রূপগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় উপবৃত্তির টাকা কম দেয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় অবিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারের অপসারণ দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা। গতকাল দুপুরে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের পূর্বগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে অভিভাবকদের মাঝে এ অসন্তোষ দেখা দেয়।
অভিভাবকরা জানান, উপজেলার জনকল্যাণ আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্বগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাওনা উপবৃত্তির ১২ মাসের টাকা দেয়ার কথা গতকাল সকালে। ১৭৬৯ জন শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তির ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৯৫০ টাকা বরাদ্দ আসে।
ওই হিসেবে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা উপবৃত্তির টাকা নিতে সকালে পূর্বগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ভিড় জমান। এ সময় উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মার্জিয়া আক্তারের নির্দেশক্রমে শিক্ষকরা ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর ও ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত উপবৃত্তির টাকা পরিশোধ করবে বলে সকল অভিভাবকদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নিয়ে নেয়। পরে উপবৃত্তির টাকা দেই দিচ্ছি করে ঘুরাতে থাকে। দুপুরে সহকারী শিক্ষা অফিসার মার্জিয়া আক্তার অবিভাবকদের বলেন, ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত উপবৃত্তির টাকা পরিশোধ করা হবে। এ সময় অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত উঠেন এবং ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর মাসের উপবৃত্তির টাকা পরিশোধের দাবি করেন। এ সময় সহকারী শিক্ষা অফিসার মার্জিনা আক্তার অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্কুল মাঠে বিক্ষোভ শুরু করেন এবং উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসারের অপসারণ দাবি করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিভাবকদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে শান্ত করেন।
অভিভাবক খাদিজা বেগম, এস আলম, নুরজাহান, সুমন, সালমা আক্তারসহ আরো অনেকেই অভিযোগ করে জানান, উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে ছবি তোলা বাবদও শিক্ষকরা অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। দিনের পর দিন অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে এসে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে উপবৃত্তির জন্য ছবিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। নিরীহ এসব অবিভাবকদের ঠকিয়ে সহকারী শিক্ষা অফিসারসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা অনিয়ম করছে বলে অভিযোগ অবিভাবকদের, যা কোনো প্রকার ছাড় দেয়া যায় না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মার্জিনা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কিছু বলতে পারবো না। এ বিষয়ে কথা বলতে হলে শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলেন।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার সফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, বিধিমোতাবেক ও নিয়মানুযায়ী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা পরিশোধ করা হচ্ছে। তবে যেসব শিক্ষার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়নি, বিধিমোতাবেক তাদের উপবৃত্তির টাকা কেটে নেয়া হচ্ছে। এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নেই। হয়তো অভিভাবকরা ভুল বুঝে ক্ষিপ্ত হয়েছেন। আর সহকারী শিক্ষা অফিসার যদি অভিভাবকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে থাকেন তাহলে তিনি অন্যায় করেছেন। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন