এবার কুমিল্লার তিতাস উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নে বয়স্ক ভাতা থেকে ৫শ´ টাকা করে উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ অভিযোগ আ.লীগের মনোনীত ইউপি চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. সালাহ উদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে । এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছে ভূক্তভোগিরা। বয়স্কভাতা থেকে চেয়ারম্যানের উৎকোচ আদায়, এমন খবরে নিন্দার ঝড় বইছে আজ উপজেলার সর্বত্র।
স্থানীয়রা জানান, ইউপি চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আহমদের একান্ত সহকারী মোবারক হোসেন (মোবা), চেয়ারম্যনের কথা বলে বয়স্কভাতার টাকা থেকে ওই ইউনিয়নের সকল বয়স্কভাতার কার্ডধারী থেকে পাঁচশত করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
আরো জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জাড়িয়ে আছেন ওই চেয়ারম্যান। কেউ ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। তাদের প্রশ্ন, কিভাবে এ করোনা সঙ্কটকালীন গরীব ও অসহায় বয়স্ক লোকদের থেকে ৫শ´ টাকা করে উৎকোচ নেয়? এই মহামারী অবস্থায় এলাকার অনেকেই সহযোগিতা করে আসছে। কিন্তু এ সময় কিভাবে সম্ভব হলো চেয়ারম্যনের ঘুষ নেয়া?
বয়স্কভাতা কার্ডধারী মনু মিয়া (৮০) জানান, খলিলাবাদ স্কুলের ভেতরে সরকার বয়স্কভাতার ৬ হাজার টাকা করে দিয়েছে, টাকা নিয়ে দরজায় আসার পরেই মোবারক হোসেন নামে এক লোক বলে ৫শ´ টাকা দাও। তিনি বললো কেন, তখন মোবারক হোসেন বললো চেয়ারম্যান সাহেব বলছে দিতে হবে। তখন বল্লাম কোন চেয়ারম্যান সে বললো সালাহ উদ্দিন চেয়ারম্যান তখন দিয়ে দিলাম।
কার্ডধারী রেজিয়া বেগম (৬৭) বলেন, অনেক দিন পর বয়স্কভাতার ৬ হাজার টাকা পাইছি এর মধ্যে চেয়ারম্যানের লোক মোবারক হোসেন দরজায় দাড়ানো, সে আমাকে ৫শ´ টাকা দিতে বলে আমি বললাম কেন? সে বলে সবাই দিছে তুমিও দিতে হবে, এটা চেয়ারম্যানের অর্ডার।
বয়স্কভাতা কার্ডধারী তোতা মিয়া (৭৮), জাহাঙ্গির মিয়া (৭০), ছাফর আলী (৭০), হরিপদ(৬৫), মিলন দাস(৭০), রানু বেগম(৭০), মাঙ্গলী দাসী(৬৫)সহ আরো অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, এই করোনা ভাইরাসের মহামারী অবস্থায় কিভাবে সালাহ উদ্দিন চেয়ারম্যান তার লোক দিয়ে আমাদের মতো অসহায় মানুষদের কাছ থেকে টাকা (ঘুষ) নেয়। সে আমাদের আরো সহযোগিতা করবে, তা না করে আমাদের মতো অসহায়দের কাছ থেকে ঘুষ নেয়, সরকার আমাদের যেই টাকা দেয় এগুলো দিয়েইতো আমাদের সংসার চলে, আমাদেরতো আর কোন কাজ করার বয়স নাই। যে আমরা কাজ করে খাবো। এটাই আমাদের শেষ সম্বল, এই টাকাটা থেকেও যদি চেয়ারম্যন সাহেব ৫শ´ করে টাকা নিয়ে যায়, তাহলে আমরা কীভাবে চলবো? আমরা-এর বিচার চাই। সারা বছরই আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। তবে আমাদের এতটা কষ্ট হয় নাই। এবার আমাদের খুব কষ্ট হয়েছে। এই করোনা মহামারী অবস্থায় অন্য এলাকার চেয়ারম্যানরা গরীবদের সহযোগিতা করে। আর আমাদের চেয়ারম্যান ঘুষ নেয়। আমরা এই ঘুষখোর চেয়ারম্যানকে আইনের আওতায় আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
টাকা আদায়কারী মোবারক হোসেন বলেন, আমি যা বলার ইউএনও স্যারের কাছে বলে এসেছি।
এ বিষয়ে মোবাইলে ইউপি চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন আহমদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামনে আসলে কথা হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার বলেন, বয়স্কভাতার টাকা থেকে নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ৫শ´ টাকা করে উৎকোচ নিয়েছে এমন অভিযোগ পেয়েছি এবং উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন