রাজাপুর (ঝালকাঠি) উপজেলা সংবাদদাতা : ঝালকাঠির রাজাপুরের আঙ্গারিয়া গ্রামের মিলবাড়ি এলাকায় স্বামীর সাথে অভিমান করে নিজঘরের ফ্যানের সাথে দুই সন্তানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে শিউলী বেগম (৩০) নিজেও ওই ফ্যানের সাথেই ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বড় মেয়ে চাঁদনী আক্তার (৬) ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেলেও ছোট ছেলে ইউসুফ (৪) মারা গেছে। শিউলী বেগম আঙ্গারিয়া গ্রামের মিলবাড়ি এলাকার দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী। দেলোয়ার ঢাকায় বাস চালান। দেলোয়ারে ভাই আবুল হোসনের স্ত্রী শেফালি বেগম জানান, শনিবার বিকেলে শিউলী বেগম স্বামীর সাথে ফোনে ঝগড়া করে ঘরের দরজা বন্ধ করে আসবাপত্র ভাঙচুর করে। প্রায়ই এ রকম ঘটনা ঘটে আসছিল। ভাঙচুরের শব্দ থেমে যাওয়ার পর শিউলীর বড় মেয়ে আঙ্গারিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী চাঁদনীর বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার শুনতে পান। এ সময় প্রতিবেশীরা এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করলেও খুলতে ব্যর্থ হয়ে টিনশেড বিল্ডিংয়ের চালার টিন খুলে দেখতে পান ঘরের একই ফানের সাথে দুই সন্তানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে শিউলি ওই একই ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়ে নিজেও গলায় ফাঁস দিয়েছে। পরে পুলিশ খবর দিয়ে স্থানীয় লোকজন ঘরে টিন খুলে ঘরে প্রবেশ করে বড় মেয়ে চাঁদনীকে জীবিত উদ্ধার করেছেন। বেঁচে যাওয়া চাঁদনী আক্তার বলে, দুপুরের পর বাবার সাথে মেয়ের ফোনে ঝগড়া হয় এবং ফোনটি ভেঙে ঘরের বাইরে ফেলে দেয়। পরে মা রাগ করে ঘরের সব জিনিস ভাঙচুর করে আমাকে (চাঁদনী) ধরে জোর করে একটি টুলের ওপর দাঁড় করিয়ে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে। তখন আমি ভয়ে নিস্তব্ধ হয়ে থাকি। পরে ছোট ভাই ইউসুফের গলায়ও ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে মা নিজেও ওই ফ্যানেই ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে পা দিয়ে টুল ফেলে দেয়। তখন আমার গলার ফাঁসও আটকে যেতে লাগলে মাকে জড়িয়ে ধরে চিৎকার শুরু করি। রাজাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীর সাথে অভিমান করে নিজঘরের ফ্যানের সাথে দুই সন্তান চাদনী ও ইউসুফকে ফাঁসে ঝুলিয়ে শিউলী বেগম নিজেও ওই ফ্যানের সাথেই ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। আল্লাহর অসীম রহমতে শিশু চাঁদনী আক্তার ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন