করোনার চোখ রাঙানোকে উপেক্ষা করে বেঁচে থাকার সংগ্রামে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের প্রায় ৪ লাখ মানুষ এখন আশ্রয় কেন্দ্রে। চলছে রমজান মাস। গাদাগাদি করে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে জীবন বাঁচানোর লড়াই নারী-পুরুষ আবাল বৃদ্ধ বনিতা সবাই এখন এক কাতারে।
আশ্রয় কেন্দ্রে আসার সময় অনেকেই সাথে নিয়ে এসেছেন তাদের শেষ সম্বল গৃহপালিত পশু-পাখি। আবার অনেকেই আল্লাহর ওপর ভরসা করে তাদেরকে রেখে এসেছে নির্জন গৃহে।
এদিকে গতকাল বুধবার ভোর থেকেই বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ার মধ্য দিয়ে আমফানের রুদ্র রূপ প্রকাশ পায়। বিকেল গড়াতে এর ক্ষিপ্রতা বাড়তে থাকে।
টানাবর্ষণে এ অঞ্চলে দুর্বল ভেড়িবাঁধগুলো আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। নিজেদের ভিটামাটি ও চিংড়ি ঘেরগুলো বাঁচাতে বিভিন্ন এলাকায় নারী-পুরুষ মিলে স্বেচ্ছায় বাঁধ মেরামতের চেষ্টা চালায়।
লাখ লাখ মানুষ গতকাল বুধবার দুপুরের আগেই সাইক্লোন সেন্টারে আশ্রয় নেয়। সেখানেই তাদের ইফতার ও সেহরির ব্যবস্থা করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়া উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের রক্ষায় নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।
আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষজন জানান, একদিকে আমফান আর অন্যদিকে করোনভাইরাস। এ যেন ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’। তাদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের ভয় কাজ করছে। এখানে স্বাস্থ্যবিধি মানা সম্ভব হচ্ছে না।
উপকূলীয় তিন জেলা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায় ১ হাজার ৬৬৭টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে ৩ লাখ ৭১ হাজার মানুষ। খুলনা বিভগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুধুমাত্র খুলনা জেলার ৬২৯টি সাইক্লোন শেল্টারে এ পর্যন্ত ৫৫ হাজার জন আশ্রয় নিয়েছেন। বৃহত্তর খুলনায় প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এনজিও কর্মী ও আনসার ভিডিপি ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় কাজ করছে।
এদিকে আমফানের প্রভাবে উপকূলের নদ-নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানির উচ্চতা ২-৩ ফুট বৃদ্ধি পায়। যার ফলে ঘুর্ণিঝড় আমফানে উপকূলে সব থেকে বেশি ক্ষতি হবে ভেড়িবাঁধগুলো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন