শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ বাংলাদেশে আঘাতের আশঙ্কা

গতিপথ ও দিক পরিবর্তন করছে : সমুদ্রে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ বেড়ে ঘণ্টায় ২২০ কিলোমিটার : উপকূলে আঘাত বুধবার

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ১৮ মে, ২০২০, ২:১৪ পিএম

বঙ্গোপসাগরে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ ভারতের ওড়িশা-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশে আঘাতের আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি সরাসরি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাতের আশঙ্কাও করছেন আবহাওয়াবিদগণ। সে ক্ষেত্রে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী উপকূলীয় অঞ্চলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’।
ঠিক এ মুহূর্তে আবহাওয়া বিভাগের দুপুরের সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কিত বিশেষ বুলেটিনে এ ধরনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। তাছাড়া এরইমধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। বৃদ্ধি পেয়েছে ভয়াল ঝড়ের মতো গতি-শক্তি। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২১০ কি.মি.। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ এখন বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দরের এক হাজার কিলোমিটার ব্যবধান পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে।
সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কিত বিশেষ বুলেটিনে এতে ‘আমফান’র সম্ভাব্য দিক পরিবর্তনের শঙ্কার আভাস দেয়া হয়। রোববার পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’র গতিমুখ ছিল উত্তর, উত্তর-পশ্চিমমুখী। কিছুটা পরিবর্তন হয়ে বর্তমানে তা উত্তরমুখী। পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ দিক পরিবর্তন করে উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। তখনই আঘাত হানতে পারে খুলনা-চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী ন
ভারতের আবহাওয়া বিভাগ বলছে, ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ পশ্চিমবঙ্গে আঘাত করবে এটা ৭০ ভাগ নিশ্চিত। এরপরই সুন্দরবন অঞ্চলের উপর দিয়ে খুলনা ও দক্ষিণাঞ্চলের কিছু এলাকা অতিক্রম করতে পারে।
বর্তমান মতিগতি অনুসারে গত বেশ কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে সমুদ্রে ‘আমফান’ কিছুটা গতিপথ বদল করেই উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। গতিপথ ও দিক পরিবর্তন অব্যাহত থাকতে পারে আজ-কালও। আগামীকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত অথবা পরদিন বুধবার ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ দেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে।
সর্বশেষ আজ দুপুরে আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ জানান, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড়টি আজ সকালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৫০ কি.মি. দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১০২৫ কি.মি. দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০১০ কি.মি. দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।
ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান’ আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর, উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। তবে পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে খুলনা ও চট্টগ্রামের মধ্যবর্তী অঞ্চল দিয়ে ১৯ মে শেষ রাত হতে ২০ মে বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূল অতিμম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ১১০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের এলাকায় বঙ্গোপসাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সঙ্কেত সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আমফান’র সক্রিয় প্রভাবে দেশের বেশিরভাগ জেলায় জ্যৈষ্ঠের তাপদাহে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অনেক অঞ্চলে বিরাজ করছে গুমোট আবহাওয়া। সমুদ্র উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে জাহাজের মালামাল লাইটারিং খালাস, ডেলিভারি পরিবহন হ্রাস পেয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের দুর্যোগ বিধিমাফিক চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনাসমূহ ও জাহাজের নিরাপত্তা সুরক্ষা নিয়ে কর্তৃপক্ষ প্রস্তুতি শুরু করেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন