প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের মধ্যেও দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানীতে অবস্থিত সিউল সেন্ট্রাল মসজিদ কর্তৃপক্ষ এবছর রোযাদারদের ইফতারি করানোর জন্য ভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশনের ইফতার অনুষ্ঠানটি গতকাল ১২ মে উসমানিয়া রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুসল্লিরা মসজিদ গেট থেকে কুপন সংগ্রহ করে রেস্টুরেন্টে গেলেই নিয়মমাফিক ইফতার করার সুযোগ পান। উসমানিয়া রেস্টুরেন্ট ছাড়াও বোম্বে গ্রীল রেস্টুরেন্ট, কায়রো বিবিকিউ ও ফরেন রেস্টুরেন্টের মধ্যে পছন্দসই যে কোন একটিতে গেলেই পাওয়া যায় ইফতার। ইফতার আইটেমের মধ্যে ছিল খেজুর, চিকেন বিরিয়ানি, তরল দধের প্যাকেট ও কলা প্রভৃতি। গতকাল সেখানে ইফতারের সময় ছিল ৭.৩৫ মিনিট। মুসল্লিরা ৭টায় মসজিদের গেট থেকে কূপন সংগ্রহ করে রেস্টুরেন্টে যান। সেখান থেকে খাবার সংগ্রহ করে বাসায় গিয়েও ইফতার করতে পারেন। কেউ আবার সেখানেও খান। তবে কোন ভীড় যেন না হয়, সেব্যাপারে কতৃপক্ষ খুবই সতর্ক ও সচেতন থাকেন।
কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ওমারু ইয়াংজু পার্ক একজন কোরীয় নাগরিক।তিনি নিজেও একজন নওমুসলিম। ইউটিউবে ইসলামের নানা বিষয় দেখে এবং আল-কুরআনের মুজেজায় দিন দিন ইসলাম ধর্মের প্রতি সেখানকার মানুষের আগ্রহ বাড়ছে, সেভাবেই তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। কিন্তু ইসলাম ধর্ম ও মুসলিমদের আচরণে তফাৎ দেখে কেউ কেউ আবার হতাশও হচ্ছেন। এমনই একজনের নাম জেকি জিয়াং। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তোমরা তো রোজার সময়ে আল্লাহর ভয়ে কিছু খাও না। তাহলে তো তোমাদের দেশে চুরি ও দুর্নীতি হয় না। তাহলে তো সেখানে কোনো পুলিশও লাগে না। বাস্তবে তো ফল দেখা যায় উল্টো। আর তা দেখেই তারা হতাশ। কোরিয়ায় আফ্রিকা মহাদেশের কিছু কিছু দরিদ্র রাষ্ট্রের নাগরিকরা একটু হাঙ্গামা করেন। ফলে বদনাম হয় সবার। কিন্তু সিস্টেমের কারণে এবার কোন সমস্যা হয়নি বলে জানান আয়োজকরা।
আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশি প্রবাসী ড. কাজী নজরুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে জানান, করোনাভাইরাসের কারণে এবার ব্যাপকভাবে লোকসমাগম হয়নি। আর গতকালের মতো প্রতিদিনই আমাদের এই কর্মসুচি চলে কোরিয়া মুসলিম ফেডারেশনের উদ্যোগে। তিনি বলেন, এখানে মানুষের মধ্যে ইসলাম সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ছে। মাত্র কয়েক হাজার মুসলিম এবং প্রায় ১৫টি মসজিদের মধ্যে সিউল সেন্ট্রাল মসজিদই এদেশে মুসলিমদের প্রাণকেন্দ্র এবং প্রবাসী মুসলিমের সংখ্যাই এখানে বেশি। ক্রমান্বয়ে ইসলাম ধর্মের প্রতি মানুষের উৎসাহ এবং ধর্মের অনুশীলন বাড়ছে বলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান। ইসলামের আলোকে জীবন গঠনের বাস্তব চিত্র প্রদর্শন করতে পারলে নিকট ভবিষ্যতে কোরিয়ায় মুসলিমের সংখ্যা অনেক বেড়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন