কক্সবাজারের রামু উপজেলায় চাল বরাদ্দে জেলা প্রশাসকের বৈষম্যমুলক আচরণের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রামু উপজেলা আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের শতাধিক নেতৃবৃন্দ। মঙ্গলবার (৫ মে) বিকাল চারটায় রামু চৌমুহনীস্থ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য, তুখোড় পার্লামেন্টারিয়ান, সাইমুম সরওয়ার কমলের বাড়ি রামু উপজেলায়। জনবান্ধব ও সাহসী এ নেতার জনপ্রিয়তায় ইর্ষান্বিত হয়ে জেলা প্রশাসন কমলের প্রতিপক্ষ বিএনপি-জামায়াত নেতাদের সাথে আতাঁত করে পরিকল্পিতভাবে রামু উপজেলায় তুচ্ছ পরিমান বরাদ্ধ দিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, এই উপজেলাটি বৃহৎ ও জনসংখ্যায় সর্বাধিক হওয়া সত্ত্বেও রামুতে বরাদ্ধের পরিমান অন্যান্য উপজেলার চেয়ে অনেক নগণ্য। করোনায় দিশেহারা মানুষের সাথে এমন বিমাতাসুলভ আচরণে পুরো রামুবাসী ফুঁসে উঠেছে।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, জেলায় আরো কম সংখ্যক জনসংখ্যার উপজেলায় ৩০০ মেট্রিক টন (৩ লক্ষ কেজি) এর উপরে বরাদ্দ দেয়া হয়। আর রামুতে জনসংখ্যা ও দারিদ্রতার হার বেশি থাকা সত্ত্বেও মাত্র ১১৯ মে. টন (১লক্ষ ১৯ হাজার কেজি) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা রামুবাসীকে ক্ষুদ্ধ করেছে।
গত (০৩ মে) কক্সবাজার জেলা প্রশাসন এক বিবৃতিতে বলেছে- রামুতে চাহিদা পত্র অনুযায়ী যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা সঠিক। এতে রামুবাসী মনে করে চাহিদাপত্র জেলা প্রশাসন সঠিকভাবে নির্ণয় করেনি। স্থানীয় চেয়ারম্যানরা ৩০ হাজার এর অধিক চাহিদাপত্র দিলেও জেলা প্রাশসন মাত্র ৮ হাজার অনুমোদন দিয়েছে। জেলা প্রশাসন চাহিদাপত্র ইচ্ছাকৃত মনগড়া তৈরী করেছে বলেও তারা বলেন। রামু বাসীকে ইচ্ছেকৃত বঞ্চিত করার সামিল।
বক্তারা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের ঘরে ঘরে ত্রান পৌছে দেওয়ার যে ঘোষনা দিয়েছেন তা জেলা প্রশাসকের বিমাতাসূলভ আচরণের কারনে রামুতে আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। রামুতে সরকারের ন্যায্য ত্রান না পাওয়ায় প্রতিটি এলাকার মানুষের মধ্যে যেমন ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে তেমনি সরকারের ভাবমৃর্তিও নষ্ট হয়েছে। তাই জেলা প্রশাসনের দেওয়া বিবৃতিটি রামু উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন সমূহ প্রত্যাখ্যান করেছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো উল্লেখ করা হয়, হোষ্ট কমিউনিটি হিসেবে কক্সবাজার রামুর জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কোটি টাকা বরাদ্দের হিসাব জানাতে হবে। কক্সবাজার সদর উপজেলা ও পৌরসভায় জেলা প্রশাসনের বরাদ্দের সাথে পৌর মেয়র ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের পাওয়া বরাদ্দের কোন মিল নেই।
গত ৩০ এপ্রিল ৫১.০১.২২০০.০০০.৩০.০০৪.২০.২৯৬ নং স্মারক মূলে কক্সবাজার জেলার জন্য ৪৫০ মেট্র্কি টন জিআর চাল বরাদ্দ হয়েছে। তাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার জন্য ১০৮ মেট্রিক টন, চকরিয়া উপজেলার জন্য ১০২ মেট্রিক টন, মহেশখালী উপজেলার জন্য ৫০ মেট্র্কি টন বরাদ্দ দেওয়া হলেও রামু উপজেলার জন্য মাত্র ১২ মেট্রিক টন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা চরম বিমাতাসুলভ।
উখিয়া-টেকনাফে কম সংখ্যক বরাদ্দ দেওয়া হলেও উখিয়া-টেকনাফের প্রতিটি ঘরে ঘরে অর্থাৎ হোষ্ট কমিউনিটির জন্য আর্ন্তজাতিক সংস্থা ডব্লিউএফপি ত্রান বরাদ্দের দায়িত্ব নিয়েছে। রামুর জনগণের জন্য কোন সংস্থার পক্ষ থেকে এরকম দায়িত্ব নেওয়া হয়নি।
এছাড়াও লিখিত বক্তব্যে, জেলা প্রশাসকের এমন বিমাতাসূলভ আচরনে রামু বাসীর কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে দাবি করে, এ বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য দেন, রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন সমূহ যথাক্রমে-আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, তাঁতী লীগ, মৎস্য জীবি লীগ, ওলামা লীগ, বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম লীগ, ছাত্র লীগ, বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ, বঙ্গবন্ধু ছাত্র ফেডারেশন ও বাস্তুহারা লীগের শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন