দিনাজপুরের পার্বতীপুরে রেলওয়ের তেলবাহী লরি থামিয়ে রেল ইঞ্জিন থেকে তেল পাচারের সময় ২১০ লিটার ডিজেলসহ চালক (লোকোমাস্টার-এলএম) মোঃ সেলিম (৪৫), সহকারী চালক (সহকারী লোকোমাস্টার-এএলএম) উজ্জল হোসেন (৩০) ও তেল চোরাকারবারী হাসান আলীকে (৩০) আটক করেছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে পার্বতীপুর রেল স্টেশনের তিন কিলোমিটার দক্ষিণে হলদিবাড়ী রেলগেট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এঘটনায় আজ সোমবার সকালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস হোসেন বাদী হয়ে তিন জনকে আসামী করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (চৌকি) পার্বতীপুর কার্যালয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তবে, এরিপার্ট লেখা পর্যন্ত তেলবাহী লরি পরিচালক (গার্ড) আব্দুলাহিল শাফি আটক করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (চৌকি) কার্যালয়ে দিনভর সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়েছে। আজ সোমবার এঘটনায় বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) পাকশী এর দপ্তরের গঠিত চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডিইএন-টু) পাকশী- আঃ রহিম প্রধান করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর তিন সদস্য হলেন, বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (ডিএমই) পাকশী- আশিষ কুমার মন্ডল, বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চীফ কমাডেন্ট রেজওয়ানুল রহমান ও বিভাগীয় ট্রাফিক কর্মকর্তা (ডিটিও) পাকশী নাসির উদ্দীন। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী পার্বতীপুর কার্যালয়ের প্রধান পরিদর্শক (সিআই) ইমদাদুল হক জানান- খুলনা থেকে তেল নিয়ে একটি লরি (কেপি-৭ আপ) পার্বতীপুর আসছিল। লরিটি পার্বতীপুর রেল স্টেশনে প্রবেশের পূর্ব মুহূর্তে হলদিবাড়ী রেলগেট এলাকায় থামিয়ে এলএম মোঃ সেলিম ও এএলএম উজ্জল হোসেন ইঞ্জিন (ইঞ্জিন নং ৬৩১২) থেকে তেল পাচার শুরু করে। তেল পাচারের বিষয়টি জানতে পেরে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী পার্বতীপুর কার্যালয়ের সিআই (সাধারণ শাখা) ইমদাদুল হক, ইন্সপেক্টর (গোয়েন্দা শাখা) নুর-এ-নবী ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস হোসেন তড়িৎ অভিযান চালিয়ে এলএম মোঃ সেলিম, এএলএম উজ্জল হোসেন ও তেল চোরাকারবারী হাসান আলীকে ২১০ লিটার ডিজেল সহ হাতেনাতে ধরে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যালয়ে নিয়ে আসে।এবিষয়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী পার্বতীপুর কার্যালয়ের প্রধান পরিদর্শক (সিআই) ইমদাদুল হক জানান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইলিয়াস হোসেন বাদী হয়ে তিন জনকে আসামী করে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী পার্বতীপুর কার্যালয়ে মামলা দায়ের করেন। এলএম সেলিম পাবনা জেলার ঈশ^রদী উপজেলার নতুন রুপপুর এলাকার এরশাদ আলীর ছেলে। এএলএম উজ্জল হোসেন পার্বতীপুর পৌর এলাকার পাওয়ার হাউজ কলোনীর আফছার উদ্দিনের ছেলে এবং তেল চোরাকারবারী হাসান আলী একই এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। পার্বতীপুর ডিজেল সেডের লোকো ইনচার্জ মোঃ কাফিউল ইসলাম জানান, গতকাল রবিবার তেলবাহী গাড়িটি খুলনা থেকে পার্বতীপুর এসে পৌছায়। লোকোমোটিভের দুই স্টাফ ইঞ্জিন ঈশ্বরদী থেকে চার্জ নিয়ে পার্বতীপুর আসার বিষযটি নিশ্চিত করেন। তবে এঘটনায় তেল চুরির বিষয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক ব্যক্তিরা জানান, অতীতে তেল চুরির ঘটনায় চোররা রেহাই পায়। কারন তেল মজুদের স্থান থেকে চালকরা যেকোন উপায়ে অধিক পরিমান তেল সংগ্রহ করার পর যে কোন স্থানে তেল চোরের হাতে বিক্রি করে দেয়। তদন্তে দেখা যায় তেল মজুদের স্থানে তেলের পরিমান সঠিক তারা বেচে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন