মহামারী করোনায় সবাই যখন ঘরবন্দি; যখনি চলছে কৃষি শ্রমিকের মহাসংকট, তখনই ফটিকছড়ি’র এক ইউপি চেয়ারম্যান হাতে নেন ব্যতিক্রমী কর্মসূচী। সেই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হচ্ছে- ‘গ্রামবাসীকে উদ্বুদ্ধ করে স্বেচ্ছাসেবায় ধান কাটা কর্মসূচী’।
জানা যায়, কৃষি শ্রমিকের সংকট কাটাতে ফটিকছড়ি উপজেলার লেলাং ইউপি চেয়ারম্যান সরোয়ার উদ্দিন চৌধুরী শাহীন উদ্যোগী হয়ে স্বেচ্ছাসেবী দল গঠন করে হাতে নেন ধান কাটা কর্মসূচী। ওই চেয়ারম্যানের আহবানে সাড়া দিয়ে সপ্তাহব্যাপী চলা এ কর্মসূচীতে লেলাং ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের সামাজিক সংগঠনসহ ছাত্র ও যুব সমাজ স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন। ৮ মে শুক্রবার কর্মসুচীর শেষ দিনে প্রায় হাজারো স্বেচ্ছাসেবী এ কর্মসুচীতে অংশ নিতে দেখা গেছে।
রায়পুর গ্রামের কৃষক আব্দুস শুক্কুর জানায়, ‘জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। ফলনও এবার ভালো হয়েছে। ক্ষেতের ধান পাকলেও শ্রমিক না থাকায় কাটতে পারছিলাম না। সকালে ক্ষেতে গিয়ে দেখি কাঁচি হাতে একদল লোক ধান কাটছে। কাছে গিয়ে দেখি চেয়ারম্যান ধান কাটা তদারকি করছে। চেয়ারম্যানকে দেখে আমি অবাক হই।’ এ সময় চেয়ারম্যানের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ওই লেলাং ইউপি চেয়ারম্যান সরোয়ার উদ্দিন শাহীন জানান, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার কাজ হল দুঃসময়ে সাধারণ মানুষের পাশে থাকা। দূর্যোগপূর্ণ এ সময়ে কৃষি শ্রমিকের মহাসংকট চলছে। আমার এলাকার গরীব কৃষককূল পাকা ধান গুলো কাটতে পারছে না। এ কথা চিন্তা করেই আমি স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে ধান কাটা কর্মসূচী হাতে নিয়েছি। এভাবে কৃষকের যে কোনও সংকটে আমরা কাজ করে যাবো। আমার এলাকার সকল সামাজিক সংগঠন, ছাত্র ও যুব সমাজ মিলে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখেই আমার আহবানে সাড়া দিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডে কৃষকের ধান কাটার সপ্তাহব্যাপী এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আমরা কৃষকের প্রায় দুই শো বিঘা জমির ধান কাটা সম্পন্ন করেছি।
প্যানেল চেয়ারম্যান সরোয়ার হোসেন ও আজম উদ্দীন জানান, প্রায় এক হাজার থেকে এগারো শত বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ চেয়ারম্যানের আহবানে সাড়া দিয়ে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল অবধি প্রতিটি ওয়ার্ডে ধান কেটে দিয়েছে কৃষকদের।
এভাবে যদি প্রতিটি ইউনিয়নে কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়; তবে দেশের কৃষি খাতে বিরাট পরিবর্তন আসবে। লোকমুখে কথা- এমন চেয়ারম্যান যদি সব ইউপিতে হতো! তাইলে দেশে কৃষি বিপ্লব ঘটতো!!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন