এক বছর সাজাভোগকারী, তিন মাস ছয় মাস সাজাভোগকারী, তিন মাস পর্যন্ত সাজাভোগকারী বন্দিরা করোনাভাইরাসের প্রভাব জনিত কারনে এই সুযোগ পেয়েছেন। বন্দি মুক্তির অংশ হিসেবে শনিবার ছয় মাস থেকে এক বছর সাজাভোগকারী ১৭০ জনকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। রোববারের ৩৮৫জনসহ দুই ধাপে মুক্তি পান মোট ৫৫৫ জন বন্দি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা অনুযায়ী এসব বন্দিদের মুক্তির সময় জরিমানার অর্থ আদায় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কারা কর্মকর্তা বলেন, তৃতীয় ধাপে যারা মুক্তি পাবেন, এরা লঘু অপরাধের দায়ে কারাবন্দি। কারও কারও বিচার শুরু হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নাজিমউদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারের স্টাফ কোয়ার্টারে থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে বন্দিদের ডিউটি দেওয়ার সময় ১২ জন কারারক্ষী এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। নতুন কোনো বন্দি কারাগারে আনা হলে তাকে ১৪ দিন আলাদা রাখা হয় এবং তারপর অন্য বন্দিদের সঙ্গে রাখা হয় বলে কারা-কর্মকর্তারা জানান।
কারা কর্মকর্তারা জানান, দেশের মোট ৬৮ কারাগারে ধারণক্ষমতা ৩৪ হাজার ৯৪০ জন। এরমধ্যে বন্দী আছেন ৮৫ হাজারের বেশি। এই অবস্থায় কারাগারে সংক্রামণ শুরু হলে ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন্স) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল একেএম মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, কারাগারে ধারণক্ষমতার চাইতে বন্দি অনেক বেশি। করোনা সংক্রমণ বিস্তার রোধে আমারা জায়গা খালী করার উদ্দেশ্যে বন্দি সংখ্যা কিছুটা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ছোট-খাটো বা মাইনর অপরাধে যারা বন্দি বা জামিনযোগ্য ধারার মামলায় আসামী যারা তাদের মুক্তির প্রক্রিয়া চলেছে। বিষয়গুলো একটু সময় স্বাপেক্ষ ও একেবারেই সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়। আমাদের উদ্দেশ্য কারাগারে স্থানাভাব কিছুটা পুরণ করা অর্থাৎ কিছুটা জায়গা খালী করা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন