মহান ও নিবেদিত পেশা হিসেবে শিক্ষকতা সর্বজন স্বীকৃত। মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবেই মনে করা হয় শিক্ষকদের। পাঠদানে আত্ম-নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিহিত থাকা সুপ্ত মেধা জাগ্রত করা, দুঃস্থ ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের নিজের অর্থ ব্যয়ে দেশ সেরা হিসেবে গড়ে তোলা শিক্ষকও দেশে বিরল নয়। এ জন্যই সমাজে শিক্ষকরা সবচেয়ে বেশি সম্মানিত, শিক্ষার্থীরাও যুগে যুগে স্মরণ রাখেন। বর্তমান সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার।
কিন্তু করোনা ভাইরাসের প্রভাবে গোটা বিশ্ব আজ লকডাউন, বাংলাদেশও এর মরণ ছোবলে ক্ষত বিক্ষত, দেশের সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থার অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে, এখনও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ কার যায় নি, এইচ এসসি পরীক্ষা গ্রহন করা সম্ভাব হয় নি। এই করোনার মাঝে একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে, প্রশ্ন পত্র তৈরী করে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিনা খরচে শিক্ষার্থীদের বাসায় বাসায় পৌঁছে দিয়েছেন এবং অভিভাবকের উপস্থিতে পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা, উত্তর পত্রগুলি সংগ্রহ করত: যথারীতি মূল্যয়নের পর ফলাফল প্রদান করে করোনার মাঝে শিক্ষার্থী পাঠদান প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি হলেন, রাজশাহী শহরের লক্ষীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক মোঃ ফারুক হোসেন। এ মহতি উদ্ভাবনী কার্যক্রমের জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মহোদয় তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিনন্দন পত্র তুলে দিয়েছেন। লিখা রয়েছে, মো.ফারুক হোসেন, অভিনন্দন আপনাকে। এই নামটির সাথে এখন হয়তো কেউ কেউ পরিচিত। তিনি লক্ষ্মীপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, রাজশাহীর একজন সহকারী শিক্ষক। ছাত্রীদের প্রতি তার দায়িত্বশীলতা ও আন্তরিকতায় তাকে সর্বমহলে পরিচিত করে তুলেছে।
ইতোমধ্যে তার উদ্ভাবনী কার্যক্রম নিয়ে "স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকাসহ অন্যান্য অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং এনটিভি র রাতের সংবাদে একটি নিউজ দেখানো হয়েছে। এই মহামারী করোনা কারনে যখন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে তখন তিনি লকডাউনের মধ্যে প্রশ্নপত্র তৈরী করে ছাত্রীদের বাসায় নিজে গার্ডিয়ানদের হাতে তুলে দিয়ে বলছেন, তারা যেন বাসায় বসে থেকে এই পরীক্ষা নেয়,পরে তিনি নিজেই উক্ত উত্তরপত্র সংগ্রহ পূর্বক যাচাই করে ফলাফল জানিয়ে দিচ্ছেন তাও আবার কোন আর্থিক সুবিধা ছাড়াই।
তার এই মহতী উদ্ভাবনী কার্যক্রমকে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড পরিবার স্বাগত জানাই এবং তাকে সকল প্রকার ডিজিটাল সুবিধাদি প্রদানের অঙ্গীকার করে, সেইসাথে মাননীয় চেয়ারম্যান মহোদয় তার হাতে তুলে দেয়া একটি অভিনন্দন পত্র।
উক্ত সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জনাব মো. আরিফুল ইসলাম, কলেজ পরিদর্শক জনাব মো.হাবিবুর রহমান, বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর দেবাশীষ রঞ্জন রায় এবং উপ-সচিব মো.ওয়ালিদ হোসেন।
সভায় সহঃশিক্ষক মো.ফারুক হোসেন সহ তার সকল ছাত্রীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করা হয়। অনেক অভিভাবক, শিক্ষার্থী, সচেতন মহল বলছেন, অন্যান্য শিক্ষকগণ করোনাকালিন সময়ে ফারুক স্যারকে অনুকরণ করলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, প্রতিষ্ঠান উপকৃত হবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন